রাজিয়া সুলতানা: ইউনেস্কোর বিশ্ব হেরিটেজ হিসেবে স্বীকৃত সিঙ্গাপুর বোটানিক গার্ডেনের ন্যাশনাল অর্কিড গার্ডেনের একটি উদ্ভিদের নাম ‘ডেনড্রোবিয়াম শেখ হাসিনা’। এটা আসলে আর কিছুই নয়; এটি একটি অর্কিডের নাম। যা নিয়ে আজ সুবিন্যস্ত আলোচনার সুযোগ রয়েছে।
একবিংশ শতাব্দীর মাঝে দাঁড়িয়ে আমরা। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ১৫ শতাংশ। ছাড়িয়ে যাবে আরও। মাথাপিছু আয় ৯০৯ ডলার। অর্থাৎ মধ্যম আয়ের দেশ বাংলাদেশ। যেখানে আমাদের খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা- এই ৫টি মৌলিক চাহিদার অনেকটাই প্রায় পূরণ হয়েছে। এখন সময় হয়েছে দৈহিক নয়, মনের ক্ষুধা নিবারণের। নজর এখন ঘর সাজানোর দিকে। প্রথম পছন্দ ফুল। আর সেটা যদি অর্কিড হয় তাহলে তো কথাই নেই। সমস্ত বিশ্বেই অর্কিড চাষ হয়। এর মধ্যে সিংহভাগ দখল করে আছে থাইল্যান্ড। স্বাভাবিকভাবে থাইল্যান্ডকে অর্কিডের রানি বলা হয়। বিশ্বব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকেই অর্কিডের অস্তিত্ব ছিল। প্রায় ২ কোটি বছর আগের এক মৌমাছির ফসিলে বিশেষ প্রজাতির অর্কিডের রেণু পাওয়া গিয়েছিল, যা প্রমাণ করে প্রাগৈতিহাসিক সময়েও পৃথিবীতে অর্কিডের অস্তিত্ব বিদ্যমান ছিল। সেই থেকে মৌমাছি জাতীয় প্রাণী অর্কিড ফুলের রেণু বহন করে এর বংশ বিস্তারে ভূমিকা পালন করে আসছে। এমনকি বিজ্ঞানীরা অর্কিডের জিন নিয়ে গবেষণায় নিশ্চিত হয়েছেন, ডাইনোসর যুগেও অর্কিড ছিল। সেই অর্কিড আজ সুশোভিত বৈঠকখানা ও অন্দরমহলে সুসজ্জার অঙ্গ হয়ে উঠেছে। গহীন জঙ্গলের অর্কিড আজ বহুল ব্যবহৃত দামি পণ্য।
অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি আমাদের এই দেশ; বাংলাদেশ। প্রকৃতির নৈসর্গিক রূপ-লাবণ্য আরও সমৃদ্ধ হয়েছে কত নাম জানা-অজানা ফুল গাছে। এদের মধ্যে নক্ষত্রর মতো ভাস্বর অর্কিড। কৃষি বিভাগের পরিসংখ্যানে বাংলাদেশের প্রায় ১৭৮ প্রজাতির অর্কিড জন্মে। তবে পৃথিবীতে এর ব্যাপকতা, প্রসারতা ও প্রাচুর্যতা বলে শেষ করা যাবে না। কারণ এর অভিযোজন ক্ষমতা অসীম। মেরু এলাকা হতে মরু এলাকায় এর বিচরণ। তবে অর্কিড মূলত গ্রীষ্মমণ্ডলীয় গাছ। আবার মাটি, বায়ু, পাথর সব জায়গায় এরা জন্মাতে পারে। অস্ট্রেলিয়ায় দুটি প্রজাতির অর্কিড আছে; যারা মাটির নিচে জন্মে এবং মাটির নিচেই এদের বসবাস- আবার ফুলও ফোটে সেখানেই। অতি যত্নে ঘরে এদের যেমন চাষ করা যায় তেমনি আবার অনাদরে জন্মে বন বাদাড়ে, পথে-প্রান্তরে। সারাবিশ্বে অর্কিডের কদরের কথা বলে শেষ করা যাবে না। কারণ বেশিরভাগ অর্কিড ফুলই অনিন্দ্য সুন্দর। তবে