০৫ অক্টোবর
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশু নির্যাতন বন্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়ে বলেছেন, তার সরকার শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে যে কোনো ধরনের শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। শিশুদের নিরাপত্তার ব্যবস্থাও আমরা নিচ্ছি। আমরা চাই, আমাদের শিশুরা নিরাপত্তা নিয়ে সুন্দরভাবে বাঁচবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। সেটাই আমাদের লক্ষ্য। শিশুদের আমরা এমনভাবে তৈরি করে যাব, এই বিশ্বকে এমনভাবে তৈরি করতে চাইÑ আমাদের শিশুরা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, চলতে পারে, উন্নত ও সুন্দর জীবন পেতে পারে, নিরাপদ জীবন পেতে পারে, আর শিক্ষাদীক্ষায় এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়। বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ ২০২০-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
০৭ অক্টোবর
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ প্রসঙ্গে বলেছেন, ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাকে হত্যার পর বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম সব জায়গা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল। জাতির পিতার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি প্রকাশ হওয়ার পর দেশ ও জাতি ইতিহাস বিকৃতির হাত থেকে কিছুটা রক্ষা পেয়েছে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র ব্রেইল সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু যেন তার নিজের জীবনের ঘটনাগুলো লিখে রাখেন, সেজন্য তার সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সব সময় উৎসাহ দিতেন।
১৬ অক্টোবর
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ়কণ্ঠে বলেছেন, বর্তমান সরকার খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে খাদ্য উৎপাদনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করেছে। কাজেই এদেশে আর কোনোদিন কেউ না খেয়ে থাকবে না। খাদ্য নিরাপত্তাটা যেন নিশ্চিত থাকে এবং প্রতিটি মানুষের ঘরে যেন খাবার পৌঁছায় সেজন্য হতদরিদ্রের মাঝে আমরা বিনে পয়সায় খাবার দিয়ে যাচ্ছি এবং এটা আমরা সব সময় অব্যাহত রাখব। একটি মানুষও যেন না খেয়ে কষ্ট না পায়। আর একটি মানুষও আর গৃহহীন থাকবে না। বিশ্ব খাদ্য দিবস ২০২০ উপলক্ষে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রত্যেকটি মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা পায় সেজন্য তাদের দোরগোড়ায় আমরা চিকিৎসাসেবা পৌঁছে দিচ্ছি।
২০ অক্টোবর
- গ্রামের রাস্তায় যাতে ভারী যানবাহন চলতে পারে, সেগুলো এখন থেকে সেভাবেই নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়াও অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দরগুলোতে রাতে ফ্লাইট ওঠানামার উপযোগী করতে পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করাসহ ভূগর্ভের পানির ব্যবহার কমাতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এসব নির্দেশনা দেন।
২২ অক্টোবর
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরাপদ সড়ক প্রতিষ্ঠায় ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদানে ঘুষ-দুর্নীতি প্রতিরোধ এবং চালকের মাদকাসক্ত হয়ে গাড়ি চালানো বন্ধে প্রয়োজনে চালকদের ডোপ টেস্ট করানোর ব্যবস্থা নিতে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে দুর্ঘটনা ঘটলেই আইন হাতে তুলে নেওয়ার মানসিকতা পরিহার এবং সবাইকে ট্রাফিক আইন মেনে চলার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেছেন তিনি। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২০ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী পথচারীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমরা শুধু ড্রাইভারদের কথা বলি, ড্রাইভারদের দোষ দেই। শুধু ড্রাইভারদের দোষ দিলে হবে না, পথচারীদেরও সচেতন থাকতে হবে। সেখানে সচেতনতার খুবই অভাব। আমরা মুখে খুব বলে টলে যাই, কিন্তু কাজের বেলা আমরা কি দেখি? পাশেই ফুটওভার ব্রিজ, রাস্তার মধ্যখান দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। একটা গাড়ি আসছে একটু হাত দেখিয়েই হাঁটা দিল।’ তিনি বলেন, এটা একটা যান্ত্রিক ব্যাপার। ব্রেক কষলেও সেটা থামতে কিন্তু কিছু সময় লাগে। হাত দেখালেই থেমে যেতে পারে না।
