Wednesday, October 4, 2023
বাড়িদশম বর্ষ,ষষ্ঠ সংখ্যা,মে-২০২০আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি এ রোজায় করোনা মুক্তির

আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি এ রোজায় করোনা মুক্তির

মুহম্মদ শফিকুর রহমান : আসুন আমরা সবাই পরম করুণাময় আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করি এই রমজানুল মোবারকই হোক করোনা মুক্তির বাংলাদেশ। পৃথিবী থেকে করোনা বা কোভিড-১৯ চিরতরে নিঃশেষ হয়ে যাক। মাখলুকাতের পৃথিবী আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠুক। কচি কমল শিশুরা আবার স্কুলে যাক মাঠে খেলুক। কৃষক শ্রমিক তথা দিন এনে দিন খাওয়া মানুষেরা আবার কাজে যাক আনন্দে ভরে উঠুক তাদের সংসার। রাজপথ জনপথ আবার সরব হয়ে উঠুক। গার্মেন্টস-এর মেয়েরা আবার লাইন ধরে কারখানায় যাক বেতন নিয়ে ঘরে ফিরুক। আনন্দ ফিরে আসুক ঘরে ঘরে।
থ্যাংকস টু ছাত্রলীগ-যুবলীগ-কৃষক লীগ-মহিলা আওয়ামী লীগ। কোভিড-১৯ বা করোনার ভয় তুচ্ছ করে ওরা কৃষকের বোরো ক্ষেতে নেমে পড়ল কিষাণ-কিষাণীর সাথে। আল্লাহর অশেষ কৃপা এবারও বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। হলে কি হবে ধান কেটে মাড়াই করে গড়ে তুলতে না পারলে। ধান কাটা মৌসুমি শ্রমিকরা সবাই ঘরে। করোনার চেয়ে জীবন অনেক মূল্যবান। এখানেই আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিশ্বসেরা। তার নির্দেশ পেয়ে ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ নিজ নিজ এলাকায় কৃষকের বোরো ক্ষেতে নেমে পড়লেন এবং কৃষকের ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলে দিতে থাকলেন। এরই মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ ধান কাটা হয়ে গেছে। বোরো ধানের মৌসুমে হচ্ছে কালবৈশাখীর মৌসুম। বড় ধরনের কালবৈশাখী নামলে ধান নষ্ট হয়ে যেত। কিন্তু এবার আল্লাহর রহমতে তা হয়নি। সরকারও ঘোষণা দিয়েছে ২০ লাখ টন চাল ক্রয় ও মজুত করবেন। করোনা আজ হোক কাল হোক একদিন যাবেই, তখন খাদ্যাভাব দেখা দিতে পারে। দূরদর্শী রাষ্ট্রনেতা তাই আগে থেকেই সব রকম প্রটেক্টিভ ব্যবস্থা নিয়ে রাখছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন- “ছাত্রলীগের ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস, বাংলাদেশের ইতিহাস ছাত্রলীগের ইতিহাস।” বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে কতগুলো সময় যেমন রক্তাক্ত তেমনি ইতিহাস খ্যাত। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি জন্ম নিয়েই বাংলা ভাষা আন্দোলন, সেই থেকে আয়ুবের মার্শাল ল’বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন-বিরোধী আন্দোলন, স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ গঠন, ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলন, তথাকথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা তথা জাতির পিতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র মামলা-বিরোধী আন্দোলন ও শেখ মুজিবের মুক্তি আন্দোলন, ঊনসত্তরের ৬ + ১১ দফা ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান, শেখ মুজিবের মুক্তি, স্বৈরাচারী মিলিটারি আয়ুবের পতন, সত্তরের নির্বাচন