কবিগুরুর এই আক্ষেপকে আমরা মোচন করেছি। বাঙালি জাতি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা মানুষ, তারা প্রাণ দিতে জানে। এমন কাজ তারা এবার করেছে যার নজির ইতিহাসে নাই।” বক্তৃতার শেষের দিকে বলেছিলেনÑ “বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এখন যদি কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ করতে চায়। তাহলে সে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মুজিব সর্বপ্রথম তার প্রাণ দেবে।” জোর গলায় বলেছিলেনÑ “একজন বাঙালিও প্রাণ থাকতে এই স্বাধীনতা নষ্ট হতে দেবে না।”
মুনতাসীর মামুন: বিজয় অর্জিত হয়েছে, কিন্তু কী যেন নেই। ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে আমরা যারা বাংলাদেশে তাদের অনুভব তখন ছিল এ-রকম। বাংলাদেশ হলো কিন্তু বঙ্গবন্ধু নেইÑ এ কেমন কথা? তার নামেই তো যুদ্ধ হয়েছে। ৪৪ বছর হয়ে গেল; কিন্তু এখনও আবছা আবছা মনে পড়ছে, অনেকে রোজা রেখেছেন, অনেকে নফল নামাজ পড়েছেন যাতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব নিরাপদে ফিরে আসতে পারেন। পাকিস্তানিরা তো নিষ্ঠুরেরও অধম। আল্লাহ্ কি বাঙালিদের প্রার্থনায় সাড়া দেবেন? সত্যিই সারাদেশের মানুষের মনোভাব ছিল সে-রকমই।
হঠাৎ খবর রটে গেল বঙ্গবন্ধু ফিরছেন। মুহূর্তে ক্লান্ত, যুদ্ধে বিধ্বস্ত বাঙালি যেন জেগে উঠল। আমি দেখেছি, স্বজন হারানোর বেদনার পরও তখন অনেকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছিল। মনোভাবটা ছিল এ-রকমÑ তিনি স্বাধীনতা এনেছেন, আমাদের ভার এখন তার ওপর, তিনিই দেখবেন আমাদের।
১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরবেন। ৭ মার্চ আমরা যেমন ছুটেছিলাম রমনা রেসকোর্সের দিকে, ১০ জানুয়ারিও ঢাকাবাসী রওয়ানা হলো রেসকোর্সের দিকে। একদল ছুটল তেজগাঁ বিমানবন্দরের দিকে। তেজগাঁ থেকে রমনা পর্যন্ত রাস্তার দু-পাশেও মানুষজন চাতকের মতো দাঁড়িয়ে। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে প্লেনটি যখন নামল তখন কেউ আর কোনো কিছু মানতে চায়নি। প্লেনের দোরগোড়ায় তাকে জড়িয়ে ধরে তাজউদ্দীন আহমদ ও সহকর্মীদের কান্না। তারপর ট্রাকে করে রমনার দিকে যাত্রা। সেই দৃশ্য এখন বর্ণনা করা দুরূহ। আমরা সৌভাগ্যবান, আমরা রমনা রেসকোর্সে তার ৭ মার্চের ভাষণ যেমন শুনেছিলাম, ১০ জানুয়ারির ভাষণও তেমন শুনেছি।
সেই একই উত্তেজনা, এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আনন্দ। কারণ, তিনি ফিরে এসেছেন। ১০ জানুয়ারির ভাষণের পুরোটা এখন হাতের কাছে নেই, সারাংশটি আছে। কিন্তু, বঙ্গবন্ধুর সেই আবেগে ভরা কণ্ঠস্বর মনে আসে। ৭ মার্চ ছিল দৃঢ় প্রত্যয়, ১০ জানুয়ারি ছিল উদ্বেগ।
বক্তৃতায় তার মুক্তি পাওয়ার পটভূমি উল্লেখ করেছিলেন। এরপরেও ব্রিটিশ সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্টকে এক সাক্ষাৎকারে সে-প্রসঙ্গে কিছু বলেছিলেন, যা ১৮ জানুয়ারি (১৯৭২) নিউইয়র্কে টেলিভিশনে প্রচারিত হয়েছিল। ফ্রস্ট তাকে জিজ্ঞেস করেছিলেনÑ
“এমন কী শেষ মুহূর্তে ইয়াহিয়া খান এখন ভুট্টোর হাতে ক্ষমতা তুলে দেন, তখনো না-কি তিনি ভুট্টোর কাছে আপনার ফাঁসির কথা বলেছিলেন? এটা কি ঠিক?