গন্ধহীন। সৌন্দর্য বিচারে অর্কিডকে উদ্ভিদ রাজ্যের মুকুট পরিয়ে দেওয়া যায়। প্রজাতিভেদে গাছে ফুটন্ত অবস্থায় অর্কিড ফুল মাস পর্যন্ত শোভা ছড়াতে পারে। ফুলদানিতে তাজা রাখা যায় কয়েক সপ্তাহ। আর ফুলদানির পানিতে সুক্রোজ বা চিনি মিশালে ওদের কাট ফ্লাওয়ার হিসেবে জীবনকাল আরও বেড়ে যায়। নান্দনিক আঙিনায় অর্কিড বিন্যাশে সৌন্দর্যপ্রেমীরা বিমোহিত হতে পারেন। ব্যবহার করে অর্নামেন্টাল প্ল্যান্ট হিসেবে। এছাড়াও অর্কিডের রয়েছে খাদ্যগুণ, ঔষধিগুণ, ভেষজগুণ আর প্রতিকূল পরিবেশে টিকে থাকার বিরল ক্ষমতা।
অর্কিড একবীজ পত্রী সপুষ্পক উদ্ভিদ। সারাবিশ্বে প্রায় ৮০০ গণ এবং ৩৫ হাজারেরও বেশি প্রজাতির অর্কিড আছে। অর্থাৎ সপুষ্পক উদ্ভিদের মধ্যে অর্কিড সর্ববৃহৎ পরিবারভুক্ত। প্রাচীন চীনা গ্রন্থে ৩ হাজার বছর আগে প্রথম অর্কিডকে ঔষধি উদ্ভিদ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। উদ্ভিদবিজ্ঞানের জনক ‘থিওফ্রাস্টাস’-এ উদ্ভিদের নামকরণ করেন অর্কিড। অর্কিড শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘অর্কিস’ থেকে নেওয়া। যার অর্থ অণ্ডকোষ। ইউরোপীয় অনেক স্থলজ অর্কিডের গোড়ায় অণ্ডকোষ সদৃশ দুটি গঠন দেখা যায় বলেই এমন নামকরণ। বর্তমানে অর্কিডের ওই দুটি বিশেষ গঠনকে টিউবার বলা হয়। এক সময়ে অর্কিডের মূল অংশের টিউবার নিয়ে ভ্রান্ত ধারণা ছিল। অনেকেই বিশ্বাস করতেন, পুরুষের অণ্ডকোষ সদৃশ হওয়ায় এগুলোতে পুরুষত্ববর্ধক ও উদ্দীপক জাতীয় কিছু উপাদান রয়েছে। তাই পুরুষত্ববর্ধক হিসেবে ওই সমাজে অর্কিডের চাহিদাও ছিল খুব বেশি। আবার অনেকে বিশ্বাস করতেন, প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী ‘ভেনাস’ অর্কিডের ওই বিশেষ গঠনের প্রতি খুবই আসক্ত। পুরাণে আছে- এটি দেবীকে কামোদ্দীপ্ত করত। তাই যারা ওই টিউবারকে ভালোবেসে ভক্ষণ করেন, দেবী তুষ্ট হয়ে তাদের পুত্রসন্তান দিয়ে থাকেন। তাই অনেকেই পুত্রসন্তান লাভের বাসনায় অর্কিডের টিউবার খেতেন।
অধিকাংশ অর্কিড বহুবর্ষজীবী হার্ব বা বিরুৎ জাতীয় উদ্ভিদ। তবে অর্কিডের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে যেমন- এরা ভ‚মিজ, পরাশ্রয়ী, মৃতজীবীও হতে পারে। এদের মূল ফ্লেসি বা রাইজোমেটাস। মূলে ভ্যালামেন টিস্যু থাকে। এ টিস্যুর সাহায্যে বাতাস থেকে পানি শোষণ করে বেঁচে থাকে। ফুলের উপরাংশ নিচের দিক হয়ে থাকে। এর ফুলে ৩টি বৃতি ও ৩টি পাপড়ি থাকে। একটি পাপড়ি বড় ও বিভিন্ন আকৃতির হয়ে থাকে। বর্ণ ও বৈচিত্র্যে ফুলগুলো খুবই আকর্ষণীয়। অর্কিডের আকার যেমন পরিমাপ করা যায় সেন্টিমিটারে, আবার লম্বা হয় ৩-৪ মিটার পর্যন্ত। ফুলের আকার হতে পারে পিনের মাথার সমান, কখনও আবার ১ ফুট।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অর্কিড চাষের জন্য খুবই উপযোগী। দেশের প্রায় সব অঞ্চলেই অর্কিড জন্মে। তবে চাষের জন্য উত্তম হলো সিলেটের জাফলং, জয়ন্তিকা, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙ্গু ও উখিয়া এবং বান্দরবানের গভীর জঙ্গল। বাংলাদেশে জন্মানো অর্কিডের মধ্যে উল্লেখযোগ্যÑ রাস্না, ব্যাম্বু, ভান্দার তেরেসা, অনসিডিয়াম, ভ্যান্ডা, ক্যাটোলিয়া, ডেনড্রোবিয়াম, মোকারা, এরিডিস, ফেলেনপসিস এশিয়া, ইত্যাদি। এদের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে জন্মানো সবচেয়ে বড় ফুল হলো ঘন লাল রঙের ভান্দার তেরেসা।
এদের মধ্যে অনেক অর্কিড রয়েছে যেগুলোর ফুল অসুন্দর, তবে আমাদের দেশের আবহাওয়ায় জন্মানোর উপযোগী। বিশ্বব্যাপী অর্কিডের উত্তরোত্তর চাহিদার দিকে দৃষ্টি রেখে সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুলের সাথে স্থানীয় অর্কিডের সাথে সংকর করে উৎপন্ন করা হচ্ছে হাইব্রিড অর্কিড। এখানে বলে রাখা ভালো যে প্রতি একক আয়তনে উৎপন্ন লাভজনক উদ্ভিদের মধ্যে অর্কিডই প্রথম স্থানের অধিকারী। অর্কিডের সবচেয়ে বড় গুণ কষ্টসহিষ্ণু ও অতি অল্প পরিশ্রমেই চাষ করা যায়। তবে সংকরায়ণের সময় সাহায্য নিতে হয় কৃষিবিদদের। আর এজন্যই বাজারে আসছে নিত্যনতুন অর্কিড। সাধারণত বীজের মাধ্যমে অর্কিডের চারা জন্মায় না। কারণ বীজ এত ছোট থাকে যে চারা গজানোর জন্য পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করতে পারে না। তাই ভরসা করতে হয় টিস্যু কালচার বা অংগজ প্রজননের ওপর। সাধারণত নার্সারিতে টিউবে চারা রোপণ করা হয়। তা পরে অতি যত্ন সহকারে ঝামা ইটের টুকরাসহ; কখনও কাঠ কয়লার টুকরার টবে চারা স্থানান্তর করা হয়। প্রথমদিকে চারাকে তীব্র রোদ হতে রক্ষা করা হয়। এরপর চারা আর একটু বড় হলে আরও বড় টবে বা মাটির বেডে লাগানো হয়। টবের মাধ্যম হতে পারে কাঠের পচা খণ্ড, নারিকেলের খোসার ছোবরা পচা, হাড়ের গুঁড়া, ঝামা ইট, পলিইস্টারিন আঁশ ইত্যাদি। খাদ্য হিসেবে দেওয়া হয় জৈব, অজৈব এবং রাসায়নিক সার। প্রকট রোদে রাখা যায় না। আবহাওয়া ও মৌসুমের ওপর ভিত্তি করে ঝরনার মাধ্যমে পানি দিতে হয়। চারা গজানো হতে ফুল ফোটার আগ পর্যন্ত করতে হবে অন্তর্বর্তীকালীন পরিচর্যা। খেয়াল রাখতে হবে ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহারের আগে অবশ্যই জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। টব, কন্দ, শিকড় সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ১০-১৫ দিন পরপর পেস্টিসাইড, ইনসেক্টিসাইড প্রয়োজনে নেমাটোসইড নির্ধারিত ডোজে স্প্রে করতে হবে। আঁশ পোকা ও মাকড়সার উপদ্রব হলে সাবান পানি ছিটাতে হবে। ইঁদুরের উপদ্রব হলে ব্যবহার করতে হবে বিষটোপ।