এবং সর্বোপরি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগ ছিল সবার আগে আগে অস্ত্র হাতে বর্বর পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে। আগে থেকেই বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা ছিল। একাত্তরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন- “This may be my last message to the nation. From today Bangladesh is independent… ” বঙ্গবন্ধুর এই ঘোষণার সাথে সাথে ছাত্রলীগ প্রতিরোধ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধকালে ছাত্রলীগ মুজিব বাহিনী গঠন এবং মুজিব বাহিনী ছিল অগ্রগামী বাহিনী। এই বাহিনী সেদিন বাংলার মানুষের বিপদের বন্ধু এবং পাকিস্তানি মিলিটারি হানাদার মূর্তিমান আতঙ্ক। এবারও সবার আগে দুর্দিনে কৃষকের ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ বিপদের বন্ধু। ছাত্রলীগের পাশাপাশি কৃষকের আঙ্গিনায় যুবলীগ, কৃষক লীগ, এমনকি মহিলা আওয়ামী লীগও মাঠে। এরই নাম দেশপ্রেম।
এখন প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে যারা টিভির টক-শো বা সোশ্যাল মিডিয়ায় বিএনপি-ছাত্রদলের কোটি কোটি কর্মীর (?) অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন তারা এখন কোথায়? তাদের কোটি কর্মীই বা কোথায়? সম্ভবত লন্ডন থেকে এখনও নির্দেশ আসেনি। আস্তে আস্তে বুড়ি সাঁকো পার হয়ে যাবে।
কিংবা যারা লুঙ্গি শাড়ির কাছা মেরে মিলিটারি জিয়ার খাল কাটতে নেমে পড়েছিলেন তারাই বা কোথায় আজ? কথায় কথায় যারা কৃষক-শ্রমিকের অধিকারের কথা বলেন তাদেরও তো কৃষকের পাশে দেখলাম না।
কোথায় ছাত্রদল কোথায় ছাত্র ইউনিয়ন? এই ক’দিন আগেও তো মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের দাবিতে ক্যাম্পাসে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিলেন? ভিসির বাড়ি আক্রমণ করেছিলেন। দীর্ঘদিন পর একজন ভিপি এলেন, এসেই বিতর্কিত কথা বলতে শুরু করলেন, ভাবখানা এমন যে তিনিই একমাত্র গণতন্ত্রী। কই তার মধ্যেও তো কোনো উত্তাপ লক্ষ করা গেল না। দেশপ্রেম বিবর্জিত সংগঠন সময়ে ধরা খাবেই। ওরাও এবার ধরা খেলো। তাহলে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে তাদের এজেন্ডাটা কী? এই এজেন্ডা কোত্থেকে আসে? যারা টেলিভিশনের টক-শোতে বসে প্রতিনিয়ত আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা লীগ নিয়ে নানান মুখরোচক গল্প রচনা করেন তাদের মুখেও মনে হয় কুলুপ এঁটেছেন। কথা বেরোচ্ছে না। কয়েকদিন আগে একটি দৈনিক পত্রিকায় খবর দেখলাম (ডাবল কলাম শিরোনাম) ‘বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া কারাগার থেকে বের হবার পর থেকে কোয়ারেন্টাইনে আছেন এবং কোয়ারেন্টাইন অবস্থায় রোজা রাখবেন’। এই সংবাদটি দেখে হাসি পেল। বিষয়টি এমন যে টাকা-পয়সা হয়েছে সৎপথে হোক না হোক অতএব হজ করতে হবে। হজ থেকে ফিরে এসে নামের পেছনে ‘আলহাজ’ লাগিয়ে দিলেন। কেউ ‘হাজিসাব’। অল্প দিনেই মশহুর হয়ে গেলেন, সমাজে প্রভাব বিস্তার হলো। আসলে কি তাই? রোজা যে ফরজ, অবশ্য একজন মুসলমানের জন্যে, তা জানেন না এমন মুসলমান খুব একটা নাই। নামাজ যেমন ফরজ, রোজাও তেমনি ফরজ বা অবশ্য পালনীয়। অবশ্য রোজার ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা। কেউ অসুস্থ বা রোজা রাখতে অক্ষম হলে তিনি কাজা করতে পারবেন। একইভাবে মুসাফির হলেও রোজা কাজা করতে পারবেন। তবে অবশ্যই পরে তা আদায় করতে হবে। যে ব্যক্তি একেবারেই অসুস্থ তার জন্য বদলি রোজারও ব্যবস্থা আছে। কিন্তু সক্ষম ব্যক্তির জন্য রোজা ফরজ অবশ্য পালনীয়। পবিত্র আল কোরআনের সূরা বাকারার ১৮৩নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেন :

“ইয়া আইউহাল্লাজিনা আ’মানু কুতেবা
আলাইকুমুস সিয়ামু কামা কুতেবা আ’লাল্লাজিনা
মিন কাবালিকুম লা’য়াল্লাকুম তাত্তাকুন” ॥

অর্থাৎ হে ইমানদারগণ, যারা ইমান এনেছ তোমাদের ওপর সিয়াম বা রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন করে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্বপুরুষদের ওপর যাতে করে তোমরা প্রকৃত মুত্তাকী বা পরহেজগার হতে পারো।
যেখানে একজন মুসলমানের জন্য এই নির্দেশ অর্থাৎ রোজা ফরজ করে দেওয়া হয়েছে সেক্ষেত্রে রোজা তো রাখতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। গডফাদার গডমাদার ক্রিমিনালদের পুলিশ থেকে আদালত থেকে বাঁচাতে পারে, বিশ্বব্রহ্মা-ণ্ডের মালিক বিচারকের বিচারক-এর হাত থেকে বাঁচার কোনো উপায় নেই। কাজেই খালেদা জিয়াকেও রোজা রাখতে হবে। সামাজিক মিডিয়ায় আরেকটি খবর দেখলাম রাষ্ট্রের সম্পদ লুণ্ঠনের দায়ে সাজাপ্রাপ্ত লন্ডনপ্রবাসী মিলিটারি জিয়া খালেদা তনয় না-কি লন্ডন থেকে নির্দেশ পাঠিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের ত্রাণ কাজে ঝাঁপিয়ে পড়তে। তারপরই দেখলাম বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে তারা ২ কোটি মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবে। আমি মনে করি এটাও মানুষকে বিভ্রান্ত করা। নইলে গত ৮ মার্চ কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস বাংলাদেশে প্রথম সংক্রমণ শুরু করেছে। আর এক মাস ২০ দিন পর তারা ত্রাণকার্য নাম ঘোষণা দিলেন। এতদিনে ১৫২ জন মৃত্যুবরণ করেছেন, সংক্রমিত হয়েছেন ৫ হাজার ৯১৩ জন, এর মধ্যে চিকিৎসাধীন আছে ৫ হাজার ৬৩০, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৩১ জন। বৈশ্বিক পরিস্থিতি হলো আক্রান্ত দেশ ১৮৫টি, মোট সংক্রমিত ৩০ লাখ ২৯ হাজার ৭৬১, মোট মৃত্যু ২ লাখ ৯ হাজার ২৪৪ জন, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ লাখ ৩৩৪ জন। তারপর ওনাদের মাথায় ঢুকলো হায় হায় রে ছাত্রলীগ-যুবলীগ তো এগিয়ে গেল। আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনা এবারও চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা আর্থ হয়ে গেলেন। চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা বাংলাদেশ থেকে চ্যাম্পিয়ন অব দ্যা গ্লোব। খালেদা তো আপসহীন, তাই রাগে-দুঃখে আপসহীন হয়ে ঘরে বসে আছেন। কিছু করলে তো আপসহীনতা থাকবে না। কাজেই থাকুন ঘরে। বেরিয়েও কোনো লাভ নেই। ২ কোটি মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণের যে ঘোষণা দিলেন প্রথমত; এই ত্রাণের টাকা আসবে কোথা থেকে? দ্বিতীয়ত; ডিস্ট্রিবিউট করার লোকবল আসবে কোথা থেকে? যারা ৩০০ আসনে দলীয় এজেন্ট দিতে পারে না, তারা ২ কোটি মানুষের কাছে যাবে কেমনে? যাক এসব প্রশ্নের উত্তর তারাই দেবেন।
