আরিফ সোহেল
৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ, অশ্রু-বির্সজন, লাখো মানুষের ত্যাগের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় নিশান উড়িয়েছে বাংলাদেশ। মুক্তিযুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছেন অনেক ক্রীড়াবিদ। স্বাধীন বাংলাদেশে ধীরে ধীরেই সরব হয়ে ওঠে ক্রীড়াঙ্গন। তবে মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের বিস্ময়কর অবদান হয়ে আছে গৌরবোজ্জ্বল এক ইতিহাস। সেই ফুটবল খেলা দিয়ে শুরু হয় এদেশের ক্রীড়াঙ্গনের নবতর পথচলা। এই অভিযাত্রার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর ৫০ বছরের ক্রীড়াঙ্গনের অভিযাত্রায় ক্রীড়াপ্রাণ বঙ্গবন্ধু পরিবারে সম্পৃক্তা যুগান্তকারী।
ক্রীড়াবিদ-অনুরাগী-পৃষ্ঠপোষক- একবাক্যে ক্রীড়া পরিবার। বঙ্গবন্ধু-পরিবার শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারাবিশ্বে আজ পর্যন্ত একমাত্র উদাহরণ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের অগ্রগতি-উন্নয়নের সঙ্গে গভীরভাবে মিশে আছে বঙ্গবন্ধু পরিবারের অবদান। তাই স্বাভাবিকভাবে বিজয়ের ৫০ বছরের ক্রীড়াঙ্গনের নামচায় বঙ্গবন্ধু-পরিবার এক অবিকল্প প্রেরণার নাম। এদেশের ক্রীড়াঙ্গনে তাদের বর্ণাঢ্য পদচারণা, স্বর্ণোজ্জ্বল অতীত-বর্তমান, রাগ-অনুরাগ-অবদান অস্বীকার্য। সব মিলে ‘ক্রীড়াপ্রাণ বঙ্গবন্ধু-পরিবার’ সবার কাছেই এক মহাবিস্ময়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরেই ১৯৭২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকা স্টেডিয়ামে প্রথম ফুটবল ম্যাচ মাঠে গড়িয়েছিল। একদিকে ‘রাষ্ট্রপতি একাদশ’ অন্যদিকে ‘বাংলাদেশ একাদশ’। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে মাঠে উপস্থিত ছিলেন রাষ্ট্রপতি আবু সাঈদ চৌধুরী। সেদিন বিপুল সংখ্যক দর্শক মাঠে উপস্থিত হয়েছিল। শহিদ ক্রীড়াবিদ পরিবারদের সাহায্যার্থে এই ফুটবল ম্যাচটির আয়োজন করা হয়েছিল। এটি ছিল দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম ফুটবল ম্যাচ।
এদেশের ক্রীড়া সংগঠন গড়ে তোলা এবং ক্রীড়াচর্চা কীভাবে শুরু হবে তা নিয়ে কাগজ-কলম হাতে বসেছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ক্রীড়াঙ্গনের ভিত সাজাতে বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ক্রীড়া সংগঠক কাজী আনিসুর রহমানকে আহ্বায়ক করে বাংলাদেশ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থা গঠন করেন। আর ক্রীড়ামন্ত্রী ও বাংলাদেশ ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সভাপতি করেছিলেন অধ্যাপক মো. ইউসুফ আলীকে। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে শূন্য থেকে পূর্ণ করে তুলতে হবে। কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে নতুন দেশের ক্রীড়াঙ্গনকে দাঁড় করানোর জন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।
ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধু-পরিবার
