চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পরিধি ও পরিসীমা এমন চাঞ্চল্যকরভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সূচিত করবে, যা কী না আগে থেকে ধারণা করা প্রায় অসম্ভব।
এম রাশিদুজ্জামান: বর্তমান সময়ের আলোচিত প্রতীতি হলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। ২০১৩ সালে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের সভাপতি ক্লাউস শোয়াব চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিসহ সকল শাখায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রভাব, চ্যালেঞ্জ ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার নানাবিধ তরিকা নিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব ৩টি বৃহৎ বিষয়ের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করবে। বিষয় ৩টি হলো- পদার্থবিজ্ঞান, ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং জীববিজ্ঞান। ৩টি বিষয়ই পরস্পরের সাথে সংযুক্ত। বিশ্বের শিল্পে ৩টি বৃহৎ বিপ্লব ঘটে যাওয়ার পর চতুর্থ যে বিপ্লব আসন্ন, তা সর্বক্ষেত্রে মানুষের সামাজিক জীবনে প্রভাব সৃষ্টি করবে। ইতোপূর্বে যেসব বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, তার প্রভাব সমাজে পড়েছে ধীরে ধীরে এবং এর প্রভাব মোকাবিলায় যথেষ্ট সময় পাওয়ায় প্রস্তুতি গ্রহণ সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু চতুর্থ শিল্প বিপ্লব এত দ্রুত প্রভাব তৈরি করবে যে তা মোকাবিলার যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে না। তাই পূর্ব থেকে বিশেষ প্রস্তুতি রাখতে হবে। এই বিপ্লব ত্বরান্বিত করতে যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি প্রভাব বিস্তার করবে, তা হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যাপক উন্নয়নের ফলে রাস্তায় চলবে চালকবিহীন গাড়ি, যে গাড়ি নিজেই প্রয়োজন অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ফলে ব্যাপক ডেটা এনালাইসিস করে খুব সহজে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সরকারকে রিপোর্ট দিতে পারবে, ফলে তাৎক্ষণিকভাবে সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে এডভান্স রোবোটিক্সের মাধ্যমে কৃষি থেকে খুচরা ব্যবসা পর্যন্ত পরিচালনার উপযোগ সৃষ্টি করবে, যা অনেক ক্ষেত্রে বেকারদের চাকরি প্রাপ্তিতে বিরূপ প্রভাব তৈরি করবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের স্বয়ংক্রিয়তার ফলে পুনরাবৃত্তিমূলক ও সূক্ষ্ম মনুষ্য শ্রমের দরকার হয় এমন কাজগুলো ইতোমধ্যে কতকগুলো স্বয়ংক্রিয় হয়ে গেছে। কম্পিউটিং সক্ষমতা যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে আশঙ্কা করা হচ্ছে- আজ হোক কাল হোক আইনজীবী, ফিন্যান্স এনালিস্ট, ডাক্তার, সাংবাদিক, হিসাবরক্ষক, বীমা অবলেখনকারী বা গ্রন্থাগারিকের মতো চাকরি আংশিক বা পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় হয়ে যাবে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো- আইওটি অর্থাৎ ইন্টারনেট অব থিংস। আইওটির প্রভাবে পুরো উৎপাদন থেকে শুরু করে ভোক্তা পর্যন্ত সকল ব্যবসাকে পরিবর্তন করে দেবে। কেননা এর মাধ্যমে সাপ্লাইচেইনের সব পর্যায়ে প্রোডাক্টকে ট্র্যাক করা যাচ্ছে। আইওটির প্রভাবে একটি স্মার্ট শহর বা একটি স্মার্ট বাড়ি গড়ে উঠবে, যেখানে দূর নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে শহরের ট্রাফিক কন্ট্রোল করা যাবে, এমন কী ঘরের লাইট, ফ্যান বা এসি সুইচ অন-অফ করা যাবে। আইওটির ফলে জোগান ও চাহিদাকে সহজে এবং কম খরচে ব্যবস্থাপনা করা যেতে পারে। যেমন উবারের মাধ্যমে রাইড শেয়ারিং।
ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থাপনার কথাও ইদানীং বেশ আলোচিত বিষয়। বর্তমান বিশ্ব বিবেচনায় অনেক দেশই ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থাপনায় এগিয়ে আসছে। অনেক ধরনের ডিজিটাল মুদ্রার কথাই বাজারে আলোচনা থাকলেও বিট কয়েনের কথাই বেশি আলোচিত। ব্লক চেইন এপ্লিকেশনকে কাজে লাগিয়ে বিট কয়েন ডিজিটাল মুদ্রা হিসেবে কাজ করছে। ব্লকচেইন হলো এমন নিরাপদ প্রটোকল, যেখানে কম্পিউটারের একটি নেটওয়ার্ক কোনো লেনদেন নিবন্ধিত ও অনুমোদিত হওয়ার আগে সম্মিলিতভাবে যাচাই করার কাজটি করে দেয়।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো- মানুষ কিছুটা যন্ত্র হবে এবং যন্ত্র কিছুটা মানুষের ন্যায় আচরণ করবে। মানুষের জিনগত বৈশিষ্ট্যের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হতে পারে। জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ে আগে যেখানে ১০ বছর সময়ে ২.৭ বিলিয়ন ডলার খরচ লেগেছিল, বিপরীতে বর্তমানে কয়েক ঘণ্টা সময়ে ১ হাজারেরও কম ডলার খরচ করে জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্ভব। জিনগত দুর্বলতা চিহ্নিত করে খুব সহজে নানা ধরনের কঠিন রোগসমূহ নিরাময় সম্ভব হবে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সামগ্রিক বৈশিষ্ট্যসমূহই বিশ্বের অর্থনীতি, প্রবৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা, মানুষের বার্ধক্য, কর্মসংস্থান, শ্রম প্রতিস্থাপন, লিঙ্গ বৈষম্যের মতো বিষয়গুলোর ওপর ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টির পাশাপাশি অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেবে বিশ্বের প্রতি। প্রভাবগুলো বুঝতে পারা এবং সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য কতটুকু সম্ভব হবে, তা বিবেচনার বিষয়। যেহেতু, শিল্প বিপ্লবের প্রাথমিক পর্যায়গুলো এখনও সেসব দেশে অনেক নাগরিকের কাছে পৌঁছতে পারেনি; যেমন- বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, কম্পিউটার, ইন্টারনেটসহ ইত্যাদি সুবিধাদি।
বাংলাদেশকে একটি নগর হিসেবে চিন্তা করেই ক্লাউস শোয়াব ঘোষিত চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের রেশ ধরে স্মার্ট নগরের ন্যায় স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে ২০ কোটির অধিক জনসংখ্যা বসবাস করবে। এই বিপুল জনসংখ্যার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, তাদের মধ্য থেকে সর্ব-উৎকৃষ্ট বের করে আনা এবং দক্ষতার বলে বিশ্বের সাথে কাঁধে কাঁধ রেখে এগিয়ে যাওয়ার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে হবে। কেননা যেসব দেশ এই নতুন ডিজিটাল অর্থনীতি অর্থাৎ ফিফথ জেনারেশনের ইন্টারনেট, বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন এবং রোবটকে ব্যবহার, ইন্টারনেট অব থিংস, ডিজিটাল স্বাস্থ্যসেবা এবং উৎপাদন ব্যবস্থার অটোমেশনকে গ্রহণ করবে, তারা নিঃসন্দেহে এগিয়ে যাবে।
