Wednesday, October 4, 2023
বাড়িআরওপ্রয়াতজন : শ্রদ্ধাঞ্জলি

প্রয়াতজন : শ্রদ্ধাঞ্জলি

উত্তরণ প্রতিবেদন:

সি আর দত্ত
মুক্তিযুদ্ধকালীন ৪ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার মেজর জেনারেল (অব.) চিত্তরঞ্জন দত্ত (সি আর দত্ত) মারা গেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় বয়েন্টনবিচের বেথেসডা সাউথ হাসপাতালের হসপিস কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় স্থানীয় সময় গত ২৪ আগস্ট, সোমবার, রাত সাড়ে ১১টার দিকে (বাংলাদেশ সময় ২৫ আগস্ট মঙ্গলবার

সি আর দত্ত

সকালে) তার মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। বীরউত্তম খেতাবধারী মুক্তিযোদ্ধা সি আর দত্তের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন ও সামাজিক সংগঠন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সি আর দত্তের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ১৯৭১ সালে ৪ নম্বর সেক্টরে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে নিজেই নেতৃত্ব দেন সি আর দত্ত। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য কৃতিত্ব ও অবদানের জন্য দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাকে বীরউত্তম খেতাবে ভূষিত করা হয়। চিত্তরঞ্জন দত্ত ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হলে তার দায়িত্ব দেওয়া হয় সি আর দত্তকে। বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রথম মহাপরিচালক তিনি। পরে তিনি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট এবং বিআরটিসি’র চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করেন। মেজর জেনারেল হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসরে যান সি আর দত্ত। সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম গঠনের পর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সারাদেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন সি আর দত্ত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

আবু ওসমান চৌধুরী
মুক্তিযুদ্ধকালীন ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) আবু ওসমান চৌধুরী গত ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায় রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর। তাকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় বনানী সামরিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। তার

আবু ওসমান চৌধুরী

মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠন ও সামাজিক সংগঠন মুক্তিযুদ্ধের এই সেক্টর কমান্ডারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের বৈদ্যনাথতলায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিপরিষদ গঠিত হলে আবু ওসমান চৌধুরী এক প্লাটুন সৈন্য নিয়ে মন্ত্রিপরিষদকে গার্ড অব অনার দেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর আবু ওসমান চৌধুরীকে লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাকে আর্মি সার্ভিস কোরের (এএসসি) পরিচালকের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের পর ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সেনা অভ্যুত্থানের সময় একদল সেনা সদস্য আবু ওসমান চৌধুরীকে হত্যার জন্য তার গুলশানের বাড়িতে হামলা করে। বাড়িতে না থাকায় তিনি সেদিন প্রাণে বেঁচে গেলেও নিহত হন তার স্ত্রী নাজিয়া খানম। পরবর্তী সময় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন আবু ওসমান চৌধুরী। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। স্বাধীনতা পুরস্কার জয়ী মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী চাঁদপুর জেলা পরিষদের সাবেক প্রশাসক। স্বাধীনতাযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২০১৪ সালে আবু ওসমান চৌধুরীকে স্বাধীনতা পদকে ভূষিত করে সরকার।

রাহাত খান
খ্যাতিমান সাংবাদিক ও কথাশিল্পী রাহাত খান পরলোকগমন করেছেন। গত ২৮ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টায় রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেনের বাসায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। তার মৃত্যুতে

রাহাত খান

গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাহাত খানের জন্ম ১৯৪০ সালের ১৯ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার পূর্ব জাওয়ার গ্রামে। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তার কর্মজীবন শুরু হয় ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে। পরে তিনি ঢাকায় জগন্নাথ কলেজেও কিছুদিন শিক্ষকতা করেন। পরে ১৯৬৯ সালে দৈনিক সংবাদে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হয় সাংবাদিক জীবন। ১৯৭২ সালে তিনি যোগ দেন দৈনিক ইত্তেফাকে সহকারী সম্পাদক হিসেবে। এখানেই তিনি সাংবাদিক হিসেবে আলোচিত হয়ে ওঠেন ‘সুহৃদ’ ছদ্মনামে ‘পথে-প্রান্তরে’ শিরোনামে নিয়মিত কলাম লেখার মাধ্যমে। বর্ণাঢ্য, কর্মময় জীবনে রাহাত খান একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছেÑ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৩), সুহৃদ সাহিত্য পুরস্কার (১৯৭৫), সুফী মোতাহার হোসেন পুরস্কার (১৯৭৯), আবুল মনসুর আহমদ স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮০), হুমায়ুন কাদির স্মৃতি পুরস্কার (১৯৮২) এবং ত্রয়ী সাহিত্য পুরস্কার।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য