ইতিহাস সেই পুরনোই। বঙ্গবন্ধুর পিতা শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন একজন কৃতী ফুটবলার এবং ক্রীড়া সংগঠক। সে পথেই নিজেকে একাট্টা রেখেছেন বঙ্গবন্ধু নিজেও। তিনি ছিলেন কৃতী ফুটবলার; খেলতেন হকি, ভলিবলও। খেলাধুলার প্রতি ছিল তার যেমন অনুরাগÑ তেমনই ক্রীড়া-উন্নয়নে তার বিশেষ নজরের ব্যত্যয় ঘটেনি। হয়তো সে কারণেই বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ ছেলে শেখ কামাল এ আঙিনায় পিতাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন। মেজ ছেলে শেখ জামাল কম কীসের! ছিলেন ফুটবল, ক্রিকেট ও হকি খেলোয়াড়। ছোট ছেলে শেখ রাসেলও সেই ছোটবেলা থেকেই জাতির পিতার হাত ধরে মাঠে যেতেন। শেখ কামালের সহধর্মিণী মেধাবী ক্রীড়াবিদ সুলতানা কামালের নাম যেন ক্রীড়াঙ্গনের সবুজ মাঠের প্রতিটি ঘাসের সঙ্গে মিশে রয়েছে। আর বিশ্বে বিপুলভাবে প্রশংসিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা; যায় ক্রীড়াপ্রেম-আবেগ-মমতাময়ী পৃষ্ঠপোষকতার কথা সকলের জানা।
ক্রীড়াপ্রাণ বঙ্গবন্ধু-কন্যা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করতেই হয়। যিনি ক্রীড়াবিদ না হয়েও ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে আপনজন, অভিভাবক, নিবেদিতপ্রাণ দর্শকÑ সব মিলিয়ে ক্রীড়াঙ্গনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক। বিজয়ের ৫০ বছরের খোরোখাতায় চোখ রাখলেই দেখা যাবেÑ ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনাকালেই বাংলাদেশ বড় অর্জনগুলো স্পর্শ করেছে। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন হওয়া থেকে ওয়ানডে ও টেস্ট মর্যাদা কিংবা ফুটবলে সাফের স্বর্ণ বিজয়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িয়ে রয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নাম জড়িয়ে রয়েছে কমনওয়েলথ, এশিয়ান গেমসে এবং এএস গেমসে স্বর্ণ বিজয়ের সঙ্গে। গৌরবময় বিশ্বকাপ ক্রিকেট, টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপ ক্রিকেট, এসএ গেমস, রোলবল বিশ্বকাপ আসর ও বাংলাদেশ গেমস আয়োজনের মতো ঘটনার সঙ্গে ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম জড়িয়ে। আন্তর্জাতিক আসরের সাফল্যে দৃষ্টি রেখে বলা যাবে- ‘যখনই দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনা; তখনই আন্তর্জাতিক ক্রীড়াঙ্গনে সাফল্য আসে বাংলাদেশের’।
জাতির পিতার আহ্বানেই ১৯৭২ সালে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, ভলিবল, সাঁতার, অ্যাথলেটিকস, টেনিস, ব্যাডমিন্টন, জিমনাস্টিকস, বাস্কেটবল এবং বাংলাদেশ মহিলা ক্রীড়া সংস্থা ও ফেডারেশনের দায়িত্ব নিয়েছিলেন নিবেদিত ও পরীক্ষিত সংগঠকরা। ১৯৭৫ সালে জাতির পিতাসহ তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যকে ঘাতক বাহিনী বর্বরোচিতভাবে হত্যাকা-ের পর সব থমকে দাঁড়িয়েছিল। তবে জাতির পিতার বাতলে দেওয়া পথেই এদেশের ক্রীড়া এগিয়ে চলেছে ক্রীড়াবান্ধব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল
নানান প্রতিকূলতা কাটিয়ে নতুন এক ইতিহাস গড়েছিলেন বাংলাদেশের ফুটবলাররা। বাংলাদেশের বিজয়ের ৫০ বছরে নিশ্চয়ই তাদের কাছে ফিরে যেতে হবেই। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে ফুটবল দল গড়ে তুলে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন ফুটবলাররা। ভারতের বিভিন্ন স্থানে ম্যাচ খেলেছে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল।
