আরিফ সোহেল: ফাইনাল শেষে মিডিয়ার কাছে চ্যাম্পিয়ন ভারতের অধিনায়কও স্বীকার করেছেনÑ ‘বাংলাদেশের এই দলটি বেশ দুর্দান্ত’। সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবলে ভারতের জয় যখন ৫-২; তখন এমন কথার রহস্য নিশ্চয়ই আছে। ভারতের ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ৫ আগস্ট অনুষ্ঠিত ম্যাচটি যারা দেখেছেনÑ মাঠে কিংবা অনলাইনে; তারা বাংলাদেশ কেন এত বড় ব্যবধানে হেরেছে এ হিসাবটা মেলানোর চেষ্টা করছেন।
৬০ মিনিট পর্যন্ত বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২০ দলের ম্যাচটি শুধু নিয়ন্ত্রণেই ছিল না; ছিল ২-১ এগিয়েও। যদিও মাত্র ২ মিনিটের মাথায় আচানক এক অযাচিত পেন্টালি থেকে এগিয়ে গিয়েছিল ভারত। কিন্তু তারপর বাংলাদেশের নবীন ফুটবলারদের শুধুই পায়ে জাদুর নান্দনিক মহড়ার চিত্রায়ন।
বাংলাদেশের দামাল ফুটবলারদের কাছে বারবার নাকাল হচ্ছিল র্যাংকিংয়ে ৮৮ এগিয়ে থাকা ভারত। বাংলাদেশের ফুটবলাররা তাদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। ড্রিবলিং, পায়ের কারুকাজের দুরন্ত গতিতে ভারতের রক্ষণদুর্গ দুমড়ে-মুচড়ে দিচ্ছিল রাজিন-রফিক-শাহিনরা। গোল পরিশোধ করা; এগিয়ে যাওয়া অসাধারণ দৃশ্যায়ন ছিল মনোমুগ্ধকর। দুটি গোলই ছিল দুর্দান্ত ভলিতে। একটি ঠিক প্রথমার্ধের শেষলগ্নে ৪৫ মিনিটে। করেছেন রাজন হাওলাদার। আর দলকে চালকের আসনে নিয়েছেন ঠিক দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ৪৮ মিনিটে। ডি-বক্সের ভেতর থেকে বাঁ-পায়ের চোখ ধাঁধানো এক ভলিতে পল স্মলির রক্ষণভাগের আগুয়ান শিষ্য শফিক মিয়া।
৬০ মিনিটে ভারত যখন ম্যাচে ফিরল; তখনই মনটা আনমনে হয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের। শুরুর পেনাল্টিটা নিয়ে খচখচ করছিল অনেকের মন। ভারতের দ্বিতীয় গোলটিও কেমন কেমন লেগেছে। ফলে হারানোর বৃত্ত ভরাটের কাজটা অবশ্য ভারতের ফুটবলারদের মুন্সিয়ানা ছিল। সেখানে কোনো কারসাজি মনে হয়নি। অতিরিক্ত সময়ে আক্রমণের পিঠে পাল্টা আক্রমণে সাইক্লোনের মতো ল-ভ- হয়ে যায় সবকিছু। ১ মিনিটের ব্যবধানে দুটি গোল করে ভারত বাংলাদেশের স্বপ্ন-আশা গুঁড়িয়ে দিয়েছে। আর শেষ গোলটাও ভারত পেয়েছে প্রতি আক্রমণের সুযোগ নিয়ে। ভারতের পক্ষে গুরকিরাত সিং পেয়েছেন হ্যাটট্রিকও।
৫ দলের এই আসরে প্রথম সাক্ষাতে বাংলাদেশ ২-১ গোলের ব্যবধানে ভারতকে হারিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছিলÑ এবার আমরা এসেছি…; কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। তারপরও কম কীসেরÑ টিম বাংলাদেশ রানার্সআপ।
লেখক : সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, উত্তরণ