‘পুলা’ বাংলাদেশে ফসলের বীজ ও শস্য বীমার পাইলটিং করেছে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস হতে। সরকারের যথাযথ অনুমোদন-দিকনির্দেশনা মেনেই তারা পরীক্ষামূলকভাবে ‘বাংলাদেশ মাইক্রোইন্সুরেন্স মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ চালু করেছে।
ড. রাজিয়া সুলতানা: জীবন বীমা সম্পর্কে কম-বেশি অনেক মানুষই জানেন; বুঝেনও। তবে বাংলাদেশে যেকোনো বীমা নিয়েই ইতিবাচক ধারণার চেয়ে নেতিবাচক মনোভাবই বেশি। কিন্তু কৃষি খাতে ‘ফসলের বীজ ও শস্য বীমার’ ধারণা পুরোপুরি নতুন। যা তৃণমূলের কৃষকদের কাছে প্রায় অজানা বিষয়। কৃষি ‘বীজ ও শস্য বীমা’ ঠিকঠাক কার্যকর করা সম্ভব হলে পাল্টে যাবে দেশের চাষিদের সকল দুঃখ-দুর্দশা। আর এই বীমা নিয়ে এসেছে ‘পুলা’ (PULA) নামের একটি কৃষি বীমা প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশে এর আগে থেকেই কৃষি বীমার প্রচলন রয়েছে। কিন্তু তাদের প্রক্রিয়া একটু অভিনব।
বিশ্বের অন্যান্য দেশে সরাসরি প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের সঙ্গে এই বীমা প্রণীত হলেও ‘পুলা’ বাংলাদেশে ভিন্ন পন্থায় অগ্রসর হচ্ছে। সরকারের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী তারা সরাসরি তৃণমূলে যাচ্ছে না। তারা কয়েকটি সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে এ-জন্য বেছে নিয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠান; যাদের নিজস্ব খামার বা কন্ট্রাক ফার্মার রয়েছে- তারাই মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশে এই বীমার পাইলটিং করেছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ব্র্যাক (BRAC)। এছাড়া- বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়, বিএডিসি (BADC) এবং বার্ক (BRAC) ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের সাথে ‘পুলা’ নিয়মিত যোগাযোগ এবং নীতি-নির্ধারণী সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। সঙ্গেও তাদের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
‘পুলা’ বাংলাদেশে ফসলের বীজ ও শস্য বীমার পাইলটিং করেছে ২০২২ সালের অক্টোবর মাস হতে। সরকারের যথাযথ অনুমোদন-দিকনির্দেশনা মেনেই তারা পরীক্ষামূলকভাবে ‘বাংলাদেশ মাইক্রোইন্সুরেন্স মার্কেট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট’ চালু করেছে। সুইজারল্যান্ড-ভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি কৃষি বীমা ও কৃষিপ্রযুক্তি সহায়ক প্রতিষ্ঠান। ২০১৫ সালে সুইজারল্যান্ডের গ্লোরিয়াসে- ‘বিশ্ব্যাবপী প্রান্তিক কৃষকদের সুরক্ষায় কৃষি বীমা হোক রক্ষা কবচ’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে এ প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে। সাধারণভাবে তারা বীমাকৃত কৃষকদের বীজ ও ফসলের যেকোনো ক্ষতি হলে সামগ্রিক বিবেচনায় আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করে। শুরুতে কৃষিপ্রধান- কেনিয়া, নাইজেরিয়া, জাম্বিয়া, মালাউই এবং জিম্বাবুয়েতে তারা কৃষকদের জন্য সহায়ক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে। বর্তমানে ২২টি দেশে তারা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। তাদের বীমাকৃত কৃষকের সংখ্যা ৬.