২৫ অক্টোবর
- সাংবাদিকতার নীতিমালা মেনে চলতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নৈতিকতা বিবর্জিত হলুদ সাংবাদিকতা করবেন না। নিরপেক্ষ, বাস্তবমুখী এবং দেশ ও জাতির প্রতি কর্তব্যবোধ থেকে সাংবাদিকতা করুন, সে-রকমই আমরা চাই। নীতিহীন সাংবাদিকতা কোনো দেশের কল্যাণ আনতে পারে না। আপনারা নিশ্চয়ই সেই দায়িত্বশীলতা নিয়ে, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষের কল্যাণের কথা চিন্তা করে কাজ করবেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, দুর্নীতির ক্ষেত্রে আমরা কোন্ দলের বিবেচনায় আনি না। দুর্নীতিবাজ যে দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
২৯ অক্টোবর - প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, অন্যের সহায়তা না নিয়ে আর্থ-সামাজিকভাবে স্বনির্ভরতা অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আরও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে নিতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছি। আমরা তো মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি কেন আমরা অন্যের কাছে হাত পেতে চলব, মাথা নিচু করে চলব? বিজয়ী জাতি সারাবিশ্বে বিজয়ীর বেশেই চলবে। পঁচাত্তরের পর আমরা সেই সম্ভাবনা এবং অধিকার হারিয়েছিলাম। কিন্তু সেটা আবার পুনরুদ্ধার করে জাতির পিতার যে স্বপ্ন, তার সেই স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলব। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২০ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতার আদর্শে বাংলাদেশকে গড়ে তোলার সংকল্পের কথা জানিয়ে দেশের উন্নয়ন ও শীতকালে সম্ভাব্য করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ওয়েব মোকাবেলায় সরকারের বিভিন্ন প্রস্তুতির কথা তুলে ধরেন।
৩১ অক্টোবর
- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে দেশ থেকে দারিদ্র্য বিমোচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। ‘মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষদের ঘর উপহার’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমরা সবাই যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি তবে দেশে কোনো দারিদ্র্য থাকবে না। সরকারের সিনিয়র সচিব ও সচিবরা গৃহহীন মানুষদের ঘর সরবরাহের এ উদ্যোগ নিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার ইতোমধ্যে দারিদ্র্যের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করেছে এবং আরও হ্রাস করতে চায়। আমরা ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তবে করোনাভাইরাসের কারণে এটি করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং থাকবে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষ অত্যন্ত সাহসী এবং তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানের কাছ থেকে তাদের স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছে। তিনি বলেন, আমরা বিজয়ী জাতি এবং বিজয়ী হয়েই বিশ্ব অঙ্গনে চলব। আমরা এই সম্মান অর্জন করেছি। প্রধানমন্ত্রী বিত্তবান লোকদের নিজ নিজ এলাকায় সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষে গৃহহীন মানুষদের বাড়িঘর সরবরাহের জন্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। আমরা মুজিববর্ষে দেশের প্রতিটি বাড়ি আলোকিত করার উদ্যোগ নেব, আমরা সেদিকে পরিকল্পনা নিয়েছি এবং সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমরা কাজও করছি। দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের সাফল্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি উল্লেখ করেন, সরকার এখন সবার পুষ্টি নিশ্চিতের লক্ষ্যে পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং মাছ, মাংস, দুধ, ডিম ও অন্যান্যের উৎপাদন বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে। তিনি এক ইঞ্চি জমিও ফেলে না রাখতে সবাইকে আহ্বান জানান।
গ্রন্থনা : আশরাফ সিদ্দিকী বিটু, সহ-সম্পাদক, উত্তরণ