Tuesday, June 6, 2023
spot_img
বাড়িউত্তরণ-২০২২দ্বাদশ বর্ষ, পঞ্চম সংখ্যা, এপ্রিল-২০২২টুঙ্গিপাড়া : হৃদয়ে পিতৃভূমি - লোকজ মেলা

টুঙ্গিপাড়া : হৃদয়ে পিতৃভূমি – লোকজ মেলা

শাহ্ সোহাগ ফকির

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মদিন উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়া শেখ মুজিবুর রহমান সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ছয় দিনব্যাপী শুরু হওয়া এই মেলার দৃষ্টিনন্দন স্টলগুলো তৈরি করা হয়েছে পরিবেশবান্ধব বাঁশ, কাঠ, ছন-সহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে। যা আবহমান বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য আঁচড় কেটেছে। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে মেলা শুরু হয়ে চলে রাত ১০টা পর্যন্ত। ৬৪ জেলা থেকে আগত এবং সরকারি-বেসরকারি মোট ১০০টি স্টল ছিল এই মেলায়। সে-সাথে সুলভ মূল্যে পছন্দের পণ্য কিনতে পারায় খুশি মেলায় আগতরা। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন এই মেলার সম্মিলিত আয়োজক।
গত ১৭ মার্চ জাতির পিতার সমাধি সৌধ কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত ‘টুঙ্গিপাড়া : হৃদয়ে পিতৃভূমি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে এই লোকজ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছয় দিনব্যাপী এই মেলায় বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধের ওপর বিভিন্ন চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়েছে, যা দেখে মুগ্ধ চলচ্চিত্রপ্রেমীরা। এই মেলায় বিভিন্ন স্টলে মৃৎশিল্প, নকশিকাঁথাসহ বিভিন্ন পণ্যে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে তুলে ধরা হয়েছে। তুলে ধরা হচ্ছে লোকজ গান, পুতুল নাচ, নাগরদোলাসহ গ্রামীণ সংস্কৃতি।
নিজস্ব পণ্য বিক্রি করতে পেরে মেলাতে সাড়া পেয়েছে উদ্যোক্তারা। তারা এই মেলায় অংশগ্রহণ করতে পেরে অনেক খুশি। এ ধরনের মেলার মাধ্যমে বাংলাদেশের হাজার বছরের লোকজ উপকরণকে বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে। নতুন প্রজন্ম মেলায় প্রদর্শিত বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী পণ্য সম্পর্কে জানতে ও দেখতে পেরেছে। এছাড়াও মেলার আর একটি আকর্ষণ ছিল লোকজ বাদ্যযন্ত্র। কারিগররা তাদের নিজের হাতের তৈরি বাদ্যযন্ত্র বিক্রি করেছে। মেলা উপভোগের পাশাপাশি ঢাকঢোল, একতারা, দোতারাসহ লোকজ বাদ্যযন্ত্রের সাথে তরুণ প্রজন্মকে পরিচিত করে দিয়েছে। অনেক তরুণই হাতের তৈরি শাড়ি, কাপড়, পাঞ্জাবি, মাটির জিনিসপত্র, বাঁশ ও পাটের তৈরি জিনিসপত্র, ঘোড়া-হাতি ইত্যাদির পসরা সাজিয়ে বসেছিল স্টলগুলোতে। সেগুলো এই লোকজ মেলায় ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানে অনেক ধরনের পণ্য ছিল, যা আগে কোনোদিন দেখেনি অনেক তরুণ। মেলায় বড়দের সাথে এসেছিল শিশুরা। তাদের মুখের বাঁশির শব্দ, হাতে রং-বেরঙের বেলুন ও খেলনা মেলায় যোগ পেয়েছে বাড়তি রূপ। নাগরদোলার বাহকই শিশুরা। মেলায় লোকজ উপকরণ প্রদর্শনীর সঙ্গে এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়েছে। এখানে এসে দর্শক মুগ্ধ। মুজিববর্ষ লোকজ মেলা এখন এ অঞ্চলের মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত লোকজ মেলায় হারিয়ে যাওয়া লোকসংস্কৃতি পুনরায় প্রাণ পেয়েছে।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য