উত্তরণ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদকে জানিয়েছেন, বিশ্বজুড়ে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পরপরই সংক্রমণ প্রতিরোধে কার্যকরী ব্যবস্থা হিসেবে বিনামূল্যে টিকা প্রদানের বিষয়টিকে সরকার অগ্রাধিকার দিয়েছে। এ-লক্ষ্যে করোনার টিকা আবিষ্কার ও ব্যবহারের অনুমতি প্রাপ্তির পূর্ব হতেই টিকা সংগ্রহ ও টিকা প্রদানের সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সরকার। এ পর্যন্ত (এ বছরের ৩০ আগস্ট পর্যন্ত) ২৪ কোটি ৫৪ লাখ ৫২ হাজার ৭০০ ডোজ টিকা সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে টেবিলে উপস্থাপিত প্রশ্নোত্তরে আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মো. শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
শহীদুজ্জামান সরকারের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রতি মাসে যাতে ১ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিনোফার্ম হতে প্রদত্ত সিডিউল অনুযায়ী আগামী অক্টোবর থেকে প্রতি মাসে ২ কোটি হিসেবে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬ কোটি টিকা পাওয়া যাবে।
তিনি জানান, বিশ্বের সব উৎপাদনকারী সংস্থার সঙ্গেই আমরা যোগাযোগ স্থাপন করেছি, এর মধ্যে কেবলমাত্র ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট হতে সাড়া পাই এবং অগ্রিম টাকা দিয়ে আমরা ৩ কোটি ডোজ টিকা সংগ্রহের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করি। কিন্তু অন্যান্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানসমূহ হতে টিকা প্রাপ্তির কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে কেবলমাত্র চীনের সিনোফার্ম এবং রাশিয়ার স্পুটনিক-ভি হতে সাড়া পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা টিকা সংগ্রহের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করি। এর মধ্যে সিনোফার্মের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের জন্য সমঝোতা চুক্তিও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
টিকা প্রাপ্তির পরিসংখ্যান তুলে ধরে শেখ হাসিনা সংসদকে জানান, ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ১ কোটি ৮২ লাখ ৮৯ হাজার ১৮ জনকে প্রথম ডোজ এবং ৭৮ লাখ ৪০ হাজার ৬৯ জনকে দ্বিতীয় ডোজ; সর্বমোট ২ কোটি ৬১ লাখ ২৯ হাজার ১৮৭ ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। ৩০ আগস্ট পর্যন্ত ভ্যাকসিন মজুতের পরিমাণ ১ কোটি ১৮ লাখ ৯৬ হাজার ৩৪৩ ডোজ।
সংসদ নেতা জানান, দ্বিপাক্ষিক উপহার হিসেবে ভারত থেকে অ্যাস্ট্রাজেনেকার (কোভিডশিল্ড) ৩২ লাখ ডোজ এবং চীনের সিনোফার্ম টিকার ২১ লাখ ডোজ পাওয়া গেছে। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে উপহার হিসেবে মডার্নার ৫৫ লাখ, সিনোফার্মের ৩৪ লাখ ৭১ হাজার ৬০০ ডোজ এবং ফাইজারের টিকার ১ লাখ ৬২০ ডোজ পাওয়া গেছে। তাছাড়া আরও ৬০ লাখ ২০ হাজার ৮২০ ডোজ ফাইজার টিকা প্রাপ্তির প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ক্রয় চুক্তির আওতায় ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে ৩ কোটি, চীনের সিনোফার্ম ইন্টারন্যাশনালের সঙ্গে ৭ কোটি ৭০ লাখ ডোজ টিকা ক্রয়ের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রাশিয়া থেকে ১ কোটি ডোজ স্পুটনিক-ভি টিকা ক্রয়ের চুক্তি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। কোভ্যাক্সের মাধ্যমে ৩ কোটি ডোজ সিনোফার্ম ও ৭ কোটি ৫০ লাখ ডোজ সিনোভ্যাক্স টিকা ক্রয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ৭০ মিলিয়ন ডোজ জনসন অ্যান্ড জনসন টিকা, ৩০ মিলিয়ন ডোজ সিনোফার্ম এবং ৭৫ মিলিয়ন ডোজ সিনোভ্যাক্স টিকা কোভ্যাক্স থেকে ক্রয়ের প্রস্তাব আনুষ্ঠানিকভাবে পাঠানো হয়েছে। প্রতি মাসে যাতে ১ কোটি ডোজের বেশি টিকা পাওয়া যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
সংসদে প্রধানমন্ত্রী- সাড়ে ২৪ কোটির বেশি টিকার ব্যবস্থা হয়েছে
