Monday, October 2, 2023
বাড়িSliderখুনিদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে

খুনিদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে

আজকে আমেরিকা, ইংল্যান্ড এমন কী আমাদের প্রতিবেশী ভারতও কিন্তু বিদ্যুৎ বা জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। বিষয়টা সবার মাথায় রাখতে হবে। যখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খায় তখন আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি।

উত্তরণ প্রতিবেদন: জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন ১ আগস্ট কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে কৃষক লীগ আয়োজিত স্বেচ্ছায় রক্ত ও প্লাজমা দান কর্মসূচির উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে যারা এদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছিল, যুদ্ধাপরাধী ও খুনিদের রাজত্ব গড়ে তুলেছিলÑ এদের ব্যাপারে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে। এদেশে যেন আর কখনও মানুষের ভাগ্য নিয়ে কেউ ছিনিমিনি খেলতে না পারে।
গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর সংলগ্ন এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলসুম স্মৃতির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক এমপি, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা, বঙ্গমাতা এবং ’৭৫-এর ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণে সকলে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে কৃষক লীগের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী তাদের দেহ থেকে স্বেচ্ছায় এক ব্যাগ করে রক্ত ও প্লাজমা দান করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
হারিকেন নিয়ে বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে আমেরিকা, ইংল্যান্ড এমন কী আমাদের প্রতিবেশী ভারতও কিন্তু বিদ্যুৎ বা জ্বালানি সাশ্রয়ের দিকে নজর দিয়েছে। বিষয়টা সবার মাথায় রাখতে হবে। যখন উন্নত দেশগুলো হিমশিম খায় তখন আমরা আগাম ব্যবস্থা নিচ্ছি। কারণ ভবিষ্যতে যেন আমরা কোনোরকম বিপদে না পড়ি। সেটা মাথায় রেখে আমরা সাশ্রয়ী হওয়ার কথা বলছি বা হচ্ছি।
তিনি বলেন, এই সাশ্রয়ী হওয়ার অর্থ এই না যে, এখান থেকে একেবারে লুটপাট করে খেয়েছি। লুটপাট তো বিএনপি করে গেছে। আমরা সেটা বন্ধ করে উন্নতি করেছি। মাত্র সাড়ে ৩০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ থেকে আজকে ২৪০০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমরা সক্ষম হয়েছি। লুটপাট করলে সেটা করা সম্ভব হতো না। লুটপাট করলে কি হয়- কমে যায়, ৪০০০ মেগাওয়াট থেকে যারা (বিএনপি) ২৩০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে আনে, তারাই লুটপাট করে। যারা বাড়াতে পারে তারা লুটপাট করে না। প্রতিটি পয়সা কাজে লাগিয়ে উৎপাদনটা বাড়ানো হয়।
সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানের হাতে গড়া দল বিএনপির নেতা-কর্মীদের মুখে এখন নির্বাচন নিয়ে নীতিকথা শুনতে হচ্ছে বলে হতাশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। বিএনপির শাসনামলে মানুষের ভোট দেওয়ার অধিকারটাই ছিল না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য হলোÑ একটা মিলিটারি ডিক্টেটর অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতায় থেকে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে যে দল গঠন করেছিল, তাদের কাছে এখন নানারকম নীতির কথা শুনতে হয়। যারা এই বাংলাদেশটাকে বানিয়েছিল অস্ত্র চোরাকারবারির একটি জায়গা, সন্ত্রাসীর দেশ, জঙ্গিবাদের দেশ, বাংলাভাই সৃষ্টির দেশ। বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিএনপি দেশকে সম্পূর্ণ পরনির্ভরশীল করে দেশের মানুষের নিরাপত্তা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দিয়েছিল। পাঁচ পাঁচবার দুর্নীতিতে এই বাংলাদেশ এক নম্বরে ছিল। হত্যা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ এই তো ছিল দেশের চিত্র। প্রত্যেকটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছিল অস্ত্রের ঝনঝনানি। মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া এবং তাদের লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে ব্যবহার