শেখ মুজিব : হ্যাঁ, ঠিক। ভুট্টো আমাকে সে কাহিনিটা বলেছিল। ভুট্টোর হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার সময় ইয়াহিয়া বলেছিল : মি. ভুট্টো, আমার জীবনের সব চাইতে বড় ভুল হয়েছে, “শেখ মুজিবুর রহমানকে ফাঁসি না দেওয়া।”
ফ্রস্ট : ইয়াহিয়া এমন কথা বলেছিল!
শেখ মুজিব : হ্যাঁ, ভুট্টো এ-কথা আমায় বলে তার পরে বলেছিল : ‘ইয়াহিয়ার দাবি ছিল, ক্ষমতা হস্তান্তরের পূর্বে সে পেছনের তারিখ দিয়ে আমাকে ফাঁসি দেবে।’ কিন্তু ভুট্টো তার এ-প্রস্তাবে রাজি হয়নি।
ফ্রস্ট : ভুট্টো কি জবাব দিয়েছিল? তার জবাবের কথা কি ভুট্টো আপনাকে কিছু বলেছিল?
শেখ মুজিব : হ্যাঁ, বলেছিল।
ফ্রস্ট : কি বলেছিল ভুট্টো?
শেখ মুজিব : ভুট্টো ইয়াহিয়াকে বলেছিল, না আমি তা হতে দিতে পারি না। তাহলে তার মারাত্মক প্রতিক্রিয়া ঘটবে। বাংলাদেশে এখন আমাদের ১ লাখ ৩ হাজার সামরিক বাহিনীর লোক আর বেসামরিক লোক বাংলাদেশ আর ভারতীয় বাহিনীর হাতে বন্দী রয়েছে। তাছাড়া ৫ থেকে ১০ লাখ অবাঙালি বাংলাদেশে আছে। মি. ইয়াহিয়া, এমন অবস্থায় আপনি যদি মুজিবকে হত্যা করেন আর আমি ক্ষমতা গ্রহণ করি, তাহলে একটি লোকও আর জীবিত অবস্থায় বাংলাদেশ থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে ফেরত আসতে সক্ষম হবে না। তখন আমার অবস্থা হবে সংকটজনক।” [আবদুল মতিন, বিজয় দিবসের পর]
বঙ্গবন্ধু ঢাকার পথে রওয়ানা হওয়ার আগে ভুট্টো তাকে জানান যে, পূর্ব পাকিস্তান এখন বাংলাদেশ। এবং সেদেশের নেতা হিসেবে তিনি এখন ফিরবেন। তা, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে কি একটা কনফেডারেশন হতে পারে? এ-কথা জানিয়েছেন ভারতীয় কূটনীতিক শাশাঙ্ক ব্যানার্জী যিনি একই বিমানে লন্ডন থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন। উত্তরে কী বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু, জানতে চান শশাঙ্ক ব্যানার্জী। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমার জীবনকালে নয়।
১০ জানুয়ারিতে সেই বক্তৃতায় তিনি এ-প্রসঙ্গে বলেছেন, “পাকিস্তানি কারাগার থেকে আমি যখন মুক্ত হই তখন জনাব ভুট্টো আমাকে অনুরোধ করেছিলেন, সম্ভব হলে আমি যেন দুদেশের মধ্যে একটা শিথিল সম্পর্ক রাখার চেষ্টা করি। আমি তাকে বলেছিলাম, আমার জনসাধারণের নিকট ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত আমি আপনাকে এ-ব্যাপারে কিছু বলতে পারি না। আমি এখন বলতে চাই। জনাব ভুট্টো সাহেব, আপনারা শান্তিতে থাকুন।”
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আনার কৃতিত্ব তিনি সাধারণ মানুষকে দিয়েছিলেন। বলেছিলেনÑ “আপনারা বাংলাদেশের মানুষ সেই স্বাধীনতা এনেছেন।” আরও বলেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা উদ্ধৃতি করেÑ “‘সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি।’ কবিগুরুর এই আক্ষেপকে আমরা মোচন করেছি। বাঙালি জাতি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা মানুষ, তারা প্রাণ দিতে জানে। এমন কাজ তারা এবার করেছে যার নজির ইতিহাসে নাই।” বক্তৃতার শেষের দিকে বলেছিলেনÑ “বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এখন যদি কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ করতে চায়। তাহলে সে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মুজিব সর্বপ্রথম তার প্রাণ দেবে।” জোর গলায় বলেছিলেনÑ “একজন বাঙালিও প্রাণ থাকতে এই স্বাধীনতা নষ্ট হতে দেবে না।”