ইতিহাসে এমন ঘটনা বেশ অভিনব। মুক্তিযুদ্ধ স্বাধীনতাকামী মানুষের হৃদয়ে কতটা জুড়ে ছিল, এই সিদ্ধান্ত তার অন্যতম দৃষ্টান্ত। ভারত সরকার এবং সংশ্লিষ্ট ক্রীড়া সংস্থা বাড়িয়ে দেয় সর্বাত্মক সমর্থন ও সহযোগিতার হাত। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে জনমত গঠন করার পাশাপাশি দলটি তহবিলও গঠন করেছিল। ফুটবল দলের ইতিহাস সৃষ্টিকারী সে-দিনটি ছিল ১৯৭১ সালের ২৫ জুলাই। ভারতের নদীয়ার কৃষ্ণনগরে স্বাগতিক দলের সঙ্গে খেলতে নামে ‘বাংলাদেশ একাদশ’, পরবর্তীকালে যা মুখে মুখে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’ নামে। অনেক ঝঞ্ঝা পেরিয়ে ওই ম্যাচেই উড়ানো হয় লাল-সবুজের জাতীয় পতাকা। বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। কলকাতায় পাকিস্তানের ডেপুটি হাইকমিশনার এম হোসেন আলী ১৯৭১ সালের ১৮ এপ্রিল বাংলাদেশের পক্ষে আনুগত্য প্রকাশ এবং বহির্বিশ্বে প্রথম বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। এই খেলা দেখতে প্রায় ১০ হাজার দর্শক সমবেত হয়েছিল। এই খেলা উপলক্ষে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ, সেনানায়ক মেজর ওসমানী, বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক কর্নেল এমএজি ওসমানী এবং মহম্মদ হোসেন আলী (পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে বাংলাদেশের পক্ষে আনুগত্য প্রকাশকারী কূটনীতিক) শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী পাঠিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সব মিলিয়ে বাংলাদেশ দল ভারতের মাটিতে ১৭টি ম্যাচ খেলেছে। বিভিন্ন রাজ্যে ম্যাচ খেলার সময় মধুর অভিজ্ঞতা যেমন হয়েছে, তেমনিভাবে হয়েছে তিক্ততাও। ফিল্ম সিটি হিসেবে খ্যাত বোম্বাইয়ে (মুম্বাই) স্বাগতিকদের সঙ্গে ম্যাচে বলিউড তারকাদের রীতিমতো ঢল নামে। সুপারস্টার দীলিপ কুমার, রাজেশ খান্না, রাজকুমার, বিশ্বজিৎ, শর্মিলী ঠাকুর, সায়রা বানু, মমতাজ, লীনা চন্দ্রভারকর থেকে শুরু করে কমেডিয়ান আগাসহ অনেকেই উপস্থিত হন। এ ম্যাচে সেন্টার ফরোয়ার্ড পজিশনে খেলেছেন ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক মনসুর আলী খান পতৌদি। অন্যদিকে, বিহারে বাংলাদেশ ফুটবল দলকে পাকিস্তান সমর্থক মারমুখী জনতার আক্রোশের মধ্যে পড়তে হয়।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল পৃথিবীর ইতিহাসে নতুন এক নজির স্থাপন করে। ফুটবল খেলার মাধ্যমেও যে স্বাধীনতার সপক্ষে কার্যকর ও সদর্থক ভূমিকা রাখা যায়, এর আগে এমনটা কখনও দৃশ্যমান হয়নি। স্বাধীনতা এবং ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল’-এর প্রথম ম্যাচ খেলার সুবর্ণজয়ন্তীতে ঠিকই ফিরে আসছে গৌরবোজ্জ্বল সেই দিনের স্মৃতি। যা বাংলাদেশ নামের দেশটিকে চিরকাল গর্বিত করবে।
স্বাধীন বাংলা ফুটবল একাদশ : নরুল নবী; মোমিন, হাবুল, বিমল ও পিন্টু; আইনুল ও খোকন; কেকোবাদ, আলি ইমাম, আমিনুল ইসলাম ও প্রতাপ হাজরা।
নদীয়া একাদশ : গোবিন্দ গুহ ঠাকুরতা; বিভূতি কু-ু, শিবেন রুদ্র, শান্তনা রায় ও সুশান্ত সরকার; অসিত ঘোষ ও অজিত সাহা; অমল সরকার; তুষার গুণ, কৃষ্ণ মিত্র ও রমেশ ম-ল।
ক্রিকেটের নানা অর্জন
ক্রিকেট এখন বাংলাদেশের বড় বিজ্ঞাপন। অথচ এক সময়ে বাংলাদেশে ফুটবল বাইরে অন্য খেলা ভাবাই যেত না। বিশ্ব ক্রিকেটের টেস্ট মর্যাদার দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এখন আর ফেলনা নয়। তবে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর আমাদের ক্রীড়াঙ্গন যে পর্যায়ে ছিল, সেই পর্যায় থেকে আমরা এতদূর এগিয়ে যাব তা কল্পনাও করতে পারিনি। মাত্র ৩০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ টেস্ট স্ট্যাটাস পেয়েছে। ওয়ানডে ক্রিকেটে বিশ্বের প্রায় সব দেশকে পরাজিত করেছে। টেস্ট ক্রিকেটে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ডের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়েছে। ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলেছে। বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেট অনুষ্ঠানের স্বাগতিক দেশ হয়েছে। বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলেছেন। এশিয়া টি-টোয়েন্টি কাপে পাকিস্তান ও ভারতকে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০১০ সালে চীনের এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ পুরুষ দল স্বর্ণপদক আর নারী দল রৌপ্যপদক জিতেছে। বাংলাদেশের সাকিব আল হাসান ওয়ানডে ও টেস্ট ক্রিকেটে বেশ কয়েকবার বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৯ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ। আর সর্বশেষ ২০২১ সালে নারী ক্রিকেট দল পেয়েছে বিশ্বকাপে খেলার ছাড়পত্র।
ক্রিকেটের অনেক মহাকাব্যের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে সফল দেশনায়ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাম। টেস্ট মর্যাদার কথা, বিশ্ব ক্রিকেট আয়োজনের কথা মনে পড়লেই উঠে আসছে ক্রিকেটপ্রেমী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখ।
ফুটবলের গল্প, সাফ ফুটবলে স্বর্ণ জয়
ফুটবলের বড় ইতিহাস বলতে সাফ ফুটবলে স্বর্ণ জয়ই বাংলাদেশের জন্য সত্যিকার অর্থেই সোনার হরিণ ছুঁয়ে দেখা। সাফ গেমসেই ছিল চরম আক্ষেপের গল্প। শেষ পর্যন্ত তা ধরা দিয়েছিল কাঠমান্ডুতে। ১৯৯৯ সালে অনুষ্ঠিত ওই সাফ গেমসে ফাইনালে স্বাগতিক নেপালের বিপক্ষে ১-০ গোলে জয় বাংলাদেশ স্বর্ণ এনে দিয়েছিল। বাংলাদেশের ৫০ বছরে এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন ফুটবলে। স্বর্ণজয়ী ওই দলে জুয়েল রানা (অধিনায়ক), আলফাজ, মনোয়ার, আনোয়ার, ফয়সাল, হাসান আল মামুন, ইকবাল, ডন, নজরুল, বিপ্লব (গোলরক্ষক), মতিউর মুন্নার মতো দুর্দান্ত সব খেলোয়াড়রা ছিলেন। এখন ক্রিকেট নিয়ে অনেক মাতম থাকলেও তখন ছিল ফুটবলময় বাংলাদেশ। এই একটা সাফল্যের জন্য যে কী আকুলতা ছিল, আজকের প্রজন্ম তা কল্পনাও করতে পারবে না। দলের কোচ ছিলেন ইরাকের পক্ষে বিশ্বকাপ খেলা সামির শাকির। বয়সভিত্তিক আন্তর্জাতিক ফুটবলে সাফল্য পেয়েছে কিশোরী ও তরুণী ফুটবল দল। নারী ফুটবলাররা এশিয়ান পর্যায়ের ফাইনাল রাউন্ডেও খেলেছেন। সমাজের এমন এক স্তর থেকে উঠে এসে প্রত্যয় ও দৃঢ়তার সঙ্গে এদেশের ফুটবলে নতুন বিপ্লব ঘটিয়েছেন। বয়সভিত্তিক ফুটবলে পুরুষদের সাফল্যও চোখে পড়ার মতো। দেশে প্রাথমিক স্কুল পর্যায়ে বঙ্গমাতা ও বঙ্গবন্ধু ফুটবল শুরু একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এশিয়ার কোনো দেশে লাখ লাখ বালক-বালিকার অংশগ্রহণে এ-ধরনের কোনো ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হয় না।
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের কিংবদন্তিরা যখন বাংলাদেশে
বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্রের একজন হেভিওয়েট বক্সার মোহাম্মদ আলীর বাংলাদেশে সফরে আসা সময়ের প্রেক্ষাপটে এটি ছিল বড় একটি ঘটনা। বিজয়ের ৫০ বছরে বাংলাদেশের মাটিতে পা দেওয়া সবচেয়ে বড় ক্রীড়া তারকা ছিলেন তিনি। অবশ্য আর্জেন্টিনার ফুটবলার লিওনেল মেসি, বিশ্বকাপ জয়ী ফ্রান্স দলের খেলোয়াড় জিনেদিন জিদানরা এসেছেন। এসেছেন শচিন-মার্ক ওয়াহরা। কিন্তু জনপ্রিয়তা, গ্ল্যামার ও প্রভাবের কথা বিবেচনা করলে সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রীড়াবিদ হিসেবে মোহাম্মদ আলীর সমতুল্য তারা কেউ নন।