করা। শিক্ষার সম্পূর্ণ পরিবেশ ধ্বংস করে স্বাক্ষরতার হার কমিয়ে ফেলা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে খাদ্য ঘাটতিতে রেখে মানুষকে ভিক্ষুক জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করানো এবং ভিক্ষা চেয়ে নিয়ে আসা। এটাও একটা ব্যবসা। খাদ্য কিনবে, ব্যবসা করবে এবং কমিশন খাবে; এটাই ছিল বিএনপির নীতি। দশ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়েছে। একটা চালান ধরা পড়েছে। এ-রকম কত চালান এই দেশে এসেছে আর গিয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা মানিলন্ডারিংয়ে জড়িত এবং তাদের বিদেশে পাঠানো টাকা ফেরতও আনা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা ভুলে যায় কেন? টাকা তো আমরা ফেরত এনেছি। তাদের (বিএনপি) দুর্নীতি আমাদের বলতে হবে কেন? একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা আমেরিকার এফবিআই তারাই তো খুঁজে বের করেছে। খালেদা জিয়া, তারেক জিয়াÑ এরা কার কার কাছ থেকে দুর্নীতি করে কত টাকা নিয়েছে। গ্যাটকো, নাইকো থেকে শুরু করে সিমেন্সের টাকা এগুলো তো একেবারে সবকিছুই প্রকাশ হয়েছে।
বিএনপি-জামাত জোট সরকারের ‘দুঃশাসন’ ও সেই সময়ে অনুষ্ঠিত ‘বিতর্কিত’ নির্বাচনগুলোর কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ২০০১-এর পহেলা অক্টোবরের জাতীয় নির্বাচনে কি কোনো মানুষ ভোট দিতে যেতে পেরেছে? সেই নির্বাচন কী নির্বাচন হয়েছিল? সমস্ত বাংলাদেশে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সেখানে কি সিল মারা বলে? এরা তো প্রকাশ্যে সিল মারত। একেকটা বাসে করে যাবে বিএনপির সন্ত্রাসীরা একেকটা বুথে ঢুকবে, সিল মারবে, বাক্স ভরবে আর চলে আসবে। আর সেটা না পারলে সোজা ঘোষণা (ফল ঘোষণা)।
এই সমস্ত প্রক্রিয়ায় সেই সময় মাগুরা নির্বাচন, মিরপুর নির্বাচন ও ঢাকা-১০ আসনের নির্বাচন হয়েছে বলেও উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব নির্বাচন তো মানুষের চোখে দেখা। কোনো মানুষ তো ভোট দিতে পারেনি। ভোট দেওয়ার অধিকারটাই মানুষের ছিল না বিএনপির আমলে। তাদের কাছ থেকেও কথা শুনতে হয় নির্বাচন নিয়ে, তারা কথা বলে কোন্ মুখে? কারণ, নির্বাচনের মাধ্যমে তো তাদের ক্ষমতায় আসা নয় বরং অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে অথবা দেশ বিক্রির মুচলেখা দিয়ে আসা। এই তো?
বিএনপির শাসনামলের চিত্র তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, দেশকে খাদ্য ঘাটতিতে রেখে মানুষকে ভিক্ষুক জাতি হিসেবে বিশ্বে পরিচয় করানো এবং ভিক্ষা চেয়ে নিয়ে আসা। এই খাদ্য কিনবে, ব্যবসা করবে এবং কমিশন খাবে; এটাই ছিল বিএনপির নীতি। সে-সময়ে দেশকে সম্পূর্ণ ‘পরনির্ভরশীল’ করে দেশের মানুষের নিরাপত্তা ‘সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস’ করে ফেলা হয়েছিল। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে, কারও কাছে যেন হাত পাততে না হয়। ‘ভিক্ষুক জাতির ইজ্জত থাকে না’Ñ এটাই জাতির পিতার কথা। বাংলাদেশ যেন কখনও ভিক্ষুক জাতি না হয়, সেই লক্ষ্য নিয়েই কিন্তু আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে করোনা এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে বিশ^মন্দার খ-চিত্র তুলে ধরে বলেন, কেবল বাংলাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বেই এমনকি অনেক উন্নত দেশেই অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। আমেরিকার মতো জায়গায় যেখানে ১ শতাংশ মুদ্রাস্ফীতি ছিল সেটা ৯ দশমিক ১ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ, জার্মানিসহ ইউরোপের বহুদেশে ৮ দশমিক ৯ শতাংশ এবং উন্নত দেশগুলো হিমশিম খাচ্ছে। সেখানে বাংলাদেশে আমরা ৭ দশমিক ৫ শতাংশে মুদ্রাস্ফীতি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী এ সময় দেশের প্রতি ইঞ্চি জমি এবং প্রত্যেকের নিজস্ব জলাশয় কাজে লাগানোর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে প্রশাসন, সশস্ত্র বাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ, পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ব্যবস্থা নিয়েছে এবং কৃষক লীগকেও এ কাজে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, যেখানে যত খালি জায়গা আছে সব জায়গায় উৎপাদনের ব্যবস্থা নিতে এবং সেখানে তরিতরকারি, ফলমূল