Friday, March 29, 2024
বাড়িSliderপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিরণ্ময় গৌরবগাথা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হিরণ্ময় গৌরবগাথা

নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়দান ও তাদের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করায় ব্রিটেনভিত্তিক গণমাধ্যম চ্যানেল ফোর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতার জননী’ বলে ভূষিত করেন।

রায়হান কবির: জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু-পরবর্তী সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ কন্যা। তিনি যে বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ঐতিহ্য বহন করছেন, এ-কথা ব্যাখ্যার অপেক্ষা রাখে না। শৈশব-কৈশোর থেকেই তিনি দেখেছেন পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামমুখর জীবন। বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার রাজনীতিতে হাতেখড়ি পরিবার থেকে, বাবার হাত ধরে। জননেত্রী শেখ হাসিনার বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের চিত্র স্বল্পপরিসরে তুলে ধরা সম্ভব নয়। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মজয়ন্তী। তাই উত্তরণ-এর পাঠকদের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কর্মকা-ের সংক্ষিপ্ত বিবরণী তুলে ধরা হলোÑ

* ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি আসন পেয়ে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে। ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন প্রথমবারের মতো গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
* ১৯৯৬ সালের ২ অক্টোবর ধানমন্ডি থানায় বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা দায়ের হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর সংসদে ইনডেমনিটি বাতিল বিল পাস হয়।
* ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর ভারতের সাথে ৩০ বছর মেয়াদি গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি সাক্ষরিত হয়। পানিপ্রবাহ ৪২ হাজার থেকে ৮২ হাজার কিউসেকে উন্নীত হয়।
* ১৯৯৭ সালের ৬ ও ৭ মে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
* ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার ১৪ হাজারেরও বেশি মহিলা জনগণের সরাসরি ভোটে সদস্য ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়।
* ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৯৮ সালের ২৮ জানুয়ারি শান্তি নিকেতনে বিশ্বভারতীর এক আড়ম্বরপূর্ণ বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ সম্মানসূচক ‘দেশিকোত্তম’ উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি খাগড়াছড়ির স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ‘শান্তিবাহিনী’ প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা আনুষ্ঠানিকভাবে অস্ত্র সমর্পণ করেন। সেই সাথে ওই বাহিনীর প্রায় ২ হাজার সশস্ত্র সদস্যও গোপন অবস্থান থেকে বেরিয়ে এসে অস্ত্র সমর্পণ করে ফিরে যান স্বাভাবিক জীবনে।
* ১৯৯৮ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৪২ লাখ ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে ২ কোটি ১০ লাখ মানুষকে প্রায় ৯ মাস বিনামূল্যে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কৃষি ঋণ আদায় এক বছর বন্ধ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ১৯৯৯ সালে ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলনের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (FAO) কর্তৃক ‘সেরেস পদক’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টায় ১৯৯৯ সালের নভেম্বরে ইউনেস্কোর ৩০তম সাধারণ সম্মেলনে ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে বাঙালি জাতির গর্ব ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি প্রদান করে।
* ২০০০ সালে মুফতি হান্নান গং তাকে হত্যার চেষ্টা করে কোটালিপাড়ায়।
* ২০০১ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি আবারও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা নির্বাচিত হন।
* ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচনী কাউন্সিল অধিবেশনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।
* ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে তাকে এবং তার অনুগামীদের হত্যার উদ্দেশ্যে নারকীয় গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবাণীতে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও নারীনেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন। কানের পর্দা ফেটে গিয়ে আহত হন শেখ হাসিনা।
* ২০০৫ সালের জুন মাসে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও শান্তির স্বপক্ষে অবদান রাখার জন্য শেখ হাসিনাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে পিপল্স ফ্রেন্ডসশিপ ইউনিভার্সিটি অব রাশিয়া।
* ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি তার নেতৃত্বে বিরোধী দলের আন্দোলনের মুখে বিএনপি-জামাত তাদের নীলনকশার নির্বাচন বাতিল করতে বাধ্য হয়। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বঘোষিত প্রধানের পদ থেকে ইয়াজউদ্দিনের পদত্যাগ এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। ড. ফখরুদ্দিনের নেতৃত্বে নতুন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়িত্বভার গ্রহণ করে। তারা বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে অপসারণের উদ্দেশ্যে মাইনাস টু ফর্মুলা অবলম্বন করে। ২০০৭ সালের ৭ মার্চ রাতে যৌথবাহিনীর একটি দল কোনো ধরনের সার্চ ওয়ারেন্ট ছাড়াই দু-দফায় জননেত্রী শেখ হাসিনার সুধা সদনস্থ বাসভবনে প্রবেশ করে। ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং ২০০৮ সালের ১১ জুন প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি কারান্তরীণ থাকেন। চিকিৎসা শেষে ৪ ডিসেম্বর স্বদেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।
* ২০০৮ সালের ৭ জুন থেকে ৩০ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিঃশর্ত মুক্তিসহ ৬-দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে দেশব্যাপী গণস্বাক্ষর সংগ্রহ অভিযান পরিচালনা ও ১৫ থেকে ৩০ জুন জেলায় জেলায় বর্ধিত সভা অনুষ্ঠানের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
* ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদের নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৬৪টি আসন লাভ করে।
* ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাজোট সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার কর্মযজ্ঞ শুরু :
* বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দ-প্রাপ্ত আসামির মৃত্যুদ- কার্যকর। জাতি কলঙ্কমুক্ত।
* বিডিআর বিদ্রোহের শান্তিপূর্ণ সমাধান। সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ব্যর্থ।
* মহাজোট সরকারের প্রথম ও দ্বিতীয় বাজেট বাস্তবায়ন। বিশ্বমন্দা মোকাবিলা। দ্রব্যমূল্য জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার চেষ্টা।
* কৃষিতে বিপুল ভর্তুকি, ধানের বাম্পার ফলন। সর্বকালের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। সর্বোচ্চ রপ্তানি আয় বৃদ্ধি, প্রবৃদ্ধির হার ৬.৭ শতাংশে উন্নীত।
* নতুন শিক্ষানীতি প্রণয়ন। প্রতি বছর বিনামূল্যে বই প্রদান। প্রাথমিক ও নিম্নমাধ্যমিক স্তরে সফল পাবলিক পরীক্ষার পদ্ধতি প্রচলন।
*বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট সমাধানে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ। বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি; লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে আনা। শিল্প-কারখানায় নতুন করে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ প্রদান শুরু।
* কর্মসংস্থান ও হতদরিদ্রদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি সম্প্রসারণ।
* খোলাবাজারে ৪২ টাকা কেজির চাল জনপ্রতি ৫ কেজি ২৪ টাকা দরে বিতরণ।
*যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু।
* সফলভাবে ক্রিকেট বিশ্বকাপ অনুষ্ঠান। ক্রীড়াক্ষেত্রে সাফল্যের সূচনা। পরপর দুই বছরে বাংলাদেশের দুই তরুণের এভারেস্ট জয়।
* উন্নয়নশীল বিশ্বে বাংলাদেশেই প্রথম সোনালি আঁশ পাটের জিন প্রযুক্তির আবিষ্কার। সম্ভাবনার স্বর্ণদুয়ার উন্মোচিত।
* বন্ধ পাটকল চালু। শিল্পায়নের নতুন উদ্যোগ গ্রহণ।
* গার্মেন্ট শ্রমিকদের পে-স্কেল পুনর্নির্ধারণ। সরকারি কমকর্তা-কর্মচারীদের নতুন বর্ধিত বেতন স্কেল কার্যকর করা। শিল্প পুলিশ বাহিনী গঠন। শিল্পে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা।
* পদ্মা সেতু নির্মাণের কাজ শুরু। ঢাকা মহানগরীর যানজট নিরসনে একাধিক উড়াল সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ও ক্রাইভার নির্মাণ দ্রুতগতিতে অগ্রসরমান।
* বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের ভূমিকা পালন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি।
* ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই আওয়ামী লীগের সম্মেলনে সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।
* ২০১০ সালে মার্কিন আর্থিক প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান অ্যান্ড স্যাশ বাংলাদেশকে ‘সম্মুখের সারির বাজার’ এবং ‘একাদশ উদীয়মান’ দেশ হিসেবে চিহ্নিত করে। শিশুমৃত্যুর হ্রাস-সংক্রান্ত এমডিজি-৪ অর্জনের স্বীকৃতিস্বরূপ জাতিসংঘ কর্তৃক এমডিজি অ্যাওয়ার্ড-২০১০ পুরস্কার লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন ((ITU), সাউথ-সাউথ নিউজ ও জাতিসংঘের আফ্রিকা-সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কমিশন কর্তৃক যৌথভাবে প্রদত্ত South-South Awards 2011 : Digital Development for Digital Health শীর্ষক পদক লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০১২ সালের ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা-সংক্রান্ত মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ইটলসের রায়ে বঙ্গোপসাগরে ২০০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
