Monday, December 4, 2023
বাড়িSliderশান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে কথা নেই, কিন্তু...

শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে কথা নেই, কিন্তু…

যে দলের জন্মই সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে (জিয়াউর রহমান), সেই দল গণতন্ত্র উদ্ধারের কথা বলে কোন মুখে? আবার অনেকে তাদের সঙ্গে তাল মেলায়। কিন্তু আমার প্রশ্ন- বিএনপির নেতৃত্ব কই? বিএনপি নেতাদের বলুন- তাদের নেতা কে? এতিমের টাকা আত্মসাৎ মামলায় খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত।

উত্তরণ প্রতিবেদন: প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, বিএনপি যদি বেশি বাড়াবাড়ি করে তবে খালেদা জিয়াকে আবারও কারাগারে পাঠিয়ে দেব। তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করলে কোনো কথা নেই; কিন্তু একটা মানুষের গায়ে হাত দিলে ছাড়ব না।
আর বিএনপি যে এত লম্ফঝম্প করে তাদের দলের মাথা কোথায়? সবাই তো দুর্নীতিবাজ, সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি। দেশের মানুষ কেন তাদের পাশে থাকবে? আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে বর্তমান সরকারের গত সাড়ে ১৩ বছরে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের কথা জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সামনে নির্বাচন। আমরা মানুষের মন জয় করে এবং দেশের উন্নয়ন করেই নৌকার পক্ষে ভোট আনব। দেশের মানুষ আর সেই অশান্ত পরিবেশ চায় না, শান্তির পরিবেশ চায়, দেশের উন্নতি চায়। তাই দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকেই চায়, কেননা আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকা মানে দেশে শান্তি, উন্নয়ন আর অগ্রগতি।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে ৩ নভেম্বর বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিএনপির অপতৎপতার সমালোচনা করে আরও বলেন, দেশের জনগণ কি একটু ভেবে দেখেছে এই লুটেরা, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, জঙ্গিবাদীরা (বিএনপি-জামাত) ক্ষমতায় আসলে দেশের অবস্থা কি হবে? করোনা মহামারিসহ দুঃসময়ে বিএনপির অস্তিত্ব কোথায় ছিল? তারা তো জনগণের পাশে দাঁড়ায়নি।
বিএনপি যে এত লম্ফঝম্প করছে আর স্বপ্ন দেখছে জনগণ ভোট দিয়ে ভরে দেবেÑ এত সহজ নয়। দেশের জনগণ কী বিএনপির শাসনামলের হাওয়া ভবন, দুঃশাসন, জঙ্গিবাদ সৃষ্টি, দুর্নীতি, লুটপাট, নির্যাতনের কথা ভুলে যাবে? ভুলবে না। দেশের জনগণ আওয়ামী লীগের সঙ্গেই আছে, বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায়ে রাখতে পারবে না। দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি। আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য পারভীন জামান কবিতা, জাতীয় চার নেতার অন্যতম সৈয়দ নজরুল ইসলামের মেয়ে ডা. সৈয়দা জাকিয়া নূর এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান। সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন। এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে সকল শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, যে দলের জন্মই সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীর হাতে (জিয়াউর রহমান), সেই দল গণতন্ত্র উদ্ধারের কথা বলে কোন মুখে? আবার অনেকে তাদের সঙ্গে তাল মেলায়। কিন্তু আমার প্রশ্ন- বিএনপির নেতৃত্ব কই? বিএনপি নেতাদের বলুনÑ তাদের নেতা কে? এতিমের টাকা আত্মসাৎ মামলায় খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত।
আর মামলা আমরা দেইনি, খালেদা জিয়ার প্রিয় কাছের মানুষ ফখরুদ্দিন-মঈনুদ্দিনরা দিয়েছেন। এই ফখরুদ্দিন আহমদকে খালেদা জিয়া বিশ্বব্যাংক থেকে এনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর করেছিলেন। জেনারেল মঈনুদ্দিনকে ৯ জন সিনিয়রকে ডিঙ্গিয়ে সেনাপ্রধান করেছিলেন। তার প্রিয় মানুষরাই মামলা দিয়েছে, আদালতে প্রমাণের পর সাজা হয়েছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ ও বয়োবৃদ্ধ হওয়ায় নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত রেখে বাসায় থাকার সুযোগ করে দিয়েছি মানবিক কারণে। এ সময় মিলনায়তনে উপস্থিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা হাত নেড়ে সেই সুযোগ বাতিলের দাবি জানাতে থাকলে এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বেশি বাড়াবাড়ি করলে আবার কারাগারে পাঠিয়ে দেব, কোনো চিন্তা করবেন না। এ কথা বলার পর নেতাকর্মীরা শান্ত হন।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলের দুঃশাসনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার সময় দেশে কয়টা সরকার ছিল? হাওয়া ভবনে একটা, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আরেকটা। হাওয়া ভবনের পাওনা না মিটিয়ে দেশে কোনো উন্নয়নের কাজ হয়নি। কেউ ব্যবসা করতে পারেনি। এক ভাগ হাওয়া ভবনে আরেক ভাগ পিএমওতে তৈরি ব্যক্তিগত উন্নয়নের উইংয়ে দিতে হতো। ব্যবসায়ীদের দু-ভাগ দিয়েই তবে ব্যবসা করতে হতো। তাদের চরম দুর্নীতি, বিদেশে বিপুল অর্থপাচারের ঘটনা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এফবিআই তদন্ত করে বের করেছে।
তদন্ত করে তারা খুঁজে পেয়েছে খালেদা জিয়া ও তার দুই পুত্র তারেক রহমান ও কোকোর পাচারকৃত অর্থের। এফবিআইএ-র প্রতিনিধি এসে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছে এবং সেই মামলায় তারেক রহমানের সাত বছরের সাজা হয়েছে। ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাতেও তারেক রহমান সাজাপ্রাপ্ত।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তারেক রহমান রাজনীতি না করার মুচলেকা দিয়ে বিদেশে পালিয়ে গেছে। বিএনপি এত লম্ফঝম্প করছে, বিএনপি দলের মাথা কোথায়? সবই তো দুর্নীতিবাজ, সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক আসামি। তারা অগ্নিসন্ত্রাস করে সাড়ে তিন হাজার মানুষকে দগ্ধ করেছে, শত শত মানুষকে পেট্টোলবোমা মেরে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যত কিছু ধ্বংসাত্মক কাজ করতেই তারা (বিএনপি) পারদর্শী। বিএনপি-জামাত জোটের সেই ভয়াল দুঃশাসন, অত্যাচার-নির্যাতন, হাওয়া ভবনের কথা কী দেশের জনগণ ভুলে যাবে? কেন দেশের জনগণ তাদের পাশে থাকবে? এ সময় প্রধানমন্ত্রী বর্তমান সরকারের টানা তিন বছরের মেয়াদে দেশের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য দলের নেতাকর্মীদের প্রতি নির্দেশ দিয়ে বলেন, মহামারির মধ্যে দেশের এখন মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলারের কাছাকাছি। গ্রামের একদম তৃণমূল পর্যায়ে উন্নয়ন নিয়ে গেছি।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য