উত্তরণ ডেস্ক: আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মিয়ানমারের নাগরিকদের নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের নিজভূমিতে স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়াই সংকটের একমাত্র সমাধান। এই সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী গত ২৫ অক্টোবর আজারবাইজানের রাজধানী বাকু কংগ্রেস সেন্টারে সমসাময়িক বিশ্বের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সমন্বিত ও পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিশ্চিতে ‘বান্দুং নীতিমালা’ সমুন্নত রাখা বিষয়ে এক সাধারণ আলোচনায় এ-কথা বলেন। আর্থ-সামাজিক সাফল্য সত্ত্বেও বাংলাদেশ বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তন ও রোহিঙ্গা সংকট এই দুটি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গা সংকট একটি রাজনৈতিক সংকট এবং এর মূল গভীরভাবে মিয়ানমারে প্রোথিত। তাই এর সমাধানও মিয়ানমারের অভ্যন্তরেই খুঁজতে হবে।’ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে রোহিঙ্গা সংকট কেবল বাংলাদেশে নয়, এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে পারে স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছি। এটি আমাদের দেশ এবং এর বাইরেও অস্থিতিশীলতা তৈরির আশঙ্কা রয়েছে। আমরা এই সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করছি।’ এ-প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১ কোটির বেশি বাংলাদেশি নাগরিককে ভারত আশ্রয় দেওয়ার কথা স্মরণ করেনএ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দায় খুবই নগণ্য হওয়া সত্ত্বেও দেশটি জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাবে প্রবলভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোকে তাই অবশ্যই জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনের প্রতি পূর্ণ সম্মান জানাতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর নামে সড়ক ফিলিস্তিনে
বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে ফিলিস্তিনে একটি সড়কের নামকরণ হচ্ছে। আজারবাইজানে অষ্টাদশ ন্যাম শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে গত ২৬ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতে এই তথ্য জানান ফিলিস্তিনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াদ মালকি। বঙ্গবন্ধুর নামে পশ্চিম তীরের হেবরন শহরের একটি সড়কের নামকরণ হচ্ছে বলে জানান তিনি। খবর বাসস, ইউএনবি ও বিডিনিউজের। বাকু কংগ্রেস সেন্টারে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক জানান, ওই সড়ক উদ্বোধন করতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে ফিলিস্তিনে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। স্বাধীন ভূখণ্ডের জন্য অর্ধশতকের বেশি সময় ধরে সংগ্রামরত ফিলিস্তিনিদের অধিকারের বিষয়ে বঙ্গবন্ধু সব সময়ই সোচ্চার ছিলেন। শেখ হাসিনাও জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেন।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে একমত হয়েছে বাংলাদেশ ও আজারবাইজান। ২৬ অক্টোবর দেশটির প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বৈঠকে এ ঐকমত্য হয়। আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন তুরস্কে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (তিনি আজারবাইজানেরও দায়িত্বে আছেন) আল্লামা সিদ্দিকী। আধাঘণ্টার বৈঠকে দুই নেতা দুদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করেন। এটি ছিল দুদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ের প্রথম বৈঠক। শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা ইস্যুতে সমর্থনের জন্য আজারবাইজানের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানান।