Wednesday, October 4, 2023
বাড়িআরওফেব্রুয়ারি মাসের দিবস

ফেব্রুয়ারি মাসের দিবস

  • ফারুক শাহ

১৪ ফেব্রুয়ারি : পহেলা ফাল্গুন ‘বসন্ত উৎসব’
পহেলা ফাল্গুন। বাংলা পঞ্জিকার ১১তম মাস ফাল্গুনের প্রথম দিন ও ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জি অনুসারে ১৪ ফেব্রুয়ারি পহেলা ফাল্গুন পালিত হয়। এদিন প্রকৃতির চিরাচরিত স্বভাব অনুযায়ী বন-বনান্তে কাননে কাননে পারিজাতের রঙের কোলাহলে ভরে ওঠে চারদিক। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগে রঙের দোলা। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ ‘বসন্ত উৎসব’ নিয়মিত আয়োজন করে আসছে। বসন্তকে বরণ করে নেওয়ার জন্য বাংলাদেশে বিশেষ উৎসবের সাথে পালিত হয়। ধীরে ধীরে উৎসবটির আয়োজন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। অন্যদিকে প্রাচীনকাল থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দোল পূর্ণিমার দিন বসন্ত উৎসব পালন করে থাকে।

১৪ ফেব্রুয়ারি : সুন্দরবন দিবস
১৪ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবন দিবস। সুপার সাইক্লোন বুকে ধারণ করে উপকূলবাসীকে বাঁচিয়ে রাখা সুন্দরবন-এর সন্নিহিত জনপদের মানুষ সরকারিভাবে কয়েক বছর ধরে পালন করে আসছে এই দিবস। সুন্দরবন বিভাগ নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করে আসছে। বিশ^খ্যাত এই ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে এখনও আকর্ষণীয়।
৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার আয়তনের বিশে^র বৃহত্তম বাদাবন এই সুন্দরবন ২৪ ঘণ্টায় কমপক্ষে ছয়বার রূপ বদলায়। খুব ভোরে এ বনভূমি আবির্ভূত হয় এক রূপ, দুপুরে তার চেহারা অন্যরকম। পড়ন্ত বিকালে এই বনভূমি গ্রহণ করে আরেক রূপ। সন্ধ্যায় নেয় ভিন্ন সাজ। মধ্য ও গভীর রাতের সুন্দরবনের সৌন্দর্য আরেক রকম। আর চাঁদনি রাতের রূপের বর্ণনা দেওয়া যে কারোর পক্ষে কঠিন। সুন্দরবনের মোহনীয় সাজ পর্যটকদের মোহিত করে। কচিখালী সমুদ্রসৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ তো রয়েছেই। সুন্দরবন অনন্য রূপ ধারণ করেছে সুন্দরী, গেওয়া, পশুর, গরান, গোলপাতাসহ ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিডের সমরোহে। এখানকার স্থলভাগে রয়েছে রয়েল বেঙ্গল টাইগারÑ বাঘকুলের মধ্যে যাকে সেরা হিসেবে ভাবা হয়। সুন্দরবনের হরিণ এমন কি বানরও সত্যিকার অর্থে অনন্য। লোনা পানির কুমির, বিশাল আকারের অজগর, সারাবিশে^ বিলুপ্তপ্রায় ইরাবতী ডলফিনসহ ৩৭৫ প্রজাতির বন্যপ্রাণীর বিচরণক্ষেত্র এই দৃষ্টিনন্দন বাদাবন। এ কারণে দেশি-বিদেশি হাজারও পর্যটক সৌন্দর্যের ক্ষুধা মেটাতে এখানে ছুটে আসেন। ১৯৯৭ সালে জাতিসংঘ সুন্দরবনের ১ লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর এলাকাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে ঘোষণা করে।

২১ ফেব্রুয়ারি : মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেওয়ার দাবিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সালাম-বরকত-রফিক-জব্বারসহ বেশ কয়েকজন। মাতৃভাষার জন্য তাদের আত্মত্যাগ ইতিহাসে এক নজিরবিহীন ঘটনা। ১৯৫৩ সাল থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে দেশব্যাপী পালিত হয়ে আসছে। প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারি খালি পায়ে হেঁটে শহিদ মিনারে ফুল অর্পণ করে আমরা শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। বাঙালি জাতির কাছে দিনটি গভীর শোকের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়ার দিন। কানাডাভিত্তিক বহুভাষিক ও বহুজাতিক মাতৃভাষা-প্রেমিক গোষ্ঠীর সদস্য রফিকুল ইসলাম ও আব্দুল সালামের উদ্যোগ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও কূটনৈতিক তৎপরতার ফলে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ইউনেস্কো বাংলাদেশের ২১ ফেব্রুয়ারির শহিদ দিবসকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ (International Mother Language Day) হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার পর ২০০০ সাল থেকে সারাবিশ্বে দিনটি ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য