ইসলামি দেশগুলি পাকিস্তানকে সমর্থন দিয়েছিলÑ এ-তথ্য তখনও হয়তো তার অজানা। কিন্তু ধর্ম যে বাঙালির সত্ত্বাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত সেটি তিনি ভুলেন নি। মনে করিয়ে দিয়েছিলেন জনতাকেÑ “আপনারা আরও জানেন যে, আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। আমার সেলের পাশে আমার জন্য কবরও খোঁড়া হয়েছিল। আমি মুসলমান, মুসলমান মাত্র একবারেই মরে। তাই আমি ঠিক করেছিলাম, আমি তাদের নিকট নতি স্বীকার করব না।”
জনগণকে মনে করিয়ে দিয়ে বলেছিলেনÑ “বাংলাদেশ পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম অধ্যুষিত দেশ। ইন্দোনেশিয়ার পরেই এর স্থান। মুসলিম জনসংখ্যার দিক দিয়ে ভারতের স্থান তৃতীয় ও পাকিস্তানের স্থান চতুর্থ।”
ইসলামের কথা তিনি মনে করিয়ে দিয়েছিলেন অন্য কারণে। পাকিস্তান সব সময় ধর্মের দোহাই দিয়ে বাঙালিদের শোষণ করেছে, ভয় দেখিয়েছে। আন্দোলন শুরু হলেই পাকিস্তানি নেতারা বলতেন ইসলাম বিপন্ন। বাঙালিরা আঁতাত করছে ভারত বা ভারতীয় হিন্দুদের সঙ্গে। ধর্মের দোহাই দিয়ে শাসন করাÑ এ-বৃত্ত তিনি ভাঙতে চেয়েছিলেন। নিজে মুসলমান দাবিকরণেও তিনি যে বাঙালি তা ভোলেন নি এক মুহূর্তের জন্য। যে কারণে বক্তৃতার বিভিন্ন জায়গায় এই কথাগুলি মনে করিয়ে দিয়েছিলেনÑ “ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় আমি বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ। বাংলা আমার ভাষা। জয় বাংলা।” তারপর বলেছিলেনÑ “পাকিস্তানি সৈন্যবাহিনী ইসলামের নামে এদেশের মুসলমানদের হত্যা করেছে, আমাদের নারীদের বেইজ্জত করেছে। ইসলামের অবমাননা আমি চাই না। আমি স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে দিতে চাই যে, আমাদের দেশ হবে গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতান্ত্রিক দেশ। এদেশের কৃষক-শ্রমিক। হিন্দু-মুসলমান সবাই সুখে থাকবে, শান্তিতে থাকবে।” তার এই প্রতিশ্রুতি তিনি রেখেছিলেন। অনেকে বলেন, তিনি বামপন্থিদের চাপে সমাজতন্ত্রের কথা বলেছিলেন। এই বক্তব্য দেওয়ার সময় বামপন্থি কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি। বিমান থেকে নেমেই তিনি বক্তৃতার মঞ্চে এসেছেন। সুতরাং সমাজতন্ত্রের কথা তিনি ভেবেচিন্তেই বলেছিলেন, ধর্মনিরপেক্ষতার কথাও। কিন্তু তার আত্মজীবনী পড়লে দেখা যায়, যৌবনেই তিনি সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার প্রতি আকৃষ্ট ছিলেন। সমাজতন্ত্রের ধরনটা যেমন হবে সে-সম্পর্কে হয়তো স্পষ্ট চিন্তা ছিল না। এখানে ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর গুরুত্ব দিতে চাই। কারণ, ঐ রকম ঘোষণা ঐ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ছিল একেবারে নতুন। আরও পরে তিনি ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে তিনি কী বোঝেন সেটি বিশদভাবে বলেছিলেনÑ “বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্মনিরপেক্ষ মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমান মুসলমানের ধর্ম পালন করবে। হিন্দু তার ধর্ম পালন করবে, খ্রিষ্টান তার ধর্ম পালন করবে। বৌদ্ধও তার ধর্ম পালন করবে। এ মাটিতে ধর্মহীনতা নাই, ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। এর