২০০১ সালে আমরা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। খালেদা জিয়া এসে তা বন্ধ করে দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। তখন খালেদা জিয়ারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন না-কি পদ্মা সেতুর কাজ করতে পারবে না।
উত্তরণ প্রতিবেদন: মাদারীপুরের শিবচরে বিশাল জনসমুদ্রের সামনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজের জীবন দিয়ে হলেও আগামী প্রজন্মের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। প্রমত্তা পদ্মার বুকে দক্ষিণ জনপদের স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মাণে যারা বাধা দিয়েছিল, তাদের ‘উপযুক্ত জবাব’ দেয়া হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তাদের একটা জবাব আমরা দিয়েছি। তাদের একটা উপযুক্ত জবাব আমরা পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে দিতে পারলাম যে, বাংলাদেশও পারে। আর বাংলাদেশকে কেউ দাবায়ে রাখতে পারে না এবং ভবিষ্যতেও পারবে না।
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ বিরোধিতাকারী জ্ঞানী-গুণীদের পদ্মা সেতু দেখার আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালে আমরা পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলাম। খালেদা জিয়া এসে তা বন্ধ করে দেন। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করে। তখন খালেদা জিয়ারা বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ কোনোদিন না-কি পদ্মা সেতুর কাজ করতে পারবে না। আমি তাকে (খালেদা জিয়া) বলবÑ আসুন, দেখুন পদ্মা সেতু নির্মাণ হয়েছে কি না? অনেক জ্ঞানী-গুণী, অর্থনীতিবিদ, আমলারা বলেছেন, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু সম্ভব নয়। আজকে নিজেদের টাকায় কীভাবে করতে পারলাম?
গত ২৫ জুন মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ীর বাংলাবাজার ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ফেরিঘাট প্রান্তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় সভাপতির বক্তব্য রাখতে গিয়ে শত ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত ও বাধা মোকাবেলা করে জনগণের শক্তি, সাহস ও অনুপ্রেরণার কারণেই তার পক্ষে স্বপ্নের পদ্মা সেতু নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ, দেশের জনগণ আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন বলেই সম্ভব হয়েছে। সারাদেশের মানুষ পাশে দাঁড়িয়েছে। পদ্মা সেতু প্রমাণ করে জনগণের শক্তিই বড় শক্তি। আমি সেটাই বিশ্বাস করি।
আবেগজড়িত কণ্ঠে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাবা-মা, ভাই সব হারিয়ে পেয়েছি আপনাদের। আপনাদের পাশে আমি আছি, আপনাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, আপনাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমি যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে সব সময় প্রস্তুত। আমি আপনাদের প্রয়োজনে আমার নিজের জীবনটাও দেব। আরও উন্নত জীবন যেন আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা পায়, তার ব্যবস্থা আমি করব। আজকে আপনাদের কাছে এটাই আমার ওয়াদা।
দুপুর ১২টা ৫১ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী জনসভাস্থলে এসে পৌঁছে হাত নেড়ে জনসমুদ্রে থাকা লাখ লাখ মানুষকে শুভেচ্ছার জবাব দেন। এ সময় লাখ লাখ নেতাকর্মী করতালি ও সেøাগান দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। বক্তব্য শেষে আবেগে উদ্বেলিত প্রধানমন্ত্রী নিজেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ সেøাগান ধরলে জনসমুদ্রে থাকা মানুষের গগণবিদারী এই সেøাগানে গোটা এলাকা প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে আসার পর বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযাগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি এবং সংসদের চিফ হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন এমপি। এর আগে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, শাজাহান খান এমপি, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, শেখ হেলাল এমপি প্রমুখ। সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি ও প্রচার সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি।
বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুর অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার পর জনগণের ‘সাহস ও শক্তি নিয়েই’ সেতুর কাজ শুরু করেছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আলহামদুলিল্লাহ, আমরা সেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি, আর আপনাদের কষ্ট করতে হবে না। এই খরস্রোতা পদ্মা নদী পার হতে গিয়ে আর কাউকে সন্তান হারাতে হবে না, বাবা-মা, ভাই-বোনকে হারাতে হবে না। আজকে সেখানে আপনারা নির্বিঘেœ চলতে পারবেন। সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি।
দুর্নীতি নয়; বরং ড. মুহাম্মদ ইউনূসের তদবিরেই পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন থেকে বিশ্বব্যাংক সরে গিয়েছিল মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। দুর্নীতির সেই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, কে দুর্নীতি করেছে? এই সেতু আমাদের প্রাণের সেতু। যে সেতুর সঙ্গে আমার দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য জড়িত, সেই সেতু করতে যেয়ে কেন দুর্নীতি হবে?