৬ মিলিয়ন। মোট বীমাকৃত অর্থের পরিমাণ ১.১ বিলিয়ন ডলার। বিভিন্ন দুর্যোগ-মহামারি-প্রতিকূলতায় কৃষকের ক্ষয়ক্ষতির বিপরীতে দাবিকৃত ২০.৩ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। তারা শুধু বীমা করেই ক্ষান্ত থাকে না- কৃষকের জমি সরাসরি নিবিড় তদারকি, প্রয়োজনীয় পরামর্শ এবং পণ্য বিপণন নিশ্চিত করতে সহায়তা করে। সেই সঙ্গে পরিকল্পিতভাবে বীমা আওতাভুক্ত জমির বপন-রোপণ-উৎপাদনের সামগ্রিকতাকে ডিজিটালি উপস্থাপন এবং পর্যবেক্ষণ করে। বিশেষ করে তৃণমূলের উদ্ভাবনী কৃষককে একজন স্মার্ট কৃষক হতে সর্বোচ্চ সহায়তা করে।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে কৃষির ভূমিকা অনস্বীকার্য। এক কথায় দেশের সার্বিক উন্নয়ন কৃষির ওপর নির্ভরশীল। আর সবদেশেই কৃষি প্রকৃতিনির্ভর। বাংলাদেশের ভূ-প্রকৃতি এবং আবহাওয়া চাষাবাদের জন্য খুবই উপযোগী। কিন্তু বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর ব্যাপক পরিবর্তন হচ্ছে। যার প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ছে। ফলে প্রায় প্রতি বছরেই নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে অঞ্চলভেদে কৃষকরা নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকার নানাভাবে ওইসব সংকট মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে। টেকসই কৃষি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত যেমন- কখনো অতি খরায়, অনাকাক্সিক্ষত ভারী বর্ষণে, লবণাক্ততা, উচ্চ তাপমাত্রা, আকস্মিক বন্যা, জলমগ্নতা এবং বন্যার কারণে। তাছাড়া প্রাকৃতিক বিপর্যয় ছাড়াও কৃষকের ফসল প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হচ্ছে নিত্যনতুন পোকামাকড় এবং রোগবালাইয়ের দ্বারা। অর্থাৎ কৃষক জৈবিক ও অজৈবিক উপাদান দ্বারা প্রতিনিয়তই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অবস্থা চলতে থাকায় অনেক কৃষকই তার কৃষি কাজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে; নেবে। তাদের অনেকে বিকল্প কর্মসংস্থানের খোঁজে দু-মুঠো অন্ন জোগাড় করতে হামেশাই শহরমুখী হচ্ছে, যা আমাদের দেশের জন্য এক অশনি সংকেত। তাই আমাদের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষি ও কৃষককে সুরক্ষা নিশ্চিত করা এখন সময়ের প্রধান দাবি। এক্ষেত্রে ‘ফসলে বীজ ও শস্য বীমা’ অন্যতম ভূমিকা রাখতে পারে।
ভাটির বাংলাদেশের অনেক জমিই বছরের দীর্ঘসময় পানির নিচে থাকে। আকস্মিক বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোনের মতো বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ তো আছেই। প্রতিকূল আবহাওয়া, কীটপতঙ্গ ও রোগবালাইসহ বিভিন্ন ঝুঁকি হতে আর্থিকভাবে কৃষকদের সুরক্ষা করতে ‘ফসলে শস্য ও বীজ বীমা’ হতে পারে অনিবার্য বিকল্প। এই বীমা কৃষিকে সামগ্রিক ঝুঁকিতে নিস্তার দেওয়ার পাশাপাশি আর্থিক সহায়তা নিশ্চিত করবে। এরিয়া ইল্ড ইনডেক্স ইন্সুরেন্স (AYII) নির্ভর- এই বীমা কৃষককে জলবায়ুজনিত প্রতিকূলতাসহ (ঝড়, তুষারপাত, অত্যধিক বৃষ্টিপাত, তাপপ্রবাহ, শিলাবৃষ্টি, বন্যা ও খরা) উদ্ভিদ রোগ এবং কীটপতঙ্গের ঝুঁকি হতে সুরক্ষা করবে। ব্যবহারিক ক্ষতি নিরূপণ (Practical Loss Assessments) মূল্যায়নপূর্বক পদ্ধতির মাধ্যমে ফসলের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। ফলে কৃষক কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
বীমা প্রতিষ্ঠানটি প্রথমে বাংলাদেশের এগ্রো ইকোলজিক্যাল জোনস (AEZ)-এর প্রায় ৪২ বছরের ফলন, আবহাওয়া নিয়ামক- বৃষ্টিপাত, তাপমাত্রা, পরিবেশ ও বাতাস ইত্যাদির ডাটা সংগ্রহ করেছে। স্যাটেলাইট ডাটা এবং নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত ফলনের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তা চূড়ান্ত করেছে। বীমা প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের এগ্রো ইকোলজিক্যাল জোনস বিবেচনা করে ন্যূনতম উৎপাদন সীমা নির্ধারণ করে/বেঞ্চমার্ক ইল্ড লেভেল তৈরি করেছে। আবার নির্দিষ্ট ঋতুতে ফসলের ফলনের পরিমাণ নির্ধারণ করে- ক্রপ কাটিং এক্সপেরিমেন্টস (CCEs) পদ্ধতির মাধ্যমে। তাদের কর্মীরা প্রতি জোনের নির্দিষ্ট জমি বা খামারে সরেজমিনে দেখে আসেন, সরাসরি তদারকি করেন এবং উৎপাদন মূল্যায়ন করেন। বীমাকৃত কৃষকের খামারে আবাদ মৌসুমের শুরুতে ৮ মিটারx ৫ মিটার আকারের দুটি বাক্স স্থাপন করেন। এরপর ফসল কাটার সময় তারা খামারে উপস্থিত থাকেন। এমনকি ফসল কাটতে সাহায্য করেন। বাক্স থেকে ফলন আলাদা করেন। উৎপাদিত পণ্যের ওজন পরিমাপ করেন। ফসল শুকানো তদারকি করে ফলনের চূড়ান্ত ওজন নির্ধারণ করতেও সহায়তা করেন। পরিশেষে নির্ধারিত উৎপাদন সীমার সাথে তুলনা করেন। যদি ফলন বেঞ্চমার্কের নিচে হয়; তাহলে নির্দিষ্ট হারে বীমার আর্থিক সহায়তা পরিশোধ করে, যা সাধারণভাবে কৃষকের ক্ষতির সমানুপাতিক। অর্থাৎ বীমাকৃত কৃষকরা ব্যক্তিগত ক্ষতির বিপরীতে আর্থিক সহায়তা পান। এক্ষেত্রে দাবি নিষ্পত্তি প্রক্রিয়া স্বল্পতম সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। বীমাকৃত জমির ফসল নির্দিষ্ট ক্রেতার কাছে বিক্রি করতেও তারা যথাযথ সাহায্য-সহযোগিতা করে। ফলে বীজ ও শস্য বীমা একদিকে; প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষতিকে পুষিয়ে দেয়; অন্যদিকে কৃষিপণ্যের দরপতন থেকেও কৃষকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে। বিশে^র ২২ দেশে এই পরিষেবা চালু রয়েছে। বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদন স্থিতিশীল করতে বীমা কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
বাংলাদেশে ‘পুলা’ এ পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ফসলের দুটি মৌসুম সম্পূর্ণ করেছে। যার মধ্যে একটি ২০২২ সালের রবি মৌসুমের আলু। যেখানে ১৩টি জেলার ১৫ হাজার কৃষক বীমার আওতায় ছিল। দ্বিতীয়টি ছিল ২০২৩ সালের বোরো মৌসুমের ধান। এই মৌসুমে ১৪টি জেলার ১৫ হাজার কৃষককে বেছে নেওয়া হয়। এর মধ্যে কক্সবাজারে রোগবালাই এবং পোকামাকড়ের আক্রমণে ফলন কিছুটা কম হয়েছিল। অন্যদিকে নওগাঁ, ময়মনসিংহ এবং চুয়াডাঙ্গায়ও প্রাকৃতিক কারণে সূচক-নির্ধারিত ফলন কম হয়েছে। কক্সবাজারের ন্যূনতম বীমাকৃত ৩৪৮ কৃষক এবং নওগাঁ, ময়মনসিংহ এবং চুয়াডাঙ্গায় ৫ হাজার কৃষক চুক্তি অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন। কৃষকরা যে পরিমাণ প্রিমিয়াম দিয়েছিলেন; বীমাপ্রতিষ্ঠান তার প্রায় ৪ গুণ অর্থ পরিশোধ করেছে। বীমাকৃত কৃষক সরাসরি ব্র্যাক, আইফার্মার, আইপেজ এবং স্মার্টমেকের মাধ্যমে বীমাপ্রতিষ্ঠান হতে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুবিধা আদায় করতে সক্ষম হয়েছেন। রবি মৌসুমে আলু, বোরো মৌসুমে ধান পার করে পরবর্তীতে আমন মৌসুমের ধানেও ‘বীজ ও শস্য বীমার’ পদক্ষেপ নিয়েছে ‘পুলা’। এবার উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কৃষক বীমার আওতায় এসেছে। এবার ৩০ হাজার কৃষক ব্র্যাকের মাধ্যমে কৃষি বীমা করেছেন। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের স্মার্ট কৃষকরা এরিয়া ইল্ড ইনডেক্স ইন্সুরেন্সের (AYII) সুবিধা সম্পর্কে অবগত হয়েছেন। এই কৃষকরা পূর্বে ব্র্যাক হতে ঋণ নিয়ে ফসল আবাদ করত। কিন্তু এখন তারা ব্র্যাকের মাধ্যমে ঋণ নয়; ‘ফসলে বীজ ও শস্য বীমার’ সুবিধা গ্রহণ করছে।
সামগ্রিকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করলে ‘ফসলে বীজ ও শস্য বীমা’ একটি সময়োপযোগী কার্যক্রম। অনেক প্রতিষ্ঠানই ফসলের বীজ ও শস্য উৎপাদন করে নানামুখী আতঙ্কে থাকে। সেই শঙ্কার চাদর সরিয়ে দিচ্ছে ‘ফসলে বীজ ও শস্য বীমা’। মহাবিপর্যয়ের বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, তাপপ্রবাহ, শিলাবৃষ্টি, অত্যধিক বৃষ্টিপাত, কীটপতঙ্গ, রোগ ইত্যাদি ঝুঁকির সবটাই ‘পুলা’ স্বল্প টাকার প্রিমিয়ামের বিপরীতে গ্রহণ করছে। বিপরীতে বীমাপ্রতিষ্ঠান কৃষকের শতভাগ আর্থিক ক্ষতি পরিশোধের নিশ্চয়তা দিচ্ছে। তাদের ন্যূনতম উৎপাদন সীমাসূচক স্যাটেলাইট ডাটা অনুমাননির্ভর নয়। যেকোনো জায়গায় প্রয়োগ করা যেতে পারে। এটি সহজ ও স্বচ্ছ পদ্ধতি। দাবি নিরূপণ পদ্ধতি অত্যন্ত সহজ। দাবিকৃত বীমার টাকা পরিশোধ প্রক্রিয়াও সহজ এবং সময়কালও কম। বীমা প্রক্রিয়ায় প্রশাসনিক খরচ নামমাত্র। প্রিমিয়ামও কম। ফলে কৃষক পর্যায়ে বিন্দুমাত্র ঝুঁকি নেই।
বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং পুষ্টির নিরাপত্তা বিধানে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন; যা অনস্বীকার্য। এক্ষেত্রে স্থিতিশীল এবং যুতসই কৃষি অবকাঠামো নিশ্চিত করতে ‘বীজ ও শস্য বীমা’ অত্যাবশ্যকীয় ভূমিকা পালন করছে। কৃষিবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও কৃষকদের বীমার আওতায় আনার কথা বলেছেন। তিনি- ‘হাওড় এলাকার কৃষকরা অকাল বন্যায় প্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া উপকূলীয় এলাকার কৃষকরাও প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। তাদের জন্য কোনো বীমা ব্যবস্থা চালু করা যায় কি-না সেটাও আমাদের সরকার ভাবছে।’ কারণ একজন কৃষক রোদ-বৃষ্টি-নানা প্রতিকূলতা-প্রতিবন্ধকতার পাহাড় ডিঙিয়ে জমিনে ফসল ফলায়। সেই ফসল বিক্রি করে তার যদি লাভ না হয়ে লোকসান হয়। সব ভেসে যায়; ডুবে যায়। পোকায় খেয়ে ফেলে- তাহলে কৃষক মাঠেই মারা যাবে। তাতে কৃষিপ্রধান বাংলাদেশ মহাসংকটে পড়বে। বাংলাদেশে ‘বীজ ও শস্য বীমা’ সফলভাবে কার্যকর করা হলে সব ধরনের অনিশ্চয়তার অন্ধকার সরিয়ে কৃষকদের সুরক্ষা এবং আর্থিকভাবে স্বাবলম্বি হওয়া নিশ্চিত করতে আলোর ঝরনা হয়ে উঠতে পারে।