Friday, April 19, 2024
বাড়িSliderআওয়ামী লীগ রাজপথেই থাকবে

আওয়ামী লীগ রাজপথেই থাকবে

বিএনপি-জামাত বোমা হামলা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করতে চায়। তাই শপথ নিতে হবে- বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না। যেখানেই বিএনপি-জামাত সন্ত্রাস-নাশকতা করবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।

উত্তরণ প্রতিবেদন: ষড়যন্ত্র-চক্রান্তের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল ও সন্ত্রাস-নাশকতার অপচেষ্টা প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ। ক্ষমতাসীন দলটির শীর্ষ নেতারা বলেছেন, বিএনপি-জামাত বোমা হামলা ও সন্ত্রাসের রাজনীতি কায়েম করতে চায়। তাই শপথ নিতে হবে- বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ঠাঁই হবে না। যেখানেই বিএনপি-জামাত সন্ত্রাস-নাশকতা করবে, সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
সিরিজ বোমা হামলা দিবস উপলক্ষে গত ১৭ আগস্ট দেশজুড়ে বিক্ষোভের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে বিশাল সমাবেশে নেতারা এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত এই বিক্ষোভ সমাবেশের পরে রাজধানীতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিলও হয়েছে।
সমাবেশের পূর্বনির্ধারিত সময় বিকাল ৪টা থাকলেও দুপুরের আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন থানা, ওয়ার্ড ও এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মিছিলসহকারে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত হতে শুরু করে শাহবাগ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব, মৎস্য ভবন হয়ে কাকরাইল এলাকা পর্যন্ত। বিকালের আগেই নেতাকর্মীদের ভিড়ে পুরো এলাকা জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বিএনপি জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসের ঠিকানা, পৃষ্ঠপোষক ও কারখানা। এদের রুখতে হবে, মোকাবিলা করতে হবে। আমাদের শপথ নিতে হবেÑ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ঠিকানা বাংলাদেশে হবে না। আর আগামী নির্বাচনে মানুষ আবারও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে প্রমাণ করবে এদেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। বিএনপি গত নির্বাচনে ধরা খেয়েছে, এবারও ধরা খাবে।
তিনি আরও বলেন, বন্দুকের নলে আওয়ামী লীগের জন্ম হয়নি। আওয়ামী লীগের জন্ম এদেশের মাটিতে। কাজেই আওয়ামী লীগকে ভয় দেখিয়ে লাভ নেই। আন্দোলনকে আওয়ামী লীগ ভয় পায় না। আন্দোলনেই আওয়ামী লীগের জন্ম। বিএনপিকে ‘বাংলাদেশ নালিশ পার্টি’ আখ্যা দিয়ে তিনি আরও বলেন, এই নালিশ পার্টির কাজই হচ্ছে, চোখের পানি ও নাকের পানি এক করে বিদেশিদের কাছে নালিশ করা। কিন্তু তাদের ক্ষমতায় যাওয়ার রঙিন খোয়াব কোনোদিনই পূর্ণ হবে না। নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা প্রস্তুত তো? খেলা হবে। রাজপথে, আন্দোলনে ও নির্বাচনে খেলা হবে। সেই খেলায় আমরাই জয়লাভ করব। এ জন্য প্রত্যেক নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ কোনোদিন শ্রীলংকা হবে না। পাকিস্তান হবে না। বাংলাদেশ কখনও দেউলিয়া হবে না। দলের সভাপতিম-লীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন, বিএনপি-জামাত ভেবেছিল- সিরিজ বোমা হামলা চালিয়ে দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরিয়ে নেওয়া যাবে। কিন্তু সেটা হয়নি। সবাই খালেদা-তারেকের পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঘৃণা প্রকাশ করছে। তিনি বলেন, এই দেশ সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের দেশ নয়। এটা বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
সভাপতিম-লীর আরেক সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি বলেন, বিএনপি জঙ্গিবাদ কায়েম করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের হত্যা করেছিল। আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করার জন্য ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল। কিন্তু তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। তিনি বলেন, আরেকবার প্রতিরোধ গড়ে তুলে বিএনপিকে ঘরে তোলা হবে।
সভাপতিম-লীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বাংলাভাইয়ের নেতা দণ্ডিত তারেক রহমান দেশকে অস্থিতিশীল করার স্বপ্ন দেখেন। দেশের শান্তি বিঘ্নিত করতে চান। কিন্তু সেই চক্রান্ত প্রতিরোধ করা হবে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরদের কিছু করার ক্ষমতা নেই। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। আর দেশে গণতান্ত্রিক অধিকার ও বাকস্বাধীনতা আছে বলেই বিএনপি নেতারা যা খুশি বলেন। কিন্তু শিষ্টাচারবহির্ভূত কিছু করলে দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে। আওয়ামী লীগ রাজপথের সৈনিক, রাজপথেই থাকবে।
সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী বলে তারা জানে না আওয়ামী লীগের জন্ম এই মাটিতেই হয়েছে। আওয়ামী লীগ তাদের পরাজিত করে ছাড়বে। তিনি বলেন, বিএনপি বলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে তারা নির্বাচনে আসবে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ কখনও অসাংবিধানিক পন্থা আনতে দিতে পারে না।
যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এমপি বলেন, বিএনপি-জামাত বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। কিন্তু জনগণ তা হতে দেবে না। জনগণ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত প্রতিরোধ করবে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামাত দেশকে অন্ধকারে নিয়ে গিয়েছিল। সেই বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে। আরেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি বলেন, বিএনপি-জামাত নামের আগুনসন্ত্রাসীরা আবারও মাঠে নেমেছে। এদের প্রতিরোধ করতে আজ থেকে আওয়ামী লীগও মাঠে নামল। তিনি বলেন, পেট্রোল বোমা হামলা ও সন্ত্রাসী কর্মকা- আর বাংলাদেশের মাটিতে হবে না। কাউকে অশান্ত পরিস্থিতি তৈরির সুযোগ দেওয়া হবে না।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, এসএম কামাল হোসেন, মির্জা আজম এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির ও মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচি।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য