১৯৭৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ আলী সপরিবারে ঢাকায় আসেন। সঙ্গে ছিলেন বাবা, মা, স্ত্রী, অনুজ ও অন্যরা। চার দিনের এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য ‘মোহাম্মদ আলী গোজ ইস্ট : বাংলাদেশ-আই লাভ ইউ’ নামক একটি তথ্যচিত্রে অংশ নেওয়া। ঢাকায় তার নামে নামকরণ করা হয় ‘মোহাম্মদ আলী বক্সিং স্টেডিয়াম’। মোহাম্মদ আলী সফর করায় অন্তত ক্রীড়া বিশ্বে আলাদাভাবে সবার নজর কাড়তে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
আরচারির গল্প
আরচারিতে দারুণ সময় কাটছে রোমান সানাদের। আরচার রোমান অংশ নিয়েছেন গৌরবের ২০২১ টোকিও অলিম্পিকে। সরাসরি অংশগ্রহণের যোগ্যতা অর্জন করার আগে জিতেছেন বিশ্ব আরচারিতে ব্রোঞ্জ ও এশিয়ান আরচারির স্বর্ণপদক। সব মিলিয়ে রোমান সানা এখন তীরান্দাজের এক বিস্ময়বালক। বিশ্ব আরচারির অলিম্পিক বিশ্লেষণ দৃষ্টিতে তাকে উদীয়মান সেরা দশ পারফরমারের একজন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এক রোমান সানায় উজ্জীবিত সারাদেশ। তার প্রমাণ মিলেছে এসএ গেমসে। ২০১৯ সালের বাংলাদেশ ১০টি ইভেন্টের ১০টিতেই স্বর্ণ জিতেছে। আরচারিতে রোমান সানা ছাড়াও ইতি খাতুন, সোহেল রানা, সুমা, সুস্মিতা, দিয়ারা আরচারি বিশ্বে নিজেদের প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন।
বিজয়ের ৫০ বছরে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের সুবর্ণ মুহূর্তগুলো একবার স্মরণ করা যেতে পারে-
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল : ১৯৭১ সালের ১৩ জুন গঠিত হয় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, মুম্বাই ও বিহারে ১৪টি প্রদর্শনী ম্যাচ খেলে ৩১ সদস্যের দলটি।
সাঁতারে বিশ্বরেকর্ড : ১৯৭১ সালের অক্টোবরে কলকাতার কলেজ স্কয়ারে সাঁতারে বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিলেন অরুণ নন্দী। ৮৯ ঘণ্টা ৩৫ মিনিট সাঁতারের রেকর্ড ভেঙে একটানা ৯০ ঘণ্টা ৫ মিনিট সাঁতার কাটেন তিনি।
প্রথম আন্তর্জাতিক ফুটবল ম্যাচ : ১৯৭৩ সালের ২৬ জুলাই থাইল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। একই বছর মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত মারদেকা কাপ দিয়ে ফুটবলে প্রথম টুর্নামেন্টে খেলে বাংলাদেশ।
ফিফার সদস্যপদ প্রাপ্তি : ১৯৭৪ সালে ফিফার সদস্যপদ পায় বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন। বাফুফে প্রতিষ্ঠিত হয় স্বাধীনতার পরের বছর।
কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম অংশগ্রহণ : বাংলাদেশ কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম অংশ নেয় ১৯৭৮ সালে কানাডার অ্যাডমন্টনে।
ক্রিকেটে বাংলাদেশ : ১৯৭৯ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি ট্রফির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশ করে বাংলাদেশ। আসরে হারিয়েছিল ফিজি ও মালয়েশিয়াকে।
প্রথম দাবায় আন্তর্জাতিক অর্জন : ১৯৮৩ সালে লন্ডনে ব্রিটিশ দাবা চ্যাম্পিয়নশিপ জেতেন রানী হামিদ। পরে ১৯৮৫ ও ১৯৮৯ সালেও চ্যাম্পিয়ন হন তিনি।
প্রথম অলিম্পিকে অংশগ্রহণ : বাংলাদেশ প্রথমবার অলিম্পিকে অংশ নেয় ১৯৮৪ লস অ্যাঞ্জেলেস আসরে।
সাউথ এশিয়ান গেমসে অংশগ্রহণ : ১৯৮৪ সালে কাঠমান্ডুতে অনুষ্ঠিত সাউথ এশিয়ান গেমসে অংশ নিয়ে প্রথম পদক জয় করে বাংলাদেশ।