* ২০১২ সালের ১৯ জুন ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থ ও এর ইংরেজি সংস্করণ ‘The Unfinished Memoires’-এর মোড়ক উন্মোচন করেন শেখ হাসিনা। ৯ জুলাই গ্রন্থটির প্রকাশনা উৎসবে তিনি বলেন, ‘জাতির সম্পদ জাতির হাতে তুলে দিলাম।’
* ২০১২ সালে বাংলাদেশে সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য রক্ষা এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এগিয়ে নিতে বিশেষ অবদানের জন্য UNESCO কর্তৃক ‘কালচারাল ডাইভারসিটি পদক’ লাভ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ১৪ অক্টোবর টেলিটকের থ্রি-জি প্রযুক্তি উদ্বোধন করেন তিনি। ২০১২ সালের ১৭ ডিসেম্বর সাধারণ অধিবেশনের সভায় ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের সমর্থনে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ‘জনগণের ক্ষমতায়ন’ এবং ‘শান্তির সংস্কৃতি’ প্রস্তাব পাস হয়।
* ২০১২ সালের ২৯ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন শেখ হাসিনা।
* ২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশি পাটের জীবনরহস্য উন্মোচনের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক সহায়তায় বিজ্ঞানী মাকছুদুল আলমের নেতৃত্বে একদল গবেষকের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে অর্জিত হয় যুগান্তকারী এ সফলতা। ২০১৩ সালের ২ অক্টোবর পাবনার ঈশ্বরদীতে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে সরকার গঠন করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা।
* ২০১৪ সালের জুলাইয়ে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা সংক্রান্ত মামলায় আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল ইটলসের রায়ে বঙ্গোপসাগরে বিরোধীয় ১৯ হাজার ৪৬৭ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়।
* ২০১৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নারী ও কন্যাশিশুদের সাক্ষরতা ও শিক্ষা প্রসারে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘শান্তির বৃক্ষ’ (ট্রি অব পিস) পুরস্কার তুলে দেন ইউনেস্কোর মহাপরিচালক। ২০১৪ সালের ২১ নভেম্বর জাতিসংঘের সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন ‘ভিশনারি’ পুরস্কার পান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০১৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তথ্যপ্রযুক্তিতে অগ্রগতির স্বীকৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ সংস্থার (আইটিইউ) ‘আইসিটি টেকসই উন্নয়ন পুরস্কার’ গ্রহণ করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার ‘চ্যাম্পিয়ন অব দি আর্থ’ গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০১৬ সালে গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সফল অভিযান, শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ, কল্যাণপুরসহ বিভিন্ন জঙ্গি আস্তানা থেকে সশস্ত্র জঙ্গিদের আটক। উগ্র সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সৃষ্ট জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত স্থাপন। ২০১৬ সালের ২২ সেপ্টেম্বর লিঙ্গ সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’ পুরস্কার প্রদান করে জাতিসংঘ।
* ২০১৬ সালের ২২ ও ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে জননেত্রী শেখ হাসিনা সভাপতি নির্বাচিত হন।
* ২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাবি উত্থাপিত হওয়ায় ২৫ মার্চকে ‘গণহত্যা দিবস’ ঘোষণা করা হয় এবং ২০১৭ সালের ২৫ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘গণহত্যা দিবস’ পালিত হয়। ২০১৭ সালের ১২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে বানৌজা ঈশা খাঁ ঘাঁটিতে ‘নবযাত্রা’ ও ‘জয়যাত্রা’ নামে দুটি সাবমেরিন কমিন করেন। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৪১টি দেশের পর বাংলাদেশও সাবমেরিন এলিট জাতিভুক্ত হয়।
* ২০১৭ সালের ১০ সেপ্টেম্বর স্বল্প খরচে উন্নতমানের নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেটে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটসেবা নিশ্চিত করতে দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশনের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০১৭ সালের ১২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা। নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয়দান ও তাদের অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করায় ব্রিটেনভিত্তিক গণমাধ্যম চ্যানেল ফোর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ বা ‘মানবতার জননী’ বলে ভূষিত করেন।
* ২০১৭ সালের ৩১ অক্টোবর ‘জাতিসংঘ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো)’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর ‘মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল হেরিটেজ রেজিস্টার’ বা বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল হিসেবে ঘোষণা করে।
