উত্তরণ ডেস্ক: ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মানুষের ওপর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর চালানো নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘গণহত্যা’ স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের পার্লামেন্টে। দুই মার্কিন আইনপ্রণেতা স্টিভ চ্যাট এবং রো খান্না মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন। আট পৃষ্ঠার এই প্রস্তাবে ১৯৭১ সালের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে ‘বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তান সরকারকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়।’ এর আগে একাত্তরে বাংলাদেশের মানুষের ওপর চালানো পাকিস্তানিদের বর্বরতাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘জেনোসাইড ওয়াচ’।
দুই মার্কিন আইনপ্রণেতার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের অন্যতম ট্রাস্টি মফিদুল হক। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অটোমান বাহিনীর হাতে ১৫ লাখের বেশি আর্মেনীয়র হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে স্বীকৃতি দেন।
গত ১৫ অক্টোবর মার্কিন পার্লামেন্টে আনা প্রস্তাবের বিষয়ে রিপাবলিকান পার্টির সদস্য শ্যাবো এক টুইট বার্তায় বলেন, ‘আমরা লাখ লাখ মানুষকে গণহত্যার এই স্মৃতি মুছে যেতে দিতে চাই না। গণহত্যার স্বীকৃতি ঐতিহাসিক রেকর্ডকে শক্তিশালী করে, আমাদের সহকর্মী আমেরিকানদের শিক্ষিত করে। এছাড়া অপরাধীদেরও জানাতে হবে যে, এ ধরনের অপরাধ সহ্য করা হবে না বা ভুলে যাওয়া যাবে। সাধারণ পরিষদে প্রস্তাব পাসের আহ্বানও জানায় জেনোসাইড ওয়াচ।
তার আগে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান ‘লেমকিন ইনস্টিটিউট ফর জেনোসাইড প্রিভেনশন’ একাত্তরে বাংলাদেশিদের ওপর পাকিস্তানিদের নির্মম হত্যাযজ্ঞকে ‘জেনোসাইড’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
বাঙালির মুক্তির আন্দোলনকে বন্ধ করতে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামের সেই অভিযানে কালরাতের প্রথম প্রহরে ঢাকায় চালানো হয় গণহত্যা। যুদ্ধের ওই ৯টি মাস এই ভূখ-ের নানা প্রান্তে হত্যাযজ্ঞ চালায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী এবং তাদের এদেশীয় দোসররা।