প্রায় সারাবছরই অর্কিডের ফুল ফোটে। তবে দেশীয় অর্কিড মার্চ-মে মাসে সর্বাধিক ফোটে। কোনো কোনো অর্কিড বছরে একবার; আবার কোনো অর্কিড দু-তিনবারও ফুল দিয়ে থাকে। সাধারণত খুব সকালে অথবা বিকেলে ফুলের নিচের কুঁড়ি দু-একটা ফোটামাত্রই কাটা উচিত। ফুলের স্থায়িত্বকাল বাড়ানোর জন্য ২-৩ শতাংশ সুক্রোজ ব্যবহার খুবই কার্যকরী। বৃষ্টির সময় অথবা ভেজা অবস্থায় ফুল কাটা উচিত নয়। ফুল সংগ্রহের পরপরই এর ডাঁটার গোড়া পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে। এরপরের কাজগুলো খুব দ্রুততার সাথে করতে হবে। যেমন- মোড়কজাত করা এবং গন্তব্য স্থানে পাঠানো।
অর্কিডের ব্যবহার নানাবিধ। সৌন্দর্যপ্রেমীরা বাসাবাড়ি, অফিস, ব্যালকনি, ছাদ এমনকি খাদ্যকে আকর্ষণীয় করতে অর্কিড ব্যবহার করে। শত শত বছর আগে হতেই অর্কিড খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ভ্যানিলা নামক অর্কিডের বীজের ফ্লেভার বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য সুগন্ধ করতে ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া কেমোথেরাপি দেওয়া রোগীদের খাদ্য গ্রহণ বৃদ্ধি করতে এবং অবসাদ দূর করতে, বমি বমি ভাব থেকে মুক্তি পেতেও এটি ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া আলজেইমার রোগ শনাক্তকরণে ভ্যানিলা ব্যবহার করা যায়। কারণ এ রোগে আক্রান্ত রোগী ভ্যানিলার গন্ধ সহ্য করতে পারে না। হালকা পানীয় ক্যানে অর্কিডের ফুল চিত্রাকর্ষক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাণিজ্যিকভাবে সস তৈরিতে ডেনড্রোবিয়াম নামক অর্কিড ব্যবহার করা হয়। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে Dendrobium, Speciosum, Gastrodia, Sesamoides এবং Caladenia প্রজাতির অর্কিডকে অস্ট্রেলিয়ার অনেক উপজাতি আপদকালীন প্রতিরক্ষায় খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করে। অনেক অর্কিড উষ্ণ চায়ের সঙ্গে পান করা হয় প্রধানত অসুস্থতার পর বা যৌনমিলনের পর। নেপালে Dendrobium chrysotoxum-সহ কিছু প্রজাতির অর্কিড ফুলসমূহ শুকিয়ে চায়ের সঙ্গে খাওয়া হয় সুস্বাস্থ্যের আশায়। নেপালের তামিল অধ্যুষিত এলাকায় Dendrobium longicornu অর্কিডের ফুল দিয়ে উপাদেয় আচার বানানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যে বিশেষ করে টার্কিতে স্থলজ অর্কিডের টিউবার থেকে ‘সাহলেপ’ নামক আইসক্রিম ও পানীয় প্রস্তুত করা হয়।
