Monday, October 2, 2023
বাড়িSlider‘মুজিবের বাংলাদেশ’

‘মুজিবের বাংলাদেশ’

তারিক সুজাত: বাঙালি জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি মানচিত্র ও পতাকা উপহার দিয়ে হাজার বছরের শৃঙ্খল থেকে আমাদের মুক্ত করে গেছেন। জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ, মহান স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর, ভাষা আন্দোলনের ৭০ বছরÑ এতগুলো মাহেন্দ্রমুহূর্তে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দেশ ও বিশ্বের মানুষের কাছে বাঙালির ঐতিহ্য, কৃষ্টি, সাহিত্য, সংস্কৃতি সর্বোপরি এই জনপদের যা কিছু অর্জন ও অজস্র ত্যাগের মহিমাকে তুলে ধরার সুযোগ এসেছে। আমাদের সকল উদ্যোগে ব্যক্তি থেকে সমষ্টি, কাল থেকে মহাকাল, সীমা থেকে অসীমের দিকে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়কে শানিত করে নিতে পারলেই এই মহামানবের নামের সঙ্গে যুক্ত উচ্চাকাক্সক্ষী সাহসী প্রতিপাদ্য অর্থাৎ এবারের পর্যটন বর্ষের থিম বা সেøাগান ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ নির্ধারণ করাটি যথার্থ হবে।
উত্তাল ষাটের দশকে যখন গগনবিদারী সেøাগানে সেøাগানে ‘এক নেতা, এক দেশ, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’ এই নির্ভীক বাণী উচ্চারিত হতো- সেদিনই তো একটি মুক্তিকামী জাতির মুক্তির আকাক্সক্ষার সঙ্গে একটি নাম বাংলাদেশের সমার্থক হয়ে গিয়েছিল ‘মুজিবের বাংলাদেশ’। পৃথিবীর ইতিহাসে তিনি এমনি একজন বিরল নেতাÑ যিনি স্বজাতির মর্মমূলে প্রবল শক্তিতে মিশে গিয়ে দেশপ্রেম ও আদর্শের শিকড় প্রোথিত করে গেছেন, নিপীড়িত অসহায় মানুষের মনে সাহসের সঞ্চার করে যেতে পেরেছেন এমনভাবে যে, মৃত্যুকে তুচ্ছ করে দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য জীবন দিতেও তারা কার্পণ্য করেনি। আজও ত্রিশ লক্ষ শহিদের রক্তভেজা বাংলার মাটির প্রতিটি ধূলিকণায় স্বদেশ আত্মা কথা বলে ওঠে। স্পেনের কবি গার্সিয়া লোরকা তার একটি কবিতায় লিখেছিলেন ‘এমন একটি গান গেয়ে যেতে চাই, কালের নিথর জলে ছুড়বে পাথর’। প্রিয় সেই কবির সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে বলি, আসুন এই পর্যটন বর্ষে সম্মিলিতভাবে আমরা এমন কিছু করি যাতে আজ ও আগামীর জন্য তা হয়ে ওঠে অনুসরণীয়।
মুজিবের বাংলাদেশ তো সেই চর্যাপদের কবিদের বাংলাদেশ, যারা হাজার বছর আগে শৃঙ্খল মুক্তির গান শুনিয়ে গেছেন। মুজিবের বাংলাদেশÑ তের শত নদীবিধৌত এই পলিমাটি ধোয়া অসাম্প্রদায়িক ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ।
মুজিবের বাংলাদেশÑ মানুষের জয়গান গেয়েছে সেই কত আগে ‘সবার ওপরে মানুষ সত্য, তাহার ওপরে নাই।’
কত শত পর্যটক, ধর্ম প্রচারক, বিদেশি বণিক বাংলার সমৃদ্ধ কৃষ্টি, আতিথেয়তা ব্যবসা-বাণিজ্যের সমৃদ্ধি, কারুশিল্পের ভুবনজয়ী খ্যাতির কথা বলে গেছেন।
শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর জ্ঞানের দীপ্তিতে আলোকিত করেছিলেন সুদূর তিব্বত, তা ক্রমে সমগ্র চীন দেশে ছড়িয়ে গিয়েছিলÑ তার বাস্তুভিটা বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রাম সেও তো মুজিবেরই বাংলাদেশে। লালন, মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ, সুকান্ত, জসীম উদ্দীন, সুফিয়া কামাল, শামসুর রাহমানের কবিতার বাংলাদেশ সেও তো মুজিবের বাংলাদেশ। কবির কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বাংলার প্রকৃতি, মানুষ ও গৌরবদীপ্ত ইতিহাসকে হৃদয়ে ধারণ করে তিনি আমাদের কণ্ঠে তুলে দিয়েছিলেন সেই অমল পঙ্ক্তি ‘বাংলার মুখ আমি দেখিয়াছি’ সেই সজল উচ্চারণ, সেই অমিত সাহস ক্রমান্বয়ে ধাবিত হয়েছে পরাধীনতার শৃঙ্খল ভাঙার প্রত্যয়ে। তাই অনায়াসে তিনি বলে গেছেন ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম’।
বঙ্গবন্ধুর আরাধ্য ‘সোনার বাংলা’ আজ তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাস্তবায়নের দোরগোড়ায়। যিনি তার দূরদর্শী নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের আদর্শে বাংলাদেশকে আবারও সঠিক পথে নিয়ে এসেছেন। গোটা বিশ্বে আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল।
‘মুজিবের বাংলাদেশ’ আজ আর কোনো স্বপ্ন নয়। অর্থনৈতিক মুক্তি না এলে স্বাধীনতা অর্থবহ হয়ে ওঠে না। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই বাংলাদেশ আজ আত্মমর্যাদা নিয়ে ভুবনময় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ আজ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। বাস্তবের সোনালি ডানায় ভর করে আমরা আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে চলবার শক্তি অর্জন করেছি।
মাত্র ৫৫ বছরের জীবনে বঙ্গবন্ধুর বহুমাত্রিক অবদানের বহু কিছুই আমাদের অজানা ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি গ্রন্থ অসমাপ্ত আত্মজীবনী, কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীনÑ ইতিহাসের নানা অজানা অধ্যায় খুলে দিয়েছে। ইতোমধ্যে বিশ্বের প্রায় ১২টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর গ্রন্থাবলি। এই অনুবাদকর্মের মধ্য দিয়ে জাতির পিতার জীবন ও কর্ম স্পর্শ করেছে আন্তর্জাতিক পরিসর। এবারের পর্যটন বর্ষে আমাদের জন্য একটি বিশেষ পাওয়া জাতির পিতার মাত্র ৩২ বছর বয়সে চীনে অনুষ্ঠিত শান্তি সম্মেলনে অংশগ্রহণকে কেন্দ্র করে ১৯৫৪ সালে কারাগারে বসে লেখা স্মৃতিচারণমূলক ভ্রমণকাহিনি ‘আমার দেখা নয়াচীন’। একজন ভ্রমণকাহিনি লেখক হিসেবেও তিনি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ভিন্ন মাত্রায়। শেষোক্ত দুটি গ্রন্থের গ্রাফিক ডিজাইন ও প্রকাশনার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে মূল পা-ুলিপির পাশাপাশি নোটগুলো দেখারও সৌভাগ্য হয়েছিল। একজন অনুসন্ধিৎসু পর্যটক হিসেবে তিনি কি দেখতে আগ্রহী হয়েছিলেন সদ্য বিপ্লবোত্তর নয়াচীন ভ্রমণকালে? তিনি দেখেছেন ঐতিহাসিক স্থানসমূহÑ চীনের