মুক্তিযুদ্ধের আগে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থাকতেন সাঈদী। সংসার চালানোর জন্য পাড়েরহাটে তার একটি ছোট মুদি দোকান থাকলেও তিনি মূলত তাবিজ বিক্রি করতেন।
উত্তরণ ডেস্ক : ২০১৩ সালের ১ মার্চ দৈনিক সমকাল-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয় : মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামাতের নায়েবে আমির দেলোয়ার হোসেন শিকদার ওরফে ‘দেলু’ ওরফে ‘দেইল্লা রাজাকার’ ওরফে ‘সাঈদী’ স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে ছিলেন মুদি দোকানি ও তাবিজ বিক্রেতা। একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পিরোজপুরের পাড়েরহাটে ক্যাম্প স্থাপন করে এবং তাদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে তিনি হয়ে যান প্রথমে শান্তি কমিটির সদস্য ও পরে রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার। মুক্তিযুদ্ধকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ‘দেলু’ ওরফে ‘দেইল্লা রাজাকার’।
দেশ স্বাধীন হলে দীর্ঘদিন পালিয়ে থাকার পর তিনি আবির্ভূত হন ‘আল্লামা মাওলানা’ পরিচয়ে। ওয়াজ করে বেড়ান দেশ-বিদেশে। কালক্রমে হলেন যুদ্ধাপরাধীদের নেতৃত্বদানকারী দল জামাতের নায়েবে আমির। এভাবেই বাবা-মায়ের দেওয়া দেলোয়ার হোসেন শিকদার ওরফে ‘দেলু’ ওরফে ‘দেইল্লা রাজাকার’ হয়ে গেলেন দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী।
কে এই সাঈদী
বর্তমানে জামাতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুর জেলার তৎকালীন ইন্দুরকানীর (বর্তমানে জিয়ানগর উপজেলা) সাউথখালী গ্রামে ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মৃত ইউসুফ আলী শিকদার। তার প্রকৃত নাম দেলোয়ার হোসেন শিকদার। মুক্তিযুদ্ধের আগে তিনি দেলু বা দেইল্লা নামে পরিচিত ছিলেন। জামাতের ছাত্র-রাজনীতি করার কারণে সাঈদী ছারছীনা মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কৃত হন। পরে বারইপাড়া মাদ্রাসা থেকে তৃতীয় বিভাগে আলিম পাস করেন। এরপর উচ্চতর ডিগ্রি না নিলেও নামের সঙ্গে আল্লামা টাইটেল ব্যবহার করেন।
মুক্তিযুদ্ধের আগে শ্বশুরবাড়িতে ঘরজামাই থাকতেন সাঈদী। সংসার চালানোর জন্য পাড়েরহাটে তার একটি ছোট মুদি দোকান থাকলেও তিনি মূলত তাবিজ বিক্রি করতেন।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া সাক্ষীদের জবানবন্দিতে এসেছে, সাঈদী ছিলেন আরবি ও উর্দু ভাষায় পারদর্শী এবং বাকপটু। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরপরই তিনি শান্তি কমিটির সদস্য হন। পরে এটাকে ব্যবহার করে মূলত তিনি একাত্তরে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন এজাজের সঙ্গে সখ্য গড়ে তোলেন এবং রাজাকার বাহিনীর কমান্ডার হতে সক্ষম হন। তার নেতৃত্বে ও তার সহযোগিতায় পিরোজপুরের পাড়েরহাট বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় পাকিস্তান সেনাবাহিনী এবং রাজাকার বাহিনী হত্যাযজ্ঞ, অগ্নিসংযোগ, লুট, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত করে।
সাঈদীর বিরুদ্ধে ২০ যুদ্ধাপরাধ
জামাতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে গঠন করা অভিযোগ, ৮৮ পৃষ্ঠার সূচনা বক্তব্য এবং ৭৭ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় অগণিত স্বাধীনতাকামী নিরস্ত্র ব্যক্তিকে হত্যা বা হত্যায় সহযোগিতা, ৯ জনেরও বেশি নারীকে ধর্ষণ, বিভিন্ন বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট, ভাঙচুর এবং ১০০ থেকে ১৫০ জন হিন্দুকে ধর্মান্তরে বাধ্য করার ২০টি ঘটনার অভিযোগ আনা হয়েছে।
প্রথম অভিযোগ : একাত্তরের ৪ মে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর নেতৃত্বাধীন দলের সদস্যরা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে খবর দিয়ে পিরোজপুর সদর এলাকার মধ্য মাসিমপুর বাসস্ট্যান্ডের পেছনে নিয়ে যান। সেখানে পরিকল্পিতভাবে আগে থেকে জড়ো করা ২০ জন নিরস্ত্র মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
দ্বিতীয় অভিযোগ : ৪ মে সাঈদী ও তার দল পাকিস্তানি বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে মাসিমপুর হিন্দুপাড়ায় যান। সেখানে হিন্দু বাড়িগুলোয় লুট করেন এবং আগুন ধরিয়ে দেন। মানুষ পালাতে শুরু করলে সাঈদী ও তার দলের সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করলে ১৩ জন শহিদ হন।
তৃতীয় অভিযোগ : ৪ মে সাঈদী পাকিস্তানি বাহিনীকে নিয়ে মাসিমপুর হিন্দুপাড়ায় মনীন্দ্রনাথ মিস্ত্রী ও সুরেশ চন্দ্র মণ্ডলের বাড়ি লুট এবং আগুন ধরিয়ে দেন। সাঈদী নিজে বিভিন্ন গ্রামের রাস্তার পাশের অসংখ্য বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন।
চতুর্থ অভিযোগ : ৪ মে সাঈদী তার রাজাকার বাহিনী ও পাকিস্তানি বাহিনীকে নিয়ে ধোপাবাড়ির সামনে এবং পিরোজপুর সদর পুলিশ স্টেশনের এলজিইডি ভবনের পেছনের হিন্দুপাড়া ঘিরে ফেলেন। এ সময় গুলি চালানো হলে দেবেন্দ্রনাথ মণ্ডল, জগেন্দ্রনাথ মণ্ডল, পুলিন বিহারী ও মুকুন্দ বালা মারা যান।
পঞ্চম অভিযোগ : তৎকালীন পিরোজপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট সাইফ মিজানুর রহমান সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করেন। সাঈদী ও তার সহযোগী শান্তি কমিটির সদস্য মন্নাফ কয়েকজন পাকিস্তানি সেনাসদস্য নিয়ে ৫ মে পিরোজপুর হাসপাতাল থেকে তাকে ধরে বলেশ্বর নদের তীরে নিয়ে যান। একইদিন পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ (লেখক হুমায়ূন আহমেদ ও মুহম্মদ জাফর ইকবালের বাবা) এবং ভারপ্রাপ্ত এসডিও আবদুর রাজ্জাককেও কর্মস্থল থেকে ধরা হয়। সাঈদীর উপস্থিতিতে এ তিন সরকারি কর্মকর্তাকে গুলি করে লাশ বলেশ্বর নদে ফেলে দেওয়া হয়।
ষষ্ঠ অভিযোগ : ৭ মে সাঈদীর নেতৃত্বে শান্তি কমিটির একটি দল হানাদার বাহিনী নিয়ে পাড়েরহাট বাজারের আওয়ামী লীগ, হিন্দু সম্প্রদায় এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের মানুষের বাড়িঘর ও দোকান চিনিয়ে দেন। এসব দোকান ও বাড়িতে লুটপাট করা হয়। এ সময় তারা মাখন লাল সাহার দোকান থেকে ২২ সের স্বর্ণ লুট করে।
সপ্তম অভিযোগ : ৮ মে দুপুর দেড়টার দিকে সাঈদী পাকিস্তানি সেনাদের নেতৃত্ব দিয়ে বাদুরিয়া গ্রামের নুরুল ইসলাম খানের ছেলে শহীদুল ইসলাম সেলিমের বাড়িতে নিয়ে যান। সেখানে নুরুল ইসলাম খানকে আওয়ামী লীগার ও শহীদুল ইসলামকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে চিহ্নিত করেন এবং পাকিস্তানি সেনাদের হাতে সোপর্দ করেন। পরে তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
