উত্তরণ ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে আখ্যায়িত করে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বঙ্গবন্ধুই একমাত্র নেতা যিনি লড়াই করে একটি দেশ স্বাধীন করেছেন। তার (বঙ্গবন্ধু) নেতৃত্বেই বিশ্বের বুকে জন্ম নিয়েছে স্বাধীন বাংলাদেশ। স্বাধীনতার পর তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তুলেছেন। শক্ত ভিত রচনা করেছেন উন্নয়নের।
গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্যারেড গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় এ-কথা বলেন তিনি। বক্তৃতার শুরুতেই অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগদানের আমন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ইতিহাস খ্যাত নেতা শেখ মুজিবের জন্মশতবর্ষে জন্মদিনে যোগ দিতে পেরে আমি সম্মানিত বোধ করছি।
মালদ্বীপ প্রেসিডেন্ট বঙ্গবন্ধুর জীবনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধুর ৬-দফা কর্মসূচিই হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি। এই ৬-দফার ভিত্তিতে বাংলাদেশ সৃষ্টির জন্য তিনি ৭ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাই তো ইউনেস্কো বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শেখ মুজিব আজীবন বাংলার মানুষের মুক্তি ও গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। দেশ স্বাধীনের পর তিনি কঠোর পরিশ্রম করেছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উদীয়মান দেশে পরিণত হয়েছে। সফররত মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে তার প্রতি এ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর ঘুরে দেখেন এবং পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন। এর আগে বাংলাদেশ সফরে এসেই মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহ সাড়ে ৯টার দিকে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বীর শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
শেখ হাসিনা-ইব্রাহিম সলিহ বৈঠকে ৪ সমঝোতা স্মারক সই
বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে ৪টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। গত ১৮ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে তার কার্যালয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সলিহর বৈঠকের পর দুদেশের মধ্যে এসব সমঝোতা স্মারক সই হয়। এদিকে বৈঠকের পর দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে সরাসরি ফ্লাইট ও জাহাজ চলবে। এদিন সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট। তাকে অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর দুই নেতা একান্তে বৈঠক করেন। বৈঠকে দুদেশের দ্বি-পক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। পরে সমঝোতা স্মারক সই হয়।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন। এ সময় ড. মোমেন জানান, ৪টি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ায় দুদেশের যৌথ সহযোগিতার সম্পর্ক আরও নিবিড় হবে। তিনি জানান, আলোচনায় দুদেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্য দুদেশের মধ্যে উপকূলীয় নৌপথ ও সরাসরি জাহাজ চলাচল চালু, সরাসরি ফ্লাইট চালুর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।