প্রাচীর, বিভিন্ন জাদুঘর, সান ইয়াৎ সেন-এর সমাধিসৌধ, শ্রমিকের বসতবাড়ি, স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, ধর্মশালা, মসজিদ। আবার নৈসর্গিক শোভা সংবলিত পর্বতমালা, বিখ্যাত হ্যাংচো হ্রদ। একজন পর্যটকের যে বিষয়গুলোর প্রতি স্বাভাবিক কৌতূহল তার চেয়ে বেশি আগ্রহ নিয়ে সামগ্রিকভাবে একটি দেশকে জানা, সেই দেশের মানুষকে জানার অনুসন্ধিৎসার ভেতর রয়ে গেছে আমাদের এই বছরের প্রতিপাদ্য ‘মুজিবের বাংলাদেশ’কে দেশি ও বিদেশি পর্যটকদের কাছে তুলে ধরার দিক-নির্দেশনা। গতানুগতিক চিন্তা থেকে বেরিয়ে এসে নতুন আঙ্গিকের ‘ট্যুরিজম প্ল্যান’ নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য সত্যিকার অর্থে একটি পূর্ণাঙ্গ ‘ইনফোটেইনমেন্ট ট্যুরিজম প্ল্যান’ নিয়ে আমাদের এগিয়ে আসতে হবে।
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক স্থানগুলোকে ভিন্ন আঙ্গিকে তুলে ধরার জন্য সেই স্থানগুলোতে নতুনভাবে কিছু কাজ করে নিতে হবে। আমাদের এও জানতে হবে ইতোমধ্যে যা করা হয়েছে তার কতটুকু আমরা নেব। মুজিববর্ষকে ঘিরে আমাদের তৈরি হয়েছে বিশাল কনটেন্ট আর্কাইভ। গত মার্চ মাসের (১৭-২৬ মার্চ) ১০ দিনব্যাপী আয়োজন এবং এই ডিসেম্বরের ১৬ এবং ১৭ তারিখে উপস্থাপিত শিল্পের নানা মাধ্যমের পরিবেশনায় যে বর্ণিল বাংলাদেশ উঠে এসেছে তার সবই মুজিবের বাংলাদেশ। তাই সেগুলো থেকে আমরা প্রয়োজনমতো দু’হাতে গ্রহণ করব।
এ বছর আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ বছর উদ্যাপন করছি। এ-কথা আমাদের জানা নেই পৃথিবীর আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয় একটি রাষ্ট্রের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে এভাবে অবিচ্ছেদ্য ছিল কি না? বঙ্গবন্ধু ছিলেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি আদায়ের আন্দোলনে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে বহিষ্কৃত হতে হয়। হলফনামায় স্বাক্ষর দিয়ে বহিষ্কারাদেশ থেকে বের হয়ে আসার সুযোগ দেওয়া হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন। এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই মহান ভাষা আন্দোলনের প্রতীক শহিদ মিনার অবস্থিত। ১৯৫২-এ মাতৃভাষার দাবিতে সংগ্রামমুখর দিনগুলোতে বঙ্গবন্ধু বন্দী অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখেন। আমাদের একুশ আজ ইউনেস্কো ঘোষিত ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে সারা পৃথিবীতে উদ্যাপিত হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন সোহরাওয়ার্দী উদ্যান তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান যেখানে বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ প্রদান করেন। সেদিন সাত কোটি জোড়া চোখ স্থির হয়েছিল একটি আঙুলে। একটি জাতি নির্দেশনা পেয়েছিল স্বাধীনতা ও মুক্তি সংগ্রামের। যে ভাষণ আজ বিশ্বমানবের সম্পদ। ইউনেস্কো ঘোষিত বিশ্ব ঐতিহ্যের দলিল।

আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ ইতোমধ্যে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ লোগো সংবলিত ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে। আরও অনেক কিছুই আমরা চেষ্টা করলে করতে পারব। একটি স্মারক নোট ও কয়েন। আমরা আনন্দিত হব যদি এ বছর খেলাধুলা, সাহিত্য, সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখার মানুষেরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আসরে জার্সি বা নিজেদের পরিধেয়তে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক লোগো সংবলিত ব্যাজ বা কোটপিন পরিধান করি।

এই ক্যাম্পাসেই জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধি। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ এই কবির ‘বিদ্রোহী’ কবিতার শতবর্ষ পালিত হচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর ঐকান্তিক আগ্রহে মুক্ত স্বাধীন দেশে অসুস্থ কবিকে সুচিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়। বঙ্গবন্ধু তাকে জাতীয় কবির সম্মানে ভূষিত করেন। কবির বাসগৃহে প্রতিদিন যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হতো। এর পাশেই শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন প্রতিষ্ঠিত চারুকলা ইনস্টিটিউট। বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু শিল্পাচার্য জয়নুল জাতির পিতার ইচ্ছায় বাংলাদেশের সংবিধান নকশা ও অলংকরণ করেছিলেন। আর চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ যে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ বের হয় তাও তো আজ ইউনেস্কো তার মেমোরি রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত এমন একটি প্রাঙ্গণকে কি আমরা ‘ওয়াক অব ফেম’ নামাঙ্কিত করে এই পর্যটন বর্ষের জন্য প্রতিদিনের আয়োজন করতে পারব না। যেখানে অংশ নিয়ে নতুন প্রজন্মসহ দেশি ও বিদেশি পর্যটকরা জানবে আমাদের গৌরব চিহ্নগুলো। এরকম আরও স্থান যার সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিজড়িতÑ ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়ি, টুঙ্গিপাড়ার সমাধিসৌধ, কেন্দ্রীয় কারাগারে বঙ্গবন্ধু সেল, আগরতলা মামলায় অভিযুক্ত অবস্থায় বঙ্গবন্ধু যে সেলে বন্দী ছিলেন- উল্লেখিত জায়গাগুলোর বেশ কয়েকটিতে বর্তমানে জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই জায়গাগুলো ঘিরে আমরা নতুন পরিকল্পনা নিতে পারি। আমাদের জন্য আনন্দের সংবাদ ইতোমধ্যে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ লোগো সংবলিত ডাকটিকিট প্রকাশিত হয়েছে। আরও অনেক কিছুই আমরা চেষ্টা করলে করতে পারব। একটি স্মারক নোট ও কয়েন। আমরা আনন্দিত হব যদি এ বছর খেলাধুলা, সাহিত্য, সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখার মানুষেরা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আসরে জার্সি বা নিজেদের পরিধেয়তে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক লোগো সংবলিত ব্যাজ বা কোটপিন পরিধান করি।
একটি শহর, একজন ব্যক্তি মানুষের নামে আমরা নামকরণ হতে দেখেছি। একদার লেনিনগ্রাদ। ওয়াশিংটন ডিসি। মুজিবের নামাঙ্কিত মুজিবনগর কী সাজতে পারে না নতুন সাজে? প্রাগ শহরটি যদি লেখক ফ্রান্স কাফকার, কোনিয়া যদি কবি-দার্শনিক জালালউদ্দীন রুমি, ওয়ারশ শহরটি যদি পিয়ানোবাদক ফ্রেডরিক সপিন কীর্তিগাথার সঙ্গে মিলেমিশে জগৎবাসীর সামনে উপস্থাপিত হতে পারে, আমরা নিশ্চয়ই ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ এই প্রতিপাদ্যকেও সার্থকভাবে তুলে ধরতে পারব। এই আশাবাদ ব্যক্ত করি।
আজ থেকে ৫০ বছর আগে ‘১লা ও ২রা আগস্ট ১৯৭১ সালে’ আমেরিকার ম্যানহাটনে তৎকালীন বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শিল্পীদের পরিবেশনায় সেই যুদ্ধদিনে ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের মুক্তিসংগ্রামের কথা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। প-িত রবিশংকর পরবর্তী সময়ে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, এই উপমহাদেশের ধ্রুপদি সংগীত রাতারাতি বিশ্বখ্যাতি পেয়েছিল সেই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। এই রাষ্ট্রের জন্মের আগেই যার ব্র্যান্ডিং হয়েছিল সে-কালের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাবান শিল্পীদের উদার অংশগ্রহণে, আজ স্বাধীনতার ৫০ বছরে পৌঁছে স্বাধীন সার্বভৌম সৃজনশীল বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষÑ এর মধ্যে প্রায় ১ কোটি প্রবাসী ভাই-বোন যারা নাড়ির টানে দেশের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের মধ্যে আছেন। তাদের সকলকে নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ পরিকল্পনার মাধ্যমে ‘মুজিবের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই প্রতিপাদ্যকে পৃথিবীময় ছড়িয়ে দেওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে এ লেখার ইতি টানছি।

জয় বাংলা, জয়তু মুজিবের বাংলাদেশ।

লেখক : সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, উত্তরণ

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য