উৎপাদনের নির্দেশ দিয়েছি। আমাদের আওয়ামী লীগেরও প্রত্যেকটি নেতাকর্মীকে এই আহ্বান জানাব দেশবাসীর কাছে যেতে হবে এবং আমাদের খাদ্য যে আমরা নিজেরা উৎপাদন করব সে-কথাটা জানাতে হবে। দেশকে গড়ে তোলায় সকলের মাঝে তার সরকার একটি চেতনার উন্মেষ ঘটিয়েছে এবং অতীতের জনসংখ্যার ঊর্ধ্বগতির হার কমে আসার নজির সাম্প্রতিক গণশুমারিতে পাওয়া নিয়ে সমালোচনারও উত্তর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আজকে জনসংখ্যা সাড়ে ১৬ কোটির ওপর; কিন্তু হিসাবটা কারও কারও পছন্দ হচ্ছে না। এই হিসাবটা যাদের পছন্দ নয় এবং তারা যদি জনসংখ্যা বাড়িয়েই যেতে চায়, তাহলেও দেশের নাগরিক হিসেবে তার সরকার তাদের খাদ্য সংস্থান করবে। কিন্তু আমরা চাই- প্রত্যেকটি পরিবার যেন একটি সুখী পরিবার হয় এবং সবাই যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, প্রতিটি ছেলেমেয়ে সুন্দরভাবে লেখাপড়া করতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে ’৭৫-এর বিয়োগান্তক বেদনাবিধুর অধ্যায় স্মরণ করে এর প্রেক্ষাপট সৃষ্টিতে সে-সময়কার ব্যাপক বিভ্রান্তিকর অপপ্রচারের বিভিন্ন প্রসঙ্গও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ২০ টাকা যখন মোটা কাপড়ের দাম তখন প্রায় দেড়শ টাকা মূল্যের জাল পরিয়ে বাসন্তীর ছবি তুলে সেই ছবি দিয়ে দেশে-বিদেশে ব্যাপক অপপ্রচার চালানো হয়। আন্তর্জাতিক চক্রান্তে চুয়াত্তরের সেই দুর্ভিক্ষ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতা সেই দুর্ভিক্ষ মোকাবেলা করে চালের কেজি ১০ টাকা থেকে ৩ টাকায় নামিয়ে এনেছিলেন। আর দ্বিতীয় বিপ্লবের ডাক দিয়ে যখন দেশকে সমৃদ্ধির পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখনই তাকে হত্যার পথ বেছে নেয় ঘাতক চক্র।
জাতির পিতা হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় উল্লেখ করে তার কন্যা শেখ হাসিনা বলেন, যাদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য জাতির পিতা নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন, আপনজন হিসেবে বাবাকে যেজন্য তারা কাছে পাননি- সেই বাঙালির হাতেই কেন জাতির পিতাকে জীবন দিতে হলো সে-প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে ফেরেন তিনি।
জাতির পিতা হত্যার ছয় বছর পর্যন্ত প্রবাস জীবন কাটাতে বাধ্য হওয়ার পর আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হলে একরকম জোর করেই দেশে ফিরে আসার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দেশে ফেরার পরও দেখেছেন দেশের বিভিন্ন জায়গায় দুর্ভিক্ষ, মঙ্গা যেন নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকি যে বাসন্তীকে জাল পরিয়ে বিশ্বে জাতির পিতার সরকারের দুর্নাম রটনার অপচেষ্টা হয়, সেই বাসন্তীকে খুঁজে বের করে দেখতে পান তারও ভাগ্য ফেরেনি। তবে, আওয়ামী লীগ সে-সময়ও মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, যে অপবাদ দিয়ে ১৫ আগস্ট ঘটানো হলো তাহলে দেশের কি পরিবর্তন তারা আনল সেটা দেখার ইচ্ছা ছিল বলেই আমি কুড়িগ্রামের চিলমারি গিয়ে ৩ মাইল হেঁটে কাদা-পানি মাড়িয়ে, মেঠোপথ ভেঙে সেই বাসন্তীর বাড়ি গিয়ে দেখেছি ছিন্ন কাপড়ে বাসন্তীকে, তার মা অসুস্থ, একটি বেড়ার চালার নিচে কোনোমতে পড়ে আছে। তাকে ঘরও বলা যায় না। মাছি ভনভন করছে।
তিনি প্রশ্ন ছুড়ে দেন- তার বাবার রক্ত নিয়েও তো বাসন্তীদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়নি। তাহলে কেন হত্যা করা হলো? জাতির পিতা হত্যার পর দেশের কী উন্নতি হয়েছে? চলে গেল মার্শাল’লতে। ক্ষমতা দখল করে কুক্ষিগত করা হলো। তারা ক্ষমতায় এসে পুরো নির্বাচনী ব্যবস্থা ধ্বংস করে। ইনডেমনিটি দিয়ে জাতির পিতার খুনিদের রক্ষা করে। যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমতায় নিয়ে আসে। স্বাধীনতার চেতনা থেকে দেশকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সব আয়োজন করল। দেশের মানুষ কী পেল? তিনি বলেন, ’৭৫-এ জাতির পিতাকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর এদেশে খুনি ও যুদ্ধাপরাধীদের যে রাজত্ব গড়ে উঠেছিল সেভাবে বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য নিয়ে আর কেউ যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে সেজন্য সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য