অষ্টম অভিযোগ : ৮ মে দুপুর ৩টার দিকে সাঈদী ও তার দলের সদস্যরা চিথোলিয়া গ্রামের মানিক পসারির গ্রাম লুট করেন। এখানে ৫টি ঘরে কেরোসিন দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। মানিক পসারির ভাই মফিজুদ্দিন ও ইব্রাহিম কুট্টিকে ধরে সেনাক্যাম্পে ফিরে যাওয়ার সময় সাঈদীর প্ররোচনায় পাকিস্তানি সেনারা ইব্রাহিম কুট্টিকে হত্যা করে। মফিজকে সেনাক্যাম্পে নির্যাতন করা হয়।
নবম অভিযোগ : ২ জুন সকাল ৯টার দিকে সাঈদী ও তার সশস্ত্র সহযোগীরা ইন্দুরকানি পুলিশ স্টেশনের নলবুনিয়া গ্রামের আবদুল হালিম বাবুলের বাড়িতে লুটপাট করে মূল্যবান জিনিসপত্র লুট এবং আগুন ধরিয়ে দেন।
দশম অভিযোগ : ২ জুন সকাল ১০টার দিকে সাঈদীর নেতৃত্বে সশস্ত্র দল উমেদপুর গ্রামের হিন্দুপাড়ার ২৫টি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। সাঈদীর ইন্ধনে বিসাবালী নামের একজনকে নারিকেল গাছের সঙ্গে বেঁধে গুলি করে হত্যা করা হয়।
একাদশ অভিযোগ : ২ জুন সাঈদী টেংরাখালী গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মাহাবুবুল আলম হাওলাদারের বাড়িতে পাকিস্তানি সেনাদের নিয়ে যান। সেখানে তার বড় ভাই আবদুল মজিদ হাওলাদারকে ধরে নির্যাতন করা হয়। এরপর সাঈদী টাকা ও মূল্যবান জিনিস লুট করেন। পরে বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
দ্বাদশ অভিযোগ : সাঈদীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের একটি সশস্ত্র দল পাড়েরহাট বাজারের ১৪ জন হিন্দুকে ধরে দড়ি দিয়ে বেঁধে পাকিস্তানি সেনাদের কাছে নিয়ে যায়। পরে তাদের গুলি করে লাশ নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
ত্রয়োদশ অভিযোগ : মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার দু-তিন মাস পর সাঈদীর নেতৃত্বে পাকিস্তানি সেনারা নলবুনিয়া গ্রামের আজহার আলীর বাড়িতে যায়। সেখানে আজহার আলী ও তার ছেলে সাহেব আলীকে ধরে নির্যাতন করা হয়। সাহেব আলীকে পিরোজপুরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
চতুর্দশ অভিযোগ : মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ৫০-৬০ জনের একটি রাজাকার বাহিনী হোগলাবুনিয়ার হিন্দুপাড়ায় যায়। রাজাকারদের আগমন দেখে গ্রামের অধিকাংশ হিন্দু নারী পালিয়ে যান। কিন্তু মধুসূদন ঘরামীর স্ত্রী শেফালী ঘরামী ঘর থেকে বের হতে পারেননি। তখন সাঈদীর নেতৃত্বে রাজাকাররা তাকে ধর্ষণ করে। এর ফলে স্বাধীনতার পর তিনি একটি কন্যাসন্তান প্রসব করেন। এ নিয়ে গ্রামে বিভিন্ন কথা ওঠায় শেফালী ঘরামী দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যেতে বাধ্য হন। পরে এই হিন্দুপাড়ার ঘরে আগুন দেওয়া হয়।
পঞ্চদশ অভিযোগ : মুক্তিযুদ্ধের শেষদিকে সাঈদীর নেতৃত্বে ১৫-২০ জনের রাজাকার দল হোগলাবুনিয়া গ্রামের ১০ জন হিন্দু নাগরিককে ধরে। পাকিস্তানি সেনারা তাদের সবাইকে হত্যা করে লাশ নদীতে ফেলে দেয়।
ষোড়শ অভিযোগ : সাঈদীর নেতৃত্বে ১০-১২ জনের রাজাকার দল পাড়েরহাট বন্দরের গৌরাঙ্গ সাহার বাড়ি থেকে তার তিন বোন মহামায়া, অন্ন রানী ও কমলা রানীকে ধরে পাকিস্তানি সেনাক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখানে তিন দিন ধরে ধর্ষণ করে পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
