প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘অন্য ধর্মের প্রতি আমাদের সহনশীল আচরণ করতে হবে। আমাদের এই ভূখণ্ডে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবারই সমান অধিকার আছে যার যার ধর্ম পালন করার। কাজেই অন্যের ধর্মে আঘাত দেওয়া মোটেই সমীচীন নয়। ইসলাম আমাদের সেই শিক্ষা দেয়নি। এ-কথা আমাদের সব সময় মনে রাখতে হবে।’ তিনি মসজিদে খুতবা পড়ার সময় জঙ্গিবাদ, মাদক, দুর্নীতি ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে কথা বলতে দেশের আলেম-ওলামা ও খতিবদের প্রতি আহ্বান জানান।
গত ১৭ এপ্রিল গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে চতুর্থ ধাপে সারাদেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ পর্যন্ত ২০০ মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন হয়েছে, অবশিষ্ট কাজ শেষ হবে আগামী বছরের মাঝামাঝি।
পবিত্র ইসলাম ধর্মকে কেউ যেন কলুষিত করতে না পারে, বক্তব্যকালে সেদিকে ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেম-ওলামাদের দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কিছু লোক, যারা সন্ত্রাস বা জঙ্গিবাদী কর্মকাণ্ড করে আমাদের শান্তির ধর্মটাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে এবং বিপথে চলে যায়। এটা যাতে না হয় সেদিকে আমাদের সবার বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। আমাদের দেশের মানুষ ইসলামিক ভাবধারা নিয়ে তৈরি হবে; যেন আদর্শ ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে, সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতে হবে। সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মানুষের জীবন কেড়ে নেয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করে। এখান থেকে মানুষকে দূরে রাখার ব্যবস্থা অবশ্যই নিতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মাদ্রাসা শিক্ষাকে অনেকে অবহেলার চোখে দেখতেন। আমরা এটার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা ডিজিটাল কোরআন শরিফ করে দিয়েছি। ইন্টারনেটে মানুষ এটা শুনতে পারবে।’ হাওড় অঞ্চলে একটি বিশেষ প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে ইমামদের খুতবা ভাতা প্রদান করা হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে আমাদের কোমলমতি ছেলেদের বিভ্রান্তির পথে নিয়ে যাওয়া হয়। কেউ যেন সেদিকে নিতে না পারে। তারা যেন জঙ্গিবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত না হয়। ইসলাম যে শান্তির ধর্ম, মানুষ খুন করলে কখনও বেহেশতে যাওয়া যায় না, নিরীহ মানুষকে খুন করলে বরং দোজখের আগুনে পুড়তে হয়; মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করতে হবে।’
ইসলাম শান্তির ধর্ম উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইসলাম ধর্মে নারীর অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। কাজেই নারীর প্রতি কোনোরকম সহিংসতা বা অবমাননাকর আচরণ যেন না হয় এবং তাদের অধিকার যাতে সুরক্ষিত থাকে, সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার অনুরোধ করছি। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের সঙ্গে আর কোনো সন্তান যেন জড়িত হয়ে না পড়ে, সেদিকে নজর নিতে হবে। আমরা জঙ্গিবাদ দমন করেছি। ভবিষ্যতে এটা অব্যাহত রাখতে পারব ইনশাল্লাহ্।’