জাতীয় সংসদে তখন তার ঘোষণা- ‘বাংলাদেশ বসে থাকবে না, আমরা নিজের টাকায় এই পদ্মা সেতু তৈরি করব’-এর উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেকে অনেকভাবে বিঘœ সৃষ্টির চেষ্টা করেছে এবং তাদের একটা ধারণা ছিল যে, বাংলাদেশ নিজের টাকায় এই সেতু নির্মাণ করতে পারবে না। কিন্তু তিনি জনগণের শক্তিতে আস্থা রেখেছিলেন। পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধের পর তার উদ্যোগে জনগণ ব্যাপকভাবে এগিয়ে আসে এবং তার মাঝেও শক্তি সঞ্চারিত করেছে বলেই আজকে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে। তিনি মহান সৃষ্টিকর্তার কাছেও এ জন্য শোকরিয়া জানান।
বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়ে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভবপর নয় বলে যারা নিরুৎসাহিত করেছিলেন, তাদের উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, আজকে কীভাবে করতে পারলাম? বাস্তবে আপনারা, এই দেশের জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছে, পাশে থেকেছেন। জনগণের শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তিÑ আমি সেটাই বিশ্বাস করি।
তার সরকারের আমলে দক্ষিণবঙ্গের ব্যাপক উন্নয়ন করার চিত্র তুলে ধরে বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের প্রত্যেকটা এলাকা এত দুর্গম ছিল, আজকে সেখানে রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজ করেছি বলেই সব জায়গায় যোগাযোগ স্থাপন হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে। এই এলাকার লোক যেন নির্বিঘেœ চলাচল করতে পারে, সে-জন্য পায়রা পর্যন্ত আমরা সেতু বানিয়ে দিয়েছি। এখন নিশ্চিন্তে মানুষ চলাফেরা করতে পারে।
স্বপ্নের পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনৈতিক কর্মকা-ে ব্যাপক গতি আসার সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে আমরা অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে। এখানেও বিশেষ অর্থনতিক অঞ্চল হবে, শিল্পাঞ্চল হবে, কর্মসংস্থান হবে, কল-কারখানা হবে, আমাদের ফসল উৎপাদন হবে। সেই ফসল আমরা প্রক্রিয়াজাত করতে পারব। দেশ-বিদেশে রপ্তানি করতে পারব। এখানে যে মাছ হবে, তা আমরা প্রক্রিয়াজাত করে দেশ-বিদেশে পাঠাতে পারব। বাংলাদেশের মানুষের দুঃখ ঘুচে যাবে, ভাগ্য পরিবর্তন হবে।
খাদ্যের চাহিদা পূরণে সবাইকে ফসল উৎপাদনের দিকে জোর দিতে এবং আগামী বর্ষাকালে এ অঞ্চলে বন্যা হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়ে বঙ্গবন্ধু-কন্যা বলেন, এখন থেকে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি, আপনারাও প্রস্তুতি নিতে থাকেন। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলার শক্তি বাংলাদেশ রাখে।
দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আজকের দিনটি ‘বিশেষ’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই শরীয়তপুরে যখন এসেছি, তখন কী ছিল? লঞ্চে করে এসেছি, লঞ্চ নষ্ট হয়ে গেছে। নৌকায় করে একেকটা এলাকায় গিয়েছি, মিটিং করেছি। আজকে সেই শরীয়তপুরে অবস্থা পাল্টে গেছে। কারণ, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে রাস্তাঘাট, পুল-ব্রিজের উন্নয়ন হয়েছে। মাদারীপুরেও একই অবস্থা ছিল। গোপালগঞ্জ যেতে ২২ ঘণ্টা সময় লাগত। প্রত্যেকটা এলাকা এত দুর্গম ছিল। রাস্তাঘাট করেছি বলেই যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে।
জাতির পিতাকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার যাত্রা যখন শুরু করলেন, মাত্র সাড়ে তিন বছর হাতে সময় পেয়েছিলেন। এই সময়ে ধ্বংসস্তূপের ওপর দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করেন। যখন দেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে তৃণমূল পর্যন্ত ক্ষমতা নিয়ে যান, দুর্ভাগ্য আমাদের জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হলো।
তিনি বলেন, ওই সময়ে রেহানা ও আমি বিদেশে ছিলাম। দেশে আসতে পারিনি। ১৯৮১ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভানেত্রী নির্বাচিত করে। শত বাধা পেরিয়ে আমি আপনাদের মাঝে আসি। আমার লক্ষ্য, জাতির পিতার সেই স্বপ্ন পূরণ করা। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা। দেশের মানুষের জন্য উন্নত জীবন নিশ্চিত করা। অনেক চড়াই-উতরাই পার হয়ে আজকে আমরা বাংলাদেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পেরেছি। আজকে বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আজকে আমরা বিনা পয়সায় বই দিচ্ছি। প্রতিটি এলাকায় স্কুল করে দিচ্ছি, কলেজ করে দিচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয় করে দিয়ে শিক্ষার দ্বার উন্মোচন করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়ে মানুষের ঘরের কাছে চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেছি।