সাফ গেমসে রেকর্ড : ঢাকায় অনুষ্ঠিত ১৯৮৫ সালের সাফ গেমসে দ্রুততম মানব হন শাহ আলম। একই আসরে সাঁতারে ৫টি স্বর্ণ জিতে ইতিহাস গড়েন মোশাররফ হোসেন। শাহ আলম সময় নেন ১০ দশমিক ৮০ সেকেন্ড। এই গেমসে দ্বিতীয়বার ৪-১০০ মিটার রিলে দৌড়ে স্বর্ণপদক জয় করেন। তার সঙ্গে ছিলেন সাইদুর রহমান ডন, শাহ জালাল মোবিন ও আনোয়ার হোসেন। এছাড়া ২০০ মিটার দৌড়ে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেন। ১৯৮৭ সালে ভারতের কলকাতায় তৃতীয় সাফ গেমসে তিনি দ্বিতীয়বার দ্রততম মানব হন। সময় নেন ১০ দশমিক ৭৯ সেকেন্ড। নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙেছেন।
হকির বিশ্ব একাদশে জুম্মন লুসাই : ১৯৮৫ সালে দেশের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে হকিতে বিশ্ব একাদশের হয়ে খেলেছিলেন জুম্মন লুসাই।
প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ : ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ খুবই স্মরণীয় দিন। ওইদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ম্যাচ দিয়ে একদিনের ক্রিকেটে যাত্রা শুরু বাংলাদেশের।
এশিয়ান গেমসে প্রথমবার অংশগ্রহণ : ১৯৮৬ সালে সিওলে অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে প্রথমবার অংশ নেয় বাংলাদেশ। আর দেশের হয়ে প্রথম পদক জেতেন বক্সার মোশাররফ হোসেন।
প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ : ১৯৮৭ সালে উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার হন নিয়াজ মোর্শেদ।
কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম স্বর্ণ : ১৯৯০ সালে কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশের প্রথম স্বর্ণ আসে শুটার আতিকুর রহমানের হাত ধরে। এছাড়াও ২০০২ সালে ম্যানচেস্টার কমনওয়েলথ গেমস স্বর্ণ জেতেন আসিফ হোসেন।
বিশ্বকাপ ক্রিকেটে স্থান করে নেওয়া : ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি জিতে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম জয় : ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশ প্রথম একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ জেতে কেনিয়ার বিপক্ষে।
আইসিসির নকআউট কাপ ক্রিকেট : ১৯৯৮ সালে আইসিসির নকআউট টুর্নামেন্ট উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপ আয়োজন করে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপ ক্রিকেট বাংলাদেশ : ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো আইসিসি ওয়ার্ল্ড কাপে খেলে বাংলাদেশ। সাফে স্বর্ণ জয় : কাঠমান্ডুতে ১৯৯৯ সাউথ এশিয়ান গেমসে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে গেমস ফুটবলে প্রথম স্বর্ণ জেতে বাংলাদেশ।
আইসিসির পূর্ণ সদস্য বাংলাদেশ : ২০০০ সালের ২৬ জুন দশম দেশ হিসেবে আইসিসির পূর্ণ সদস্যের মর্যাদা পায় বাংলাদেশ।
প্রথম টেস্ট ম্যাচ : ক্রিকেটের ঐতিহাসিক টেস্ট যাত্রা শুরু ১০ নভেম্বর ঢাকায়। ভারতের বিপক্ষে এই ম্যাচে হারলেও বাংলাদেশ দারুণ পারফর্ম করে। আমিনুল ইসলাম বুলবুল অভিষেক ম্যাচেই সেঞ্চুরি করেন। অধিনায়ক হিসেবে নাইমুর রহমান দুর্জয় অসাধারণ বোলিং করেছেন। এই ঐতিহাসিক টেস্ট ম্যাচের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম : ১৬ বার জাতীয় টেবিল টেনিসে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ২০০১ সালে দেশের প্রথম ক্রীড়াবিদ হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখান জোবেরা রহমান লিনু।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা : ২০০৩ সালে ঢাকায় দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রথম এবং একমাত্র শিরোপা জয়।