* ২০১৮ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি চতুর্থ প্রজন্মের মোবাইল প্রযুক্তিসেবা ফোর-জি সেবা উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০১৮ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের স্বীকৃতি অর্জন করে বাংলাদেশ।
* ২০১৮ সালের ১১ মে শুক্রবার (বাংলাদেশ সময়) দিবাগত রাত ২টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার মহাকাশ কেন্দ্র ‘স্পেস-এক্স’ থেকে নিজস্ব উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ।
* ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি দেশের ইতিহাসে নজির ও রেকর্ড সৃষ্টি করে চতুর্থবারের মতো এবং টানা তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০১৯ সালের গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দপ্তরে শিশুদের টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যাপক সাফল্য অর্জনের স্বীকৃতি স্বরূপ সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন অ্যান্ড ইমউনাইজেশন (জেএভিআই) কর্তৃক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার প্রদান করা হয়।
* ২০১৯ সালের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা টানা নবমবার সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদের এমপি পুনরায় সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
* ২০২০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলা উদ্বোধন অনুষ্ঠানের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা ভ্রমণবিষয়ক গ্রন্থ ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০২০ সালের ২০ মার্চ ছোট বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রাণপুরুষ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ‘মুজিববর্ষ’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন পৃথিবীর দেশে দেশে বাঙালি জাতির মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী পালিত হয়।
* ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ‘মুজিববর্ষ’র আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে জাতির উদ্দেশে উদ্দীপনাময় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা এবং অনুভূতি প্রকাশ করেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ রেহানা।
* ২০২০ সালের ২ এপ্রিল বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের বিস্তার মোকাবিলায় ৩১-দফা নির্দেশনা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
* ২০২০ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিক-নির্দেশনা দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ‘ডেল্টা কাউন্সিল’ গঠিত হয়।
* ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি দেশের ৪৯২টি উপজেলার ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারের হাতে বিনামূল্যে জমি ও ঘরের চাবি তুলে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন ‘মুজিববর্ষে একজন মানুষও গৃহহীন থাকবে না।’
* ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘ কর্তৃক স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি অর্জন করে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রসরমান বাংলাদেশ।
* ২০২১ সালের ১৩ নভেম্বর বিশ্বের ৮০টি দেশের সদস্যভুক্ত সংগঠন ‘ওয়ার্ল্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিসেস অ্যালায়েন্স’-এর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘উইটসা এমিনেন্ট পার্সন্স অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পুরস্কারে ভূষিত করে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ কর্মসূচি প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ নেতৃত্বদান এবং তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষের জীবনমান উন্নয়নে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ পুরস্কার অর্জন করেন।
* গত ২৭ জানুয়ারি ২০২২ বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা এমপির নেতৃত্বে স্বাধীনতার ৫০ বছর পর জাতীয় সংসদে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ পাস হয়।
* গত ২৬ ফেব্রুয়ারি করোনা প্রতিরোধে দেশজুড়ে একদিনে ১ কোটি ২০ লাখ ডোজ টিকা প্রদানের অনন্য রেকর্ড স্থাপন করে বাংলাদেশ।
* গত ২১ মার্চ ২০২২ পটুয়াখালীর পায়রায় দেশের সর্ববৃহৎ ও সর্বাধুনিক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি। ফলে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ এখন একমাত্র দেশ যে তার বিদ্যুৎ চাহিদার শতভাগ উৎপাদনের সক্ষমতা অর্জন করেছে।
* সফল রাষ্ট্রনায়ক জননেত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা এমপির সুদক্ষ নেতৃত্বে কার্যকর পদপেক্ষ গ্রহণের ফলে কোভিড-১৯ আরোগ্য সূচকে বাংলাদেশ বিশ্বের পঞ্চম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম স্থান অর্জন করে। গত ৫ মে ২০২২ করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের ব্যবস্থাপনা, টিকা দেওয়ার হার এবং সামাজিক তৎপরতার ওপর ভিত্তি করে এই সূচক প্রকাশিত হয়।

লেখক : গবেষণা সহকারী, উত্তরণ

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য