সপ্তদশ অভিযোগ : সাঈদী ও তার নেতৃত্বের রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা পাড়েরহাটের বিপদ সাহার মেয়ে ভানু সাহাকে তার বাড়িতে আটকে নিয়মিত ধর্ষণ করেন। একসময় ভানু সাহা দেশ ত্যাগে বাধ্য হন। বর্তমানে তিনি ভারতে অবস্থান করছেন।
অষ্টাদশ অভিযোগ : ভাগীরথী পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে কাজ করতেন। সাঈদী একদিন খবর দেন, ভাগীরথী মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত নানা খবরাখবর দেন। পাকিস্তানি সেনারা তাকে হত্যা করে লাশ বলেশ্বর নদে ফেলে দেয়।
ঊনবিংশ অভিযোগ : সাঈদী প্রভাব খাটিয়ে পাড়েরহাটসহ অন্য গ্রামের ১০০-১৫০ জন হিন্দুকে ইসলাম ধর্মে রূপান্তর করেন। তাদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে বাধ্য করা হতো।
বিংশতম অভিযোগ : নভেম্বরের শেষদিকে সাঈদী খবর পান, সাধারণ মানুষ ভারতে পালিয়ে যাচ্ছে। তার নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল পরিকল্পিতভাবে ইন্দুরকানি গ্রামের তালুকদার বাড়িতে আক্রমণ চালায়। ৮৫ জন ব্যক্তিকে আটক করে তাদের কাছ থেকে মালপত্র কেড়ে নেওয়া হয়। ১০-১২ জন বাদ দিয়ে বাকিদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়।
ফাঁসি থেকে আমৃত্যু সাজা
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম অভিযুক্ত ব্যক্তি হিসেবে জামাতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাঈদীর বিচার শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ৩ অক্টোবর। বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল হত্যা, ধর্ষণ, লুটপাট, নির্যাতন ও ধর্মান্তরে বাধ্য করার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। ওই রায়ের পর দেশজুড়ে সহিংসতা চালায় জামাত ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মীরা। ওই সহিংসতায় প্রথম তিন দিনে নিহত হন অন্তত ৭০ জন। এছাড়া বহু গাড়ি, দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, মন্দির ও ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এরপর সাঈদী আপিল করলে ২০১৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারকের আপিল বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
তিন অপরাধে আমৃত্যু দণ্ড
আপিলের রায়ে ১০, ১৬ ও ১৯ নম্বর অভিযোগে হত্যা, নিপীড়ন, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও ধর্মান্তরে বাধ্য করায় সাঈদীকে ‘যাবজ্জীবন’ কারাদণ্ড দেওয়া হয়। যাবজ্জীবন বলতে ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় পর্যন্ত’ কারাবাস বোঝাবে বলে ব্যাখ্যা দেন আদালত। এছাড়া ৮ নম্বর অভিযোগের একাংশের জন্য সাঈদীকে ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৭ নম্বর অভিযোগে ১০ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেন আপিল বিভাগ। এর মধ্যে ৮ ও ১০ নম্বর অভিযোগে ইব্রাহিম কুট্টি ও বিসাবালীকে হত্যা এবং হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে আগুন দেওয়ার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সাঈদীর ফাঁসির রায় দিয়েছিলেন। তবে চূড়ান্ত বিচারে তা অগ্রাহ্য করা হয়।