একটা মানে আছে। এখানে ধর্মের নামে ব্যবসা চলবে না। ধর্মের নামে লুট করা চলবে না। ধর্মের নামে রাজনীতি করে রাজাকার আলবদর পয়দা করা বাংলার বুকে আর চলবে না। সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেয়া হবে না।” সে-কারণে তিনি সংবিধানে মূল নীতি হিসেবে গণতন্ত্র, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা ঘোষণা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার জন্য, ধর্মভিত্তিক রাজনীতিও নিষিদ্ধ করেছিলেন।
১৯৭৫ সালে জেনারেল জিয়া এসব মূলনীতি উৎপাটন করেন। কারণ, মানসিকভাবে তিনি পাকিস্তানের কাছাকাছি থাকতে চেয়েছিলেন। আমাদেরও তার সহযাত্রী করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ঠিকই বুঝেছিলেন ধর্মের নামে আবারও রাজাকার আলবদর পয়দা হবে। ১৯৭৫ সালের পর আমরা তাই দেখি। এ-কারণে বোধহয় বক্তৃতার শুরুতে বলেছিলেনÑ “ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি।” তার কথা সত্য হয়েছিল। লে. জেনারেল জিয়া পাকিস্তান যাত্রা শুরু করেছিলেন। তার অনুগামীদের পাকিস্তানে পৌঁছাবার আকুল বাসনা এখনও লক্ষ্য করি।
আগেই উল্লেখ করেছি, ১০ জানুয়ারির বক্তৃতায় এক ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছিল। কী হবে? যে আশা তিনি দেখিয়েছিলেন তা পূরণ করতে না পারলে? তাই উদ্বেগ চাপা না রেখে বলেছিলেনÑ “আজ সোনার বাংলার কোটি কোটি মানুষ গৃহহারা, আশ্রয়হারা, তারা নিঃসঞ্চল। আমি মানবতার খাতিরে বিশ্ববাসীর প্রতি আমার এই দুঃখী মানুষদের সাহায্য দানের জন্যে এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি। নেতা হিসেবে নয়, ভাই হিসেবে আমি আমার দেশবাসীকে বলছি আমাদের সাধারণ মানুষ যদি আশ্রয় না পায়, খাবার না পায়, যুবকরা যদি চাকরি বা কাজ না পায়, তাহলে আমাদের এই স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবেÑ পূর্ণ হবে না। আমাদের এখন চাই অনেক কাজ করতে হবে।”
গণহত্যার কথা তিনি ভোলেন নি, যদিও পশ্চিম পাকিস্তানে থাকার কারণে এর ব্যাপকতা হয়তো তখনও অনুধাবন করতে পারেন নি। বলেছিলেন তিনিÑ “যারা অন্যায়ভাবে আমাদের মানুষদের মেরেছে তাদের অবশ্যই বিচার হবে। বাংলাদেশে এমন পরিবার খুব কমই আছে, যে পরিবারের লোক মারা যায় নি।… পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশে যে নির্বিচারে গণহত্যা করেছে তার অনুসন্ধান ও ব্যাপকতা নির্ধারণের জন্য আমি জাতিসংঘের নিকট একটা আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল গঠনের আবেদন জানাচ্ছি।”
জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, মতিউর রহমান নিজামী ও বেগম খালেদা জিয়া বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ থেকে আমাদের নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন পাকিস্তানে। কিন্তু বাঙালি যে পাকিস্তান যেতে চায় না তার প্রমাণ, বঙ্গবন্ধু-কন্যাকে গত নির্বাচনে একতরফা ম্যান্ডেট দেওয়া। বঙ্গবন্ধুর করা সেই চার মূলনীতি, অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা আবার বঙ্গবন্ধুর সেই বাংলাদেশে ফিরতে পারি। বঙ্গবন্ধু বক্তৃতার প্রথমে যা বলেছিলেন তা দিয়েই শেষ করবÑ “বাংলাদেশের ইতিহাসে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবেই টিকে থাকবে। বাংলাকে দাবিয়ে রাখতে পারে এমন কোনো শত্রু নেই।”