Sunday, September 24, 2023

সালতামামি

সম্পাদকের কথা: একুশ শতকের দ্বিতীয় দশক শেষ করে আমরা তৃতীয় দশকে পদার্পণ করলাম। অন্যদিকে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা তার টানা এক যুগের প্রধানমন্ত্রিত্বের শেষে দ্বিতীয় যুগে প্রবেশ করলেন। একুশ শতকের সবচেয়ে সংকটকাল আমরা পার হচ্ছি। বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের তথা কোভিড-১৯-এর তা-বে সমস্ত মানব সভ্যতা থমকে দাঁড়িয়েছে। ২০২০ সাল তাই মানবেতিহাসে সমগ্র বিশ্বের জন্য অবিস্মরণীয় সংকটকাল হিসেবে বিবেচিত হবে। চীনের উহান থেকে এই ভাইরাস দ্রুত সমগ্র বিশ্বের সাথে আমাদের দেশেও ছড়িয়ে পড়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন ও রাশিয়ার মতো অত্যুন্নত দেশ, সম্পদে-বৈভবে, বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তির আবিষ্কারে যাদের তুলনা হয় না, এই কোভিডের আক্রমণে সেসব দেশই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রোগের সংক্রমণ, মৃত্যুর হার, অর্থনৈতিক উন্নয়নে ধস এবং বেকারত্বের হারের দিক থেকেও এই দেশগুলো সব দেশকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ভারত, চীন ও ব্রাজিল প্রভৃতি বিপুল জনসংখ্যার দেশও এই অতিমারিতে গভীর আর্থ-সামাজিক সংকটে হাবুডুবু খাচ্ছে। পক্ষান্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উদীয়মান অর্থনীতির দেশÑ বাংলাদেশ এই সংকট মোকাবিলায় যে দক্ষতা, পারদর্শিতা এবং সৃজনশীলতার পরিচয় দিয়েছে, সমগ্র বিশ্ব সম্প্রদায় তার প্রশংসা করেছে। করোনাজনিত কারণে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের অভিঘাতে বাংলাদেশের উন্নয়নের গতিও কিছুটা শ্লথ হয়েছিল। মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা-এর মতো উপর্যুপরি বন্যাও আমাদের অর্থনীতিতে-জনজীবনে সংকট সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু এসব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে ২০০৯ সালে সূচিত উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকে। বরং করোনা সত্ত্বেও গত অর্থবছরে প্রাথমিক সংকট কাটিয়ে বাংলাদেশ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। আমাদের স্বপ্নের পদ্মসেতু এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে কর্ণফুলি নদীর তলদেশে টানেল এবং পায়রা সমুদ্রবন্দরের কাছে নির্মাণাধীন বিদ্যুৎকেন্দ্র। আমরা এখানে সাফল্যের বিস্তারিত বিবরণ দেব না।
বৈরী প্রকৃতি (ভাইরাস ও বন্যা) সত্ত্বেও বাংলাদেশে একজন মানুষও খাদ্যের অভাবে, চিকিৎসার অভাবে মারা যায়নি। বাংলাদেশ উন্নয়নের সড়কে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবেÑ এই ভবিষ্যৎ বাণী ইতোমধ্যেই সফলতার সূচক স্পর্শ করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তব। তবে সালতামামিতে আমাদের দেশে বেদনাদায়ক ঘটনা অনেক ঘটেছে। গত ২০২০ সালে আমাদের দেশের অনেক শ্রেষ্ঠ সন্তানকে আমরা হারিয়েছি। আমরা নতুন বছরে পদার্পণ করে এসব প্রাতঃস্মরণীয় প্রয়াতজনের প্রতি জানাচ্ছি গভীর শ্রদ্ধা। দেশকে প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির সাথে এগিয়ে নেওয়ার অতুলনীয় নেতৃত্বদানের জন্য বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনাকে নিবেদন করছি প্রাণঢালা অভিনন্দন।
আমরা এক যুগের খেরোখাতা খুলে বসলে অত্যাশ্চর্য সাফল্যের বিশদ বিবরণ পাব। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে প্রদত্ত ভাষণে তার উল্লেখ করেছেন। এখানে পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়োজন। বাঙালি সকল ব্যর্থতা, পশ্চাৎপদতা ও অক্ষমতার কলঙ্ক ঘুচিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ জাতির পিতার সোনার বাংলার স্বপ্ন রূপায়ণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতই বাঙালি যে বীরের জাতি, একটি বুদ্ধিবৃত্তিক ও সৃজনশীল জাতি ইতোমধ্যে তা প্রমাণিত হয়েছে। আর সাফল্যের প্রধান কারিগর, মূল প্রেরণাদাতা ও নেত্রী হচ্ছেন বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। আমরা যেমন বাংলাদেশের তেমনি জননেত্রী শেখ হাসিনার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
নতুন বছরে আমরা প্রিয় দেশবাসী, উত্তরণের পাঠক, গ্রাহক, বিজ্ঞাপণদাতা ও সাহায্যদাতাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু। শেখ হাসিনা দীর্ঘজীবী হোন।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য