ধনধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা;
ও সে, স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে-দেশ, স্মৃতি দিয়ে ঘেরা;
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি,
ও সে সকল দেশের রানি সে যে আমার জন্মভূমি।
ড. রাজিয়া সুলতানা: অমর কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের চিরায়ত বাণীর মতোই- আমাদের দেশের মতো দেশ বিশ্বে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ‘বাংলাদেশ’ আসলে সকল দেশের রানি। আর এই খেতাব শতভাগ প্রযোজ্য কৃষির ক্ষেত্রে। দেশ আজ কৃষির প্রতিটা সেক্টরে রানির আসন দখল করে আছে। চারদিকে কৃষির জয়-জয়কার। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) দেশভিত্তিক ২০২১ সালের কৃষিপণ্য উৎপাদনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২২ কৃষিপণ্যে শীর্ষ দশে বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের ধানের উৎপাদনের প্রবৃদ্ধির ওপর এফএও-র জরিপ অনুযায়ী ধান উৎপাদনের বৃদ্ধির হারে বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানটি দখল করেছে বাংলাদেশ। আর বর্তমানে ধান উৎপাদনে তৃতীয়।
বিশ্বে আয়তনের দিক থেকে ৯৪তম একটি দেশ বাংলাদেশ। অন্যদিকে বিশ্বের অষ্টম বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। তারপরও থেমে নেই জনসংখ্যা; বাড়ছে ক্রমাগত। অন্যদিকে কমছে আবাদযোগ্য জমি। এই বৈপরীত্যের মাঝেই কৃষির প্রায় প্রতিটা সেক্টরে সাফল্য বাংলাদেশের। বিশেষ করে বাঙালির প্রধান খাদ্যশস্য ধানের উৎপাদন বাড়ছে প্রতিনিয়ত। ‘গ্লোবাল ফুড আউটলুক জুন ২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ধান উৎপাদিত হয়েছে ৫ কোটি ২৬ লাখ টন। চাল উৎপাদিত হয়েছে ৩ কোটি ৬৫ লাখ টন, ২০২০ সালে চাল ৩ কোটি ৭৪ লাখ টন, ২০২১ সালে ৩ কোটি ৭৮ লাখ টন, ২০২২ সালে ৩ কোটি ৮৪ লাখ টন। ধান তথা চালের উপাদন বাড়ছে। তাই বলে আমাদের হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। কারণ বাঙালির প্রধান খাদ্য ভাত। জনসংখ্যা যত বাড়বে, ভাতের চাহিদা তত বাড়বে। তাই তো ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে সংগতি রেখে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ধানের উৎপাদন প্রক্রিয়া একটি টেকসই জায়গায় নেওয়ার বিকল্প নেই।
তাই তো ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার সাথে সংগতি রেখে টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে ধানের উৎপাদন প্রক্রিয়া একটি টেকসই জায়গায় নেওয়ার বিকল্প নেই।
পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের প্রধান খাদ্য ভাত। বাংলাদেশের বর্তমান জনসংখ্যা ৯৮ লাখ ২৮ হাজার ৯১১ জন। এই বিশাল জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ লোকের প্রধান খাদ্য ভাত। দেশের অর্থনীতি থেকে রাজনীতি সবকিছুই নিয়ন্ত্রিত হয় খাদ্য নিরাপত্তা দিয়ে। অতীতকাল হতে বাংলাদেশের প্রধান খাদ্যশস্য বলতে আমরা ধানকে বুঝি। সুতরাং বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা বলতে প্রধানত আমরা ধান বা চালের নিরাপত্তাকে বুঝি। এই নিরাপত্তা বিধানে যে প্রতিষ্ঠান সবচেয়ে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করছে, সেটা হলো বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেন। ফলে শুরু হয় ধানের ওপর আন্তর্জাতিকমানের গবেষণা। আবার এদিকে