গত ১৩ বছরে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন ও দেশের চেহারা বদলে দেয়ার চিত্র লাখো জনতার উদ্দেশ্যে তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার ওয়াদা ছিল প্রত্যেক ঘরে আলো জ্বলবে। আজকে বাংলাদেশের প্রত্যেক ঘরে ঘরে আমরা বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ। সবার হাতে মোবাইল ফোন। সবাই আজকে অনলাইনে কেনাবেচা করতে পারেন, সেই ব্যবস্থা আমরা করেছি। মানুষের জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। উন্নত জীবন যাতে সবাই পায়, সেই ব্যবস্থা আমরা করব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত রাখতে পেরেছি। এই একটা কারণে বাংলাদেশের জনগণ ভোট দিয়েছে। নির্বাচিত হয়েছি এবং এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কাজ করে যাচ্ছি। উপস্থিত জনগণকে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, এই বাংলাদেশের জনগণ, আপনারা আমাকে সমর্থন দিয়েছেন, পাশে দাঁড়িয়েছেন। জনগণের শক্তি সব থেকে বড় শক্তি। কী বলেন আপনারা? জনসমুদ্রে থেকে সবাই হাত তুলে ‘হ্যাঁ’ বলার পর প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের শক্তি বড় শক্তিÑ আমি সেটাই বিশ্বাস করেছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় করোনাভাইরাস এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি সকলকে টিকা গ্রহণের এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দেন। পাশাপাশি দেশের এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে- তা নিশ্চিত করারও আহ্বান জানান তিনি। সারাদেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে পদ্মা সেতু হয়েছে, এখানে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে, কল-কারখানা এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পসহ নানা শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। অন্তত ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন আমরা করতে পারব।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের শেষাংশে এই রৌদ্রোজ্জ্বল দিনে কষ্ট করে জনসভাস্থলে আসায় সকলকে এবং দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষমাণ থাকায় শুভেচ্ছা জানিয়ে কবির ভাষায় বলেন, ‘নিঃস্ব আমি, রিক্ত আমি, দেবার কিছুই নেই/আছে শুধু ভালবাসা দিয়ে গেলাম তাই।’ তিনি সকলের সুস্থতা ও মঙ্গল কামনা করে দেশকে যেন এভাবেই এগিয়ে নিয়ে যেতে পারেন, সে-জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনাও করেন।
জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু-কন্যা আপোস করেননি। সাহসের সঙ্গে এগিয়ে গেছেন, চক্রান্ত আর সব বাধাকে অতিক্রম করে তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, বাঙালি বীরের জাতি। নিজের নামে পদ্মা সেতু করতে দেননি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজকে নিজের নাম পদ্মার সঙ্গে যুক্ত করেননি। কিন্তু বাংলার জনগণ জানে, বাংলার জনগণের হৃদয়ে আজকে তিনি যে স্মৃতি, যে আবেগ, যে ভালোবাসা গেঁথে দিলেনÑ যতদিন এ পদ্মা সেতু থাকবে, যতদিন এখানে চন্দ্র-সূর্য উদয় হবে, ততদিন বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা আপনাদেরও স্মরণ করবে।
বিএনপির মুখে আজ শ্রাবণের আকাশের মেঘ জড়ো হয়েছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে সবাই খুশি, সবার মুখে আনন্দের হাসি, আর বিএনপির মুখে শ্রাবণের আকাশের মেঘ। এত ষড়যন্ত্র, এত কূটচাল- তারপরও শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু করে ফেললেন? তাই মির্জা ফখরুলদের মন খারাপ। বুকে বড় ব্যথা, জ্বালায় জ্বালায় মরছে তারা।
গোটা জাতি আপনাকে স্যালুট করে
সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, পদ্মা সেতু বঙ্গবন্ধু পরিবার ও বাঙালিদের প্রতি অপমানের প্রতিশোধ। গত ২৫ জুন মুন্সিগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে দেশের বৃহত্তম এ সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে এ-কথা বলেন তিনি।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে কাদের বলেন, গোটা জাতি আজ আপনাকে স্যালুট করে। সারাবিশ্বে আজ আপনি প্রশংসিত। গোটা জাতির প্রতিনিধি হিসেবে আপনি প্রমাণ করেছেন ‘ইয়েস উই ক্যান’। নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। ষড়যন্ত্রের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘কী দুঃসময়, কী চ্যালেঞ্জ, কী কঠিন সময়। সবকিছুকে অতিক্রম করে বঙ্গবন্ধু-কন্যা শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন আমরা বীরের জাতি।’
খরস্রোতা পদ্মায় নদীশাসনসহ সেতু নির্মাণের প্রকৌশলগত চ্যালেঞ্জের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আজ বারেবারে মনে পড়ে এই পদ্মাপাড়ে মাওয়া, লৌহজং, জাজিরা, শিবচরে ভাঙনের কথা। কাজ শুরু করাই ছিল অত্যন্ত চ্যালেঞ্জ। শেখ হাসিনা তিনি যদি না থাকতেন আমরা এই প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করতে পারতাম না।