ফ্লোরিকালচার হিসেবেই অর্কিডের চাহিদা বিশ্বব্যাপী। আর এ চাহিদা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। এটা এখন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এক উল্লেখযোগ্য পণ্য। অর্কিড রপ্তানি করে হাজার হাজার কোটি ডলার আয় করা সম্ভব।

পৃথিবীর অনেক দেশেই এখন বাণিজ্যিকভাবে অর্কিড ফুল উৎপাদিত হয়। বাংলাদেশেও এ প্রক্রিয়া হচ্ছে। ১৯৮৩ সালে যশোরের ঝিকরগাছায় প্রথম ফুলের বাণিজ্যিক চাষ শুরু হয়েছিল। বর্তমানে এর ব্যাপ্তি প্রায় সারা বাংলাদেশে। তবে একসময় অর্কিড ফুল আমাদের দেশে আসত বিদেশ থেকে। এখনও আসছে। তবে এর হতে পরিত্রাণ পাওয়ার জন্য এগিয়ে এসেছে দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন। যেমন- বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, কৃষিবিদ অর্কিড, ক্যাকটাস অর্কিড, ব্র্যাক, প্রশিকা, স্কোয়ার, কিংশুক নার্সারি, দীপ্ত অর্কিড লিমিটেড, মাইক্রো অর্কিড লিমিটেড ইত্যাদি প্রতিষ্ঠান। যেখানে দেশি-বিদেশি অর্কিড চাষ হচ্ছে। যা বিদেশে রপ্তানিযোগ্য। রপ্তানি হচ্ছেও। চলমান প্রক্রিয়া ধাববান রাখতে এগিয়ে এসেছে আমাদের কৃষিবান্ধব সরকার। ফুল চাষের সম্ভাবনাকে বিবেচনায় রেখে ফুল চাষের এলাকা হিসেবে সাভার, যশোর, সাতক্ষীর, চট্টগ্রামের পটিয়া, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারীসহ বিভিন্ন এলাকায় ফুল চাষ ও বিপণনে সহজ শর্তে ব্যাংক প্রয়োজনীয় আর্থিক সহযোগিতা করছে। তাছাড়া শুধু অর্কিডের ক্ষেত্রে ব্যাপক রপ্তানির সম্ভাবনা থাকায় ঋণদানে কৃষি ব্যাংক এগিয়ে এসেছে। বিগত বছরে বাংলাদেশের জিডিপি’তে কৃষি খাতের অবদান ছিল ১৪.৩২ শতাংশ। অর্কিডের চাষাবাদ যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে সেভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও একধাপ এগিয়ে যাবে। কর্মসংস্থানের জোগান হবে। বেকার সমস্যার সমাধান হবে। তবে শুধু ঋণদান নয়। বন্ধ করতে হবে পাহাড়ে অপরিকল্পিত জুম চাষ, পরিবেশ দূষণ। দৃষ্টি দিতে হবে প্যাকেজিং ব্যবস্থার উন্নয়ন, হিমাগার স্থাপন, নতুন জাতের অর্কিডের উদ্ভাবনের দিকে।
আমাদের দেশে অর্কিডের চাষ এবং এর রপ্তানির অপার সম্ভাবনা রয়েছে। সরকারও এ-ব্যাপারে এগিয়ে আসছে। তৃণমূলের কৃষকরাও এর সুফল পাচ্ছে। ফলে অচিরেই বিশ্বের অর্কিডের রাজ্যে বাংলাদেশ হবে এক উল্লেখযোগ্য নাম।
লেখক : শিক্ষক; পিএইচডি গবেষক, প্ল্যান্ট প্যাথলজি
শেরে বাংলা কৃষি ইউনিভার্সিটি
raziasultana.sau52@gmail.com