Monday, October 2, 2023
বাড়িউত্তরণ ডেস্কফায়ারিং স্কোয়াডে ১৪ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড

ফায়ারিং স্কোয়াডে ১৪ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ড

কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা পরিকল্পনা

উত্তরণ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় সমাবেশস্থলের পাশে বোমা পুঁতে রাখার অভিযোগে করা মামলায় ১৪ জঙ্গির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। দণ্ডিতরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদ আল ইসলামী বাংলাদেশের (হুজি-বি) নেতাকর্মী। প্রায় ২১ বছর আগের এই মামলায় গত ২৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় দেন। রায়ে ১৪ জঙ্গির প্রত্যেকের মৃত্যুদ- কার্যকর করতে বলা হয়েছে ‘ফায়ারিং স্কোয়াডে’ বা গুলি করে।
মৃত্যুদ-প্রাপ্ত আসামিরা হলো- মো. আজিজুল হক ওরফে শাহনেওয়াজ, মো. লোকমান, মো. ইউসুফ ওরফে মোছহাব মোড়ল, মোছহাব হাসান ওরফে রাশু, শেখ মো. এনামুল হক, মো. মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ, মো. মাহমুদ আজহার ওরফে মামুনুর রশিদ, মো. রাশেদুজ্জামান ওরফে শিমুল, মো. তারেক, মো. ওয়াদুদ শেখ ওরফে গাজী খান, মো. আনিসুল ইসলাম, সারোয়ার হোসেন মিয়া, মাওলানা আমিরুল ইসলাম ওরফে জেন্নাত মুন্সী ও মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান। আসামিদের মধ্যে প্রথম ৯ জন কারাগারে আছেন। রায় ঘোষণার আগে তাদের ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়। পরের পাঁচজন পলাতক রয়েছে। আদালত তাদের বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। আদালত যা বলেছে : রায়ে আদালত বলেছেন, প্রকাশ্যে ফায়ারিং স্কোয়াডে আসামিদের প্রত্যেকের মৃত্যুদ- কার্যকর করার নির্দেশ প্রদান করা হলো। তবে ফায়ারিং স্কোয়াডে দ- কার্যকর করা না গেলে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ- কার্যকরের আদেশও দেন আদালত। আদালত বলেছেন, নির্দেশ মোতাবেক তাদের মৃত্যুদ- কার্যকর করতে কর্তৃপক্ষের কোনো অসুবিধার কারণ থাকলে প্রচলিত নিয়মানুসারে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে তাদের প্রত্যেকের মৃত্যুদ- কার্যকর করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
রায়ের পর্যবেক্ষণ : রায়ের পর্যবেক্ষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার প্রসঙ্গও উঠে আসে। পর্যবেক্ষণে আদালত বলেছে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এলে ষড়যন্ত্রকারীরা বিভিন্নভাবে তাকে ২০ বার হত্যাচেষ্টায় লিপ্ত হয়। আসামিদের জবানবন্দি বিশ্লেষণ করে পর্যবেক্ষণে আদালত আরও বলেছেন, মুফতি হান্নানের দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী ২০০০ সালের জুলাই মাসে হুজির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে বৈধ সরকারকে উৎখাত করার জন্য শেখ হাসিনাকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ঐ বছরের ২০ জুলাই কোটালীপাড়ায় শেখ হাসিনার সমাবেশস্থলে হেলিপ্যাডের কাছে ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে রাখা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুজির হত্যাচেষ্টার প্রথম ঘটনা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় ২০০০ সালের ২০ জুলাই, দ্বিতীয় ঘটনা খুলনায় ২০০১ সালের ৩০ মে, তৃতীয় ঘটনা সিলেটে ২০০১ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এবং চতুর্থ ঘটনা ঢাকায় ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট। এ কারণে হুজি ও জেএমবিসহ আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের মাধ্যমে উল্লিখিত ও ন্যক্কারজনক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা সম্ভব হবে বলে অত্র ট্রাইবু্যুনাল মনে করে। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রপক্ষের আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদান করা হলো। এদিকে ঢাকা মহানগর আদালতের পিপি আবদুল্লাহ আবু বলেছেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি। এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট।’

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য