স্মার্ট বাংলাদেশ বলতে এমন বৈশিষ্ট্য সংবলিত দেশ বুঝায়, যেখানে আইসিটি এবং আইওটি ব্যবহার করে এমন একটি নগরায়ণ সিস্টেম সংঘটিত হবে যে সম্পদ এবং সম্পত্তি সঠিক ও কার্যকরভাবে নাগরিকদের জন্য ব্যবহার করা হবে। বিভিন্নভাবে ব্যবহৃত মেকানিক্যাল ডিভাইস এবং নাগরিকদের কাছ থেকে সংগৃহীত ডেটা প্রসেস এবং এনালাইসিস করে নগরের সমস্ত যানবাহন, পরিবহন সিস্টেম, পাওয়ার প্লান্ট, পানি সরবরাহ, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি নাগরিকদের অনুকূলে অত্যন্ত সুচারুভাবে ব্যবহার করা হবে। একটি স্মার্ট সিস্টেম গড়ে তোলার উদ্দেশ্যই হলো পরিবেশের ক্ষতি না করে, খরচ কমিয়ে এনে নাগরিক সেবার মান বৃদ্ধি করা এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনকে আর্থ-সামাজিক এবং নগরের বাস্তুগত প্রতিবন্ধকতার সাথে খাপ খাইয়ে নেওয়া। স্মার্ট বাংলাদেশকে আমরা সাসটেইনেবল বাংলাদেশও বলতে পারি। বিশ্বের দিকে তাকালে কয়েকটি স্মার্ট সিটি যথা- সিঙ্গাপুর, বার্সেলোনা, সানফ্রান্সিসকো, লন্ডন, অসলো শহরগুলোর আদলে বাংলাদেশের নাগরিক সেবা ব্যবস্থাপনা সম্পন্ন করা হবে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পরিধি ও পরিসীমা এমন চাঞ্চল্যকরভাবে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন সূচিত করবে, যা কী না আগে থেকে ধারণা করা প্রায় অসম্ভব। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বৈশিষ্ট্য সংবলিত স্মার্ট দেশ গড়ার অন্যতম বড় প্রভাবটা হলো ক্ষমতায়ন। একটি দেশের সরকার কী রূপ পদ্ধতিতে তার নাগরিকদের সাথে, কীভাবে ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো তার কর্মী, শেয়ারহোল্ডার ও কাস্টমারদের সাথে, কীভাবে পরাশক্তিগুলো ছোট দেশগুলোর সাথে সংযোগ স্থাপন করে। এসব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কর্মকাণ্ড সুচারুভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন কুশীলবসমৃদ্ধ নেতৃত্ব।
বাংলাদেশের মতো একটি উন্নয়নশীল দেশকে উচ্চতর প্রযুক্তিনির্ভর বিশ্বের সাথে খাপ খাইয়ে চলা সত্যি অনেক বড় চ্যালেঞ্জ, যেহেতু ইতোপূর্বে সংঘটিত ৩টি শিল্প বিপ্লবের বৈশিষ্ট্যসমূহ বিশ্বের অনুন্নত দেশগুলোয় আশানুরূপ প্রভাব ফেলতে বা উৎকর্ষ সাধন করতে পারেনি। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমস্ত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দূরদর্শী রাজনৈতিক প্রতীতি যথা- ডিজিটাল বাংলাদেশ জনমনে ব্যাপকভাবে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’-এর মতো একটি রাজনৈতিক প্রতীতির বদৌলতে জনগণ একটু একটু করে এগিয়ে গেছে শিল্প বিপ্লবের নতুন ধাপের কাছাকাছি, এগিয়ে গেছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে। অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকারের একের পর এক যুগান্তকারী উদ্যোগ এখনও আশা জাগানিয়া। একটি দেশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ অন্ন, বস্ত্র ও বাসস্থান ব্যবস্থার দৃঢ় মানসিক চেতনা লক্ষণীয়। প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে, ফলে গ্রামে থেকেও ডিজিটাল উপস্থিতি অনেক বেড়ে গেছে। গ্রামে থেকেও অনলাইনে কাজে যুক্ত হয়ে আয় করা সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার ‘লার্নিং অ্যান্ড আর্নিং প্রজেক্ট ফর ইয়ুথ’-এর মাধ্যমে তরুণদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ‘মোস্ট ইমার্জিং ইকোনমি অব দি ওয়ার্ল্ড’ এবং ‘এশিয়ান টাইগার’ খ্যাতি অর্জন করেছে। বাংলাদেশ সরকার ই-গভর্নেন্স চালুর মাধ্যমে কাজে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা এবং সরকারি কর্মকর্তাদের ক্লাউড সার্ভারে কাজের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে।
বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাঙ্গামাটি জেলার বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ নির্মাণ করেন। তারই ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত হয়ে দেশব্যাপী ইন্টারনেট কানেকশনের প্রবাহ বৃদ্ধি করেন। তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে সংযুক্তির কাজ চলমান। নিজস্ব বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের মাধ্যমে ৫৭তম দেশ হিসেবে স্যাটেলাইট যুগে প্রবেশ করেছে। হাই-টেক পার্ক নির্মাণ করেছে। ৪ হাজার ৫০১টি ইউনিয়নে ডিজিটাল নেটওয়ার্ক স্থাপন করেছে। অথচ বিগত সময়ের সরকারপ্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্ব ফ্রি সাবমেরিন ক্যাবলের সাথে যুক্ত হওয়ার অফারও নির্বুদ্ধিতার জন্য গ্রহণ করতে পারেনি। শোনা যায়, ২০০৪ সালে খালেদা জিয়া নেতৃত্বাধীন সরকার ডাচ্ অনুদান প্রকল্পে শুধুমাত্র ‘টিউলিপ’ নাম থাকার কারণে টিউলিপ কম্পিউটারের কার্যক্রম মাঠে গড়াতে দেয়নি। (টিউলিপ বঙ্গবন্ধুর নাতির নাম)। অথচ সেই প্রকল্পে ‘টিউলিপ কম্পিউটার’ ১১ হাজার কম্পিউটার ও অন্যান্য হার্ডওয়ার এবং ৭ হাজার শিক্ষককে আইটি প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা ছিল। বাংলাদেশে প্রচলিত অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের পরিকল্পনায় এখন পর্যন্ত এমন কোনো জ্ঞানভিত্তিক-তথ্যভিত্তিক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় প্রকাশ্য হয়নি, যা জনগণকে আশান্বিত করতে পারে। তথাকথিত এমন রাজনৈতিক দলের কাছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দূর কি বাত!
অন্যদিকে বঙ্গবন্ধুতনয়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত ভিশন-২০২১ বাস্তবায়ন করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মেলাতে ইনফরমেশন ও কমিউনিকেশন টেকনোলজির বিভিন্ন বিষয়ে গ্রাজুয়েশন ও পোস্ট গ্রাজুয়েশন পর্যায়ে শিক্ষাদান, গবেষণা ও ডিজিটাল জ্ঞানের উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে ২০১৬ সালের ২৬ জুলাই গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক পার্ক সংলগ্ন এলাকায় ৫০ একর জায়গাজুড়ে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য আইন প্রণয়ন করেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে দেশের শিল্প, বাণিজ্য, অর্থনীতিকে শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে জাতীয় কৌশলপত্র তৈরি করছে। ২০১৯ সালের মার্চে এই খসড়া তৈরির কাজ শুরু হয়। সরকারের অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন বা এটুআই ‘ডেভেলপমেন্ট অব ন্যাশনাল স্ট্রাটেজি ফর আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ তৈরিতে পদ্ধতিগত কাজ শুরু করেছে। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লকচেইন এবং ফাইভ-জি নিয়ে পরবর্তী পাঁচ বছরে প্রমোট করার নির্দেশ দিয়েছেন, যাতে আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইন্ডাস্ট্রিতে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জগুলো চিহ্নিত করা যায়।
আগামীদিনে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সকল বৈশিষ্ট্যের সাথে সমন্বয় করে স্মার্ট বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এখানে নেতৃত্ব দেওয়ার মতো সক্ষমতা আমাদের আছে। আর তাই আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ব্লকচেইন, আইওটি, ন্যানো টেকনোলজি, বায়োটেকনোলজি, রোবটিকস, মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইনের মতো ক্ষেত্রগুলোতে জোর দিচ্ছি আমরা।’
লেখক : সহকারী গ্রন্থাগারিক, ডিজিটাইজেশন ও রিপ্রোগ্রাফি শাখা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগার