Friday, March 29, 2024
বাড়িউত্তরণ ডেস্ককৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

কৃচ্ছ্রসাধন করে কিছু সঞ্চয় করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, তথা অপচয় কমাতে হবে। বিলাসদ্রব্য পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় মনোযোগ দিতে হবে।

উত্তরণ প্রতিবেদন: বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতির প্রেক্ষাপটে দেশবাসীকে কৃচ্ছ্রসাধনের পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, প্রত্যেককে তার নিজ নিজ জায়গায় থেকে যতটুকু সম্ভব কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে। প্রত্যেককে নিজস্ব সঞ্চয় বাড়াতে হবে। মিতব্যয়ী হতে হবে।
কৃচ্ছ্রসাধন করে কিছু সঞ্চয় করে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয়, তথা অপচয় কমাতে হবে। বিলাসদ্রব্য পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিস কেনায় মনোযোগ দিতে হবে।
গত ২৯ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ-কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে তিনি আরও বলেন, ব্যক্তিগত পর্যায়ে সঞ্চয় বাড়ানোর মাধ্যমে জাতীয় সঞ্চয় বৃদ্ধিতে অবদান রাখতে হবে। বিদ্যুৎ ও পানি ঢালাওভাবে ব্যবহার করবেন না। অপচয় করবেন না।
বৈশ্বিক অতিমারি করোনার আরেকটা ঢেউ এসেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, করোনাভাইরাস আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে পেরেছি। সবাইকে টিকা দিতে পেরেছি। ডব্লিউএইচও-র নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা শতভাগ টিকা দিয়েছি। জীবন-জীবিকার সুরক্ষায় যতটুকু দেওয়ার তার সবটুকুই আমরা দিতে সক্ষম হয়েছি। করোনা নতুনভাবে আবার দেখা দিয়েছে। সবাইকে বলব, স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলতে হবে। এ সময় তিনি সবাইকে করোনার বুস্টার ডোজ গ্রহণেরও আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ও অপচয় বন্ধ করতে হবে। আমদানিকৃত বিলাসবহুল দ্রব্য ক্রয় পরিহার করে শুধু প্রয়োজনীয় জিনিসের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। কথায় কথায় বিদেশে চিকিৎসা নিলে হবে না, দেশেও ভালো চিকিৎসা হয়। আজ বিশ্বব্যাপী যে যুদ্ধ এবং করোনা মহামারি, এটা মোকাবিলা করেই আমাদের আগাতে হবে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ আমাদের জন্য মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা বলেও মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, অতিমারি আমাদের অর্থনীতিতে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। তবে আমরা এই ক্ষতি সামলে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। সরকার কার্যকর ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যে কোনো ধরনের বাধা আসুক না কেন, তা মোকাবিলা করতে পারব। সেই বিশ্বাস আমাদের রয়েছে। করোনা অতিমারির সময়কালে সরকার যে প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছে, তা চলমান থাকবে বলে জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার সংকট কাটিয়ে এ পর্যন্ত ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ চালু করেছি, যার মোট আর্থিক মূল্য ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬৯ কোটি টাকা। এই প্রণোদনা কার্যক্রম আমরা ৭১ দশমিক ৫৫ শতাংশ বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। এই প্রণোদনা চলমান থাকবে। আরেকটি সুখবর হলো, রপ্তানি খাত যাতে বাধাগ্রস্ত না হয়, এর জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ওপরে আমরা রপ্তানি করতে পেরেছি। অতিমারি মোকাবিলা করে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্লাবে বাংলাদেশ যোগদান করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। তাছাড়া প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয় রাখার জন্য ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্যমান পুনর্নির্ধারণ করা হচ্ছে। এটা চলমান প্রক্রিয়া। বিলাসবহুলসামগ্রী আমদানি যাতে কম হয়, সে-জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধির চাপ জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে আগামী অর্থবছরে জ্বালানি তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, সার ও বিদ্যুৎ খাতে সরকারের যে ঘাটতি হবে, তা আমরা মূল্য বাড়িয়ে ভোক্তা পর্যায়ে শতভাগ চাপিয়ে দেব না, যার ফলে আগামী অর্থবছরে ভর্তুকি ব্যয় বাড়বে। এ কারণে কার্যকর ভর্তুকি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভর্তুকি ব্যয় সহনশীল মাত্রায় রাখা এবং আমদানির ওপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে আমরা যথাযথ পদক্ষেপ নেব।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা যখন কমে গেছে, তখন আমাদের আমদানি বেড়েছে। এই আমদানি নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেছেন। আমরা বেশির ভাগেই ক্যাপিটাল মেশিনারিজ আমদানি করেছি। এগুলো স্থাপন ও চালু হলে দেশ লাভবান হবে। এটা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই। এটা করতে গিয়ে হয়তো আমাদের ডলারে কিছুটা টান পড়েছে; কিন্তু সেটা এখনও আশঙ্কাজনক কোনো বিষয় নয়। মুদ্রাবিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার জন্য আমরা সব পদক্ষেপ নিয়েছি।
সবার জন্য পেনশন বিমা চালুর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা এ প্রক্রিয়ায় অনেক দূর এগিয়েছি। অর্থমন্ত্রী আগামী অর্থবছরে সর্বজনীন পেনশন চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। মন্ত্রিসভার সর্বশেষ বৈঠকে এ আইনের অনুমোদন দিয়েছি। খুব শিগগিরই সংসদে আইনটি উঠবে। আমরা তা কার্যকর করতে পারব। তাতে যারা পেনশন পাবেন, তাদের জীবনটা সুরক্ষিত হবে। বিস্তারিত আইনে আছে।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য