স্বাধীনতার পর দেশের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবুজ বিপ্লবের ডাক দেন। তারই ডাকে সাড়া দিয়ে ব্রি’র বিজ্ঞানীরা স্বল্প সময়ের মধ্যেই উদ্ভাবন করেন নতুন জাতের ধান বিআর-৩ বা বিপ্লব। যা দেশের খাদ্য উৎপাদনে সত্যিই বিপ্লব নিয়ে আসে। প্রতিষ্ঠানটি জাতির পিতার নির্দেশিত পথ ধরেই গত পাঁচ দশক ধরে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিতে অসামান্য অবদান রেখে চলেছে। ব্রি-র বিজ্ঞানীদের সাথে ধানের উন্নত জাত উদ্ভাবনে কাজ করছে বাংলাদেশ পরমাণু গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) এবং বিভিন্ন কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। ব্রি ইতোমধ্যে ৮টি হাইব্রিডসহ মোট ১১৩টি উচ্চফলনশীল ধানের জাত ও তিন শতাধিক ধান উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। ব্রি, ধানের উৎপাদনের গতি বেগমান রাখতে গ্রহণ করেছে ‘রাইস ভিশন ২০৫০’ এবং ‘ডাবলিং রাইস প্রোডাক্টিভিটি ২০৩০’ ইত্যাদি পরিকল্পনা। সরকার দেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। গ্রহণ করেছে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধিকল্পে আধুনিক জাতের উন্নতমানের ধানের বীজের সরবরাহ বৃদ্ধি করেছে। প্রয়োজনীয় সব ধরনের সার ও কীটনাশক যাতে কৃষকরা হাতের নাগালের মধ্যে পায়, তার ব্যবস্থা করেছে। পূর্বে কৃষকরা উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইউরিয়া সার ব্যবহার করত। এতে একদিকে প্রচুর পরিমাণে সার অপচয় হতো, অন্যদিকে ফসলে রোগ-বালাইয়ের আক্রমণ বেড়ে যেত। বিশেষ করে ধানের ব্লাস্ট, ফলস স্মাট ইত্যাদি। তাই সরকার ইউরিয়া সারের পরিবর্তে যাতে কৃষকরা ডাই এমোনিয়াম ফসফেট (ডেপ) সার ব্যবহার করে তার জন্য ডেপ সারে ব্যাপক ভর্তুকি দিয়ে কৃষকদের মাঝে এই সার ব্যবহারের প্রচলন করেছে। টিএসপি ও এমপি সারের দাম ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের হাতের নাগালের মধ্যে নিয়ে এসেছে। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে বলতে হয়, সুষম সার ব্যবহারে কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য সরকার পটাশ ও ফসফেট সারের প্রতি কেজি বিক্রির দাম যথাক্রমে ৬০ থেকে ১৫ টাকা এবং ৭২ থেকে ২২ টাকায় নামিয়ে আনে। মাটির স্বাস্থ্য রক্ষায় জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহিত করার জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে। এসব কিছুর মিলিত ফলই ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি। ধান একটি হাইড্রোফিলিক উদ্ভিদ। সঠিকভাবে ধান উৎপাদনের জন্য প্রচুর পরিমাণে পানির প্রয়োজন হয়। তাই তো কৃষিবান্ধব সরকারের পানি সেচ সুবিধাবঞ্চিত এলাকায় দ্রুত সেচ সুবিধা সৃষ্টি ও সম্প্রসারণ করেছে। নিরবচ্ছিন্নভাবে যাতে বিদ্যুৎ পায় সেদিকে সরকারে ছিল সর্বদা সুদৃষ্টি। সেচ যন্ত্রপাতি কিনতে সরকার ভর্তুকি দেয় প্রায় ৫০-৭০ শতাংশ। তাছাড়া কৃষিকে স্মার্ট করতে ব্যবস্থা করে সোলার বিদ্যুতের। করে বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা। সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করার জন্য সম্প্রসারণ করে কৃষি প্রযুক্তির। কৃষকদের মহাজনদের দৌরাত্ম্য থেকে বাঁচতে ব্যবস্থা করে কৃষি ঋণের। মাত্র ১০ টাকায় করে ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খোলার ব্যবস্থা। করে জামানত ছড়া বর্গাচাষিদের ঋণের ব্যবস্থা। সর্বোপরি নির্ধারিত মূল্যে ধান বিক্রির কার্যক্রম গ্রহণ করে। করেছে ই-কৃষির প্রচলন। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির সব কার্যক্রমকে সফলভাবে এগিয়ে নিতে কৃষক ভাইদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানে স্বচ্ছতার নিশ্চয়তা বিধানে ১ কোটি ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার কৃষককে উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদানও করেছে। আর তাই তো পরপর চার বছরই ধান উৎপাদনকারী অন্যান্য দেশকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশ ধান উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থানটি ধরে রেখেছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ এখন খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত হয়েছে। চালের আমদানি নেমে এসেছে শূন্যের কোঠায়।
টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা বিধানে সময় এসেছে আমাদের স্মার্ট হওয়ার। তাই তো শুধু উৎপাদন বাড়ালে হবে না। উৎপাদন বৃদ্ধির সাথে সাথে আমাদের মাথায় রাখতে হবে উৎপাদন খরচ কমানোর। সার ও বালাইনাশকের পরিমিত ব্যবহারের। সেচের দক্ষতা বৃদ্ধির। উৎপাদন-পরবর্তী অপচয় রোধের। শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় যান্ত্রিকীকরণের ব্যবহার বৃদ্ধির। এসব কিছুর মিলিত ফলের পরিসংখ্যানের নিরিখে ধানের উৎপান বৃদ্ধির নিয়ামক ধরতে হবে। মনে রাখতে হবে- বাংলাদেশ দুর্যোগপূর্ণ দেশ। যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উৎপাদন আবার কমে যেতে পারে। এর জন্য সর্বদা আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে। বিশেষ করে আমাদের বেঁচে থাকার প্রধান অবলম্বন ধান উৎপাদন প্রক্রিয়াকে টেকসই করতে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে জৈব ও অজৈব সকল সমস্যাকে মাথায় রেখে ধানের গবেষণা কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। দেশের প্রতিটি ইউনিয়নের আবাদি ও আবাদযোগ্য জমির মাটির আকার, আকৃতি, প্রকৃতি, পানি ধারণক্ষমতা ভেদে ধানের জাত নির্বাচন করতে হবে। যাতে কম খরচে বেশি ফলন পাওয়া যায়।
নির্দিষ্ট জমিতে সারাবছর ধরে শুধু ধানের চাষ করা যাবে না। কারণ এতে ধানের আক্রমণকারী রোগবালাই ও কীটপতঙ্গ নীরবে বাড়তে থাকবে। ফলে ধীরে ধীরে ধানের ফলন কমে যাবে। কোনো বছর এরা এমন বিধ্বংসী রূপ ধারণ করতে পারে যে, উৎপাদন শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পারে। তাছাড়া ধানের শিকড় যে পর্যন্ত যায় সেখানে একটি শক্ত প্লউপ্যানের সৃষ্টি হবে। ফলে মাটিতে পুষ্টি উপাদানের ব্যাপক ঘাটতি দেখা যাবে। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য কৃষক তখন অতিরিক্ত মাত্রায় সার, কীটনাশক ও বালাইনাশক প্রয়োগ করবে। ফলশ্রুতিতে পরিবেশ নষ্ট হবে। প্রকৃতি তার ভারসাম্য হারাবে। অন্যদিকে মাটিতে থাকা মাইক্রো অর্গানিজমের সংখ্যা কমে যাবে। এ পরিস্থিতিতে ধানের উৎপাদনশীলতা যেমন কমে যাবে, তেমনি উৎপাদন খরচও যাবে বেড়ে। উপরিউক্ত আলোচনার নিরিখে আমরা বুঝতে পারছি, আমরা ধানের টেকসই উৎপাদন নিয়ে উদ্বিগ্ন। কিন্তু এফএও-র জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃষির অভিযোজনবিষয়ক প্রতিবেদন বলছে ভিন্নকথা। আগামী দিনগুলোতে বিশ্বের যেসব দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়তে পারে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। বিশ্বব্যাংক এবং এফএও-র তথ্য পর্যালোচনা করলে এটি স্পষ্ট যে, বাংলাদেশ এখন খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির সবদিক থেকেই বিশ্ব পথিকৃৎ ও অনুসরণীয়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৃষ্টিপাত পিছিয়ে যাওয়ায় বরং আমন ধানের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। অথচ আগে খরার জন্য আমন উৎপাদনে ভালো ফলন পাওয়া যেত না। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরী প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে এখন বিশ্বের অনুসরণীয় উদাহরণ বাংলাদেশ। ধানসহ গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই বাংলাদেশ এগিয়ে চলছে ঊর্ধ্বগতিতে। আসলে ভাবতে অবাক লাগে, ‘এফএও-র তথ্য-উপাত্ত বলছে, বিশ্বে বর্তমানে ধানের গড় উৎপাদনশীলতা প্রায় ৩ টন, আর বাংলাদেশে তা সোয়া ৪ টন।’ এ কৃতিত্ব জাতি হিসেবে তো আমাদের। তবে পুরো কৃতিত্ব আসলে আমাদের আধপেটে থাকা মেহনতি কৃষক ভাইদের।
তবে ভাবনার বিষয় হলো, ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে সম্পূর্ণ জনগোষ্ঠীর খাদ্যের চাহিদা পূরণের জন্য বছরে চালের প্রয়োজন হবে ৪ কোটি ৪৬ লাখ টন। সে হিসেবে বছরে হেক্টরপ্রতি ৪৪ কেজি হারে চালের উৎপাদন বাড়াতে হবে। ব্রি-এর বিজ্ঞানীদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, বাড়ছে মাত্র ১০ কেজি হারে। ‘জেনেটিক ইল্ড ট্রেন্ডস’ নামক অপর এক গবেষণা বলছে, ১৯৭০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাতের জিনগত উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর পাশাপাশি কৌশলগত ও ব্যবস্থাপনাগত কারণে বর্তমানে চালের উৎপাদনশীলতা বাড়ছে বছরে হেক্টরপ্রতি ২০ কেজি হারে। তাহলেও ঘাটতি থেকে যাচ্ছে হেক্টরপ্রতি ২৪ কেজি। সুতরাং, আমাদের ধান উৎপাদন বাড়ানোর নতুন নতুন উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের নজর দিতে হবে জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও জিনোম এডিটিংয়ের দিকে। রোগ প্রতিরোধী জাত উদ্ভাবন করতে হবে। প্রযুক্তিগত সক্ষমতা বাড়াতে হবে। চাষের জমি বাড়াতে হবে। দেশের পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, উঁচু-নিচু সব জায়গা চাষের আওতায় আনতে হবে। রাইস ভিশন ২০৫০, ডাবলিং রাইস প্রোডাক্টিভিটি ২০৩০, ২০৪০ ও ২০৫০ সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। কৃষিকাজে এগিয়ে আসতে হবে শিক্ষিতদের। সরকারের প্রণোদনা কর্মসূচি আরও বাড়াতে হবে। মাঠপর্যায়ে কৃষি বিভাগের তৎপরতার কোনোরকম কোনো ঘাটতি থাকা যাবে না। সর্বোপরি মানুষকে ভাতের সম্পূরক শর্করাসমৃদ্ধ খাদ্যে অভ্যস্ত হতে হবে। এককভাবে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত না রেখে ধানের পাশাপাশি ধানের সম্পূরক শর্করাসমৃদ্ধ কৃষিপণ্য যেমন- আলু, মিষ্টি আলু, ভুট্টা, কাওন, কাসাবা ইত্যাদির উৎপাদন বৃদ্ধির সুপরিকল্পিত ও বিজ্ঞানসম্মত উদ্যোগ নিতে হবে। আর অন্যদিকে লাগামহীন জনসংখ্যার বৃদ্ধিকে রহিত করতে হবে।
সবশেষে আমরা বলতে পারি, ধানের উন্নতমানের জাত উদ্ভাবনে আমাদের আরও সচেষ্ট হতে হবে। মোকাবিলা করতে হবে ধান উৎপাদনের নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ। তবেই আমরা টেকসই ধান উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের খাদ্য নিরাপত্তাকে টেকসই করতে পারব।