উত্তরণ ডেস্ক : ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিং বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নেতা হিসেবে পেয়ে এই দেশের মানুষ সত্যিই ভাগ্যবান। আমার বিশ্বাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও তাকে নিয়ে গর্ববোধ করতেন। তিনি এবং তার দল যে দক্ষতার সঙ্গে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।
গত ২৪ মার্চ জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শততম জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ-কথা বলেন তিনি। বাংলাদেশকে নিজের ‘সেকেন্ড হোম’ উল্লেখ করে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আর ভুটানের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য আছে। বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। কারণ, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশের ৫০তম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আমিও ইতিহাসের একটি অংশ হয়ে গেলাম। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, বিগত ১০ বছরে বাংলাদেশ অর্থনীতিতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। এই করোনার মধ্যেও দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ জিডিপি বাংলাদেশের। এগুলো জেনে আমাদের সত্যিই আনন্দ অনুভূত হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট কন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা এবং জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। এ সময় বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে বন্ধু-রাষ্ট্র ভুটানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা, ‘মুজিব চিরন্তন’ প্রতিপাদ্যের ওপর টাইটেল অ্যানিমেশন ভিডিও এবং বিশেষ সংগীতানুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ দক্ষিণ এশিয়া গড়তে এই অঞ্চলের রাজনৈতিক ও নীতি-নির্ধারকদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে প্রাপ্ত সম্পদ কাজে লাগিয়ে আমরা সহজেই দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের ভাগ্যোন্নয়ন ঘটাতে পারি। আমরা যদি আমাদের জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করি, তাহলে দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের মধ্যে সমৃদ্ধ অঞ্চল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাবে।’ বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতি দেওয়ার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভুটানই প্রথম দেশ, যে স্বাধীন বাংলাদেশকে সর্বপ্রথম স্বীকৃতি দেয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয়লাভের আগেই ৬ ডিসেম্বর ভুটান বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়। ভুটানের জনগণের সেই অবদানের কথা কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করি।’
দ্বি-পক্ষীয় বাণিজ্য সম্প্রসারণে নৌ যোগাযোগ-ব্যবস্থা চালুতে বাংলাদেশ-ভুটান ঐকমত্য
দ্বি-পক্ষীয় ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে নৌ যোগাযোগ-ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভুটান একমত হয়েছে। গত ২৪ প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভুটানের প্রধানমন্ত্রী ডা. লোটে শেরিংয়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ ব্যাপারে ঐকমত্য প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্যচুক্তিকে লাভজনক করে তুলতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। ভুটানের প্রধানমন্ত্রী সেদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিপল এট্রিসহ পূর্ণ মেয়াদি ভিসা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। জবাবে শেখ হাসিনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেন।