Sunday, May 12, 2024
বাড়িউত্তরণ প্রতিবেদনঅগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না

অগ্রযাত্রা কেউ ঠেকাতে পারবে না

উত্তরণ প্রতিবেদন : আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেউ বলতে পারবে না যে রাতে ভোট দিয়েছে, দিনের ভোট রাতে দিয়েছে, ভোট কারচুপি হয়েছে। এসব বলার কোনো সুযোগ নেই। অত্যন্ত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আইন করে সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছি। সেই নির্বাচন কমিশনকে আমরা নির্বাচন পরিচালনা করতে দিয়েছি। কোনো রকম হস্তক্ষেপ আমরা করিনি। সহযোগিতা করেছি।’ গত ১০ জানুয়ারি বিকালে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস এবং দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় উদ্যাপন উপলক্ষ্যে এ জনসভার আয়োজন করা হয়।
পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করেছিলেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধভাবে যারা সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় বসেছিল তারা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে কিছু দল সৃষ্টি করে, আর কিছু এলিট শ্রেণি তৈরি করে, এর ওপর নির্ভর করে ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে অবৈধ ক্ষমতা বৈধ করার চেষ্টা করে। এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সোচ্চার ছিল, যদিও পঁচাত্তরের পরে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী বেইমানি করে। তবে বেশির ভাগ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করানো হয়। তারা মুক্তি পেয়ে দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, ১৯৮১ সালে আমাকে দলের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। আমি ফিরে আসি এমন একটি দেশে, যেখানে আমার বাবা-মায়ের হত্যাকারীদের বিচার করবে না বলে ইনডেমনিটি জারি করা হয়েছিল। তাদের (বঙ্গবন্ধুর খুনি) বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের চাকরি দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, একদিকে খুনি, আরেক দিকে যুদ্ধাপরাধী, তারাই ক্ষমতায়। সেই অবস্থায় আমি দেশে ফিরে আসি। জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার নিশ্চিত করার প্রত্যয় নিয়ে ফিরে আসি।
তখন দারিদ্র্যে জর্জরিত এ দেশের মানুষ, দুর্ভিক্ষও লেগেছিল। জাতির পিতার যে আকাক্সক্ষা ও স্বপ্ন এ দেশের মানুষকে নিয়ে, সেটিও তখন পূরণ হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা, প্রশাসন থেকে শুরু করে সব কিছুই নির্বাচন কমিশনের হাতে ন্যস্ত ছিল। যেন নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়। আমরা কখনও হস্তক্ষেপ করিনি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, প্রশাসনের কর্মকর্তা, সশস্ত্র বাহিনীসহ যারা নির্বাচন কমিশনকে সহযোগিতা করেছেন, তাদের ধন্যবাদ জানাই।’ এবারের নির্বাচন অনেকেই বন্ধ করতে চেয়ে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘অনেকেরই অনেক রকম স্বপ্ন আছে। নির্বাচনে মানুষ যাতে ভোট দিতে না আসে, সেই চেষ্টা হয়েছে। তার পরেও ৪১.৮ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা সোজা কথা নয়।’
সব বাধা উপেক্ষা করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ভোট দেওয়ার জন্য জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালের পর প্রতিটি নির্বাচনে মানুষ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। কারণ জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে এই আওয়ামী লীগ। আজকের বাংলাদেশ বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। দীর্ঘ ৯ মাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কারাগারে বন্দি ছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেখানে তাকে ঠিকমতো খাবারও দেওয়া হতো না। সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নভাবে রাখা হয়েছিল তাকে। এমনকি একটি পত্রিকাও তার জন্য রাখা হয়নি। তার ফাঁসির হুকুম হয়ে গিয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে লন্ডন হয়ে বাংলাদেশে পৌঁছেছিলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাকে অকার্যকর করতেই ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড হয়। এরপর বিকৃত ইতিহাস দিয়ে বিকৃত করা হয়েছে মানুষের মানসিকতা। আমাদের ক্ষমতায় আসা অনেক কঠিন ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আওয়ামী লীগ আবার ক্ষমতায় আসায় কেউ বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ যদি সরকারে না আসত তাহলে কিন্তু এই দেশ আর এগোতে পারত না। আওয়ামী লীগের এমপিদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করেছি এবং আজকে পার্লামেন্টারি পার্টির সভায় আমাকে সর্বসম্মতিক্রমে তাদের নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি সংসদ সদস্যদের প্রতি তার ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য