প্রথম টেস্ট জয় : ২০০৫ সালের জানুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নিজেদের প্রথম টেস্ট ম্যাচ জেতে বাংলাদেশ। টেস্ট ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল চট্টগ্রামে।
ক্রিকেটে নারী দলের অভিষেক : ২০০৭ সালের জুলাইয়ে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের।
ফুটবলে নারী দলের যাত্রা শুরু : ২০০৭ সালের নভেম্বরে পথচলা শুরু হয় নারী ফুটবল দলের।
বিদেশে প্রথম সিরিজ জয় : বাংলাদেশ ক্রিকেট দল দেশের বাইরে প্রথম সিরিজ জেতে ২০০৯ সালের জুলাইয়ে। কিংস্টন ও সেন্ট জর্জে দুই টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারায় বাংলাদেশ।
প্রথম পেশাদার গলফার : ২০১০ সালে ব্রুনাই ওপেনের মাধ্যমে দেশের প্রথম পেশাদার গলফার হিসেবে ট্রফি জেতেন সিদ্দিকুর রহমান।
এশিয়ান গেমসে ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন : চীনে অনুষ্ঠিত ২০১০ এশিয়ান গেমসে প্রথম স্বর্ণ জয় করে ক্রিকেট দল।
বাংলাদেশে বিশ্বকাপ : বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজন করে ২০১১ সালে।
আইসিসির প্রেসিডেন্ট : ২০১৪ সালের জুলাইয়ে আইসিসির প্রেসিডেন্ট হন আ হ ম মোস্তফা কামাল।
আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ : এককভাবে ২০১৪ সালে আইসিসি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেট আয়োজন করে বাংলাদেশ।
সরাসরি অলিম্পিকে সুযোগ : ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো সরাসরি অলিম্পিকে খেলার টিকিট পান গলফার সিদ্দিকুর রহমান।
প্রথম নারী হিসেবে সাঁতারে অর্জন : ২০১৬ এসএ গেমসে প্রথম নারী হিসেবে সাঁতারে দুটি স্বর্ণপদক জয় করেন মাহফুজা খাতুন শীলা।
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি সেমিফাইনাল : ২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে খেলে বাংলাদেশ দল।
ইসলামিক সলিডারিটি গেমস : ২০১৭ সালে ইসলামিক সলিডারিটি গেমসের শুটিংয়ে স্বর্ণ ও রৌপ্য পদক জেতে বাংলাদেশ।
অনূর্ধ্ব-১৫ নারী সাফ ফুটবল : ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব-১৫ নারী সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ।
নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেট : ২০১৮ সালে এশিয়া কাপ জেতে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল।
এসএ গেমসে সর্বোচ্চ স্বর্ণ : ২০১৯ এসএ গেমসে এক আসরে সবচেয়ে বেশি ১৯টি স্বর্ণ জেতে বাংলাদেশ।
বহুজাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন : ২০১৯ সালে প্রথমবার বহুজাতিক টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন : ২০২০ সালে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলার দামাল যুবারা। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের পথচলার ৫০ বছরের স্বল্প সময়ের মধ্যে ক্রীড়াঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন কার্যকর উদ্যোগ ও পরিকল্পনা গ্রহণ সব সময় স্মরণীয়। ক্রীড়াপিপাসু বঙ্গবন্ধু দেশের ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছেন, যে প্রত্যাশা করেছিলেন, তা পূরণ করতে পারলেÑ জাতির পিতার প্রতি সত্যিকারের সম্মান প্রদর্শন করা হবে। যে ক্রীড়াঙ্গনের স্বপ্ন তিনি দেখেছেন, সে পথেই হাঁটছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লেখক : সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য, উত্তরণ