দেরিতে হলেও রমজানুল মোবারককে স্বাগত জানিয়ে এবং এই রমজানেই মানব বিধ্বংসী কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস থেকে মহান আল্লাহ মানব জাতিকে মুক্তি দেবেন এই দোয়া কামনা করছি। আল্লাহ সকল মুশকিল আসানের মালিক। রাব্বুল আলামিন।
এমন মানব বিধ্বংসী পৃথিবীতে আর কখনও এসেছে বলে জানি না। তবে শুনেছি ১৯২০ সালের দিকে কলেরার প্রাদুর্ভাব হয়েছিল, যার নাম ছিল ওলাউঠা। একে মানুষ ওলাবিবি বলেও ডাকত। এবার যেমন করোনাকে করোনাবিবি বলেও ডাকে কেউ কেউ। মানুষ ওলাবিবিকে নানারকম খাদ্যসামগ্রী দিয়ে তুষ্ট করত, যাতে তাদের বাড়িতে না ঢুকে। তখন স্কুলে পড়ি। এক বিকেলে খেলা শেষে বাড়ি ফিরছিলাম দেখি এক তিন রাস্তার সঙ্গমস্থলে কলাপাতার ওপর চিতই পিঠা-গুড় রেখে দেওয়া আছে। টার্গেট হলো রাতের বেলা ওলাবিবি এসে খেয়ে চলে যাবে। এটি ছিল তখনকার গ্রাম বাংলার চিত্র। তার কয়েক বছর পর আমাদের মতলবে কলেরা হাসপাতাল আইসিডিডিআরবি একটি ব্রাঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা হলো। সেই থেকে আমাদের এলাকায় আর কোনোদিন ওলাবিবি আসেনি।
কিন্তু এবার করোনার জন্য কোনো হাসপাতাল নেই। বিভিন্ন হাসপাতালে কোয়ারেন্টাইন স্থাপন করেন, যতটা সম্ভব চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরতœ শেখ হাসিনা করোনা শুরু হওয়ার সাথে সাথে করোনা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। প্রায় প্রতিদিনই করোনা প্রতিরোধে গণভবন থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করছেন। চিকিৎসক প্রশাসন পুলিশ সেনাবাহিনী নিয়ে বসে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং জাতির উদ্দেশ্যে বেতার ও টিভি ভাষণে কী করতে হবে, কী কী করা উচিত, কী কী করা যাবে না বিশেষজ্ঞের মতো জনগণকে অবহিত করতে থাকেন। সেই সঙ্গে মানুষের ঘরে ঘরে খাদ্য পৌঁছে দিতে থাকেন। এ পর্যন্ত কেউ করোনার কোনো প্রতিরোধক বা প্রতিষেধক আবিষ্কার করতে পারেনি। কেবলমাত্র আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টাইন করোনা প্রতিরোধ করতে পারে। তাই জাতিকে কতগুলো জিনিস পালন করা এবং আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করার পরামর্শ দিয়েছেন। করণীয় :

* যারা সংক্রমিত হয়েছে বলে মনে করেন তাদের হাসপাতালে যেতে হবে
* করোনা চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে
* টেস্টে পজিটিভ হলে ঘরে থাকা যাবে না। ডাক্তারের পরামর্শমতো কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে
* ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ঔষধ খাওয়া যাবে না
* যেটি অবশ্য পালনীয় তা হলো ঘরে টোটাল আইসোলেশনে থাকতে হবে। সুস্থ হলেও
* নেহাত প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে শরীর ঢেকে হাতে গ্লাভস ও মুখে মাক্স পরে যেতে হবে
* ভিড়ের মধ্যে যাওয়া যাবে না
* একজন আরেকজনের কাছ থেকে অন্তত তিন ফুট দূরে থাকতে হবে
* ঘর থেকে বেরোতে বা ফিরে আসার সাথে সাথে হাত সাবান দিয়ে ধুতে হবে (অন্তত ২০ সেকেন্ড)
* বাইরে বেরোতে বা ফিরে আসার সাথে সাথে হাতে স্যানিটাইজার মাখতে হবে
* কোনোভাবেই কারও সাথে হ্যান্ডশেক করা যাবে না
* কোনোভাবেই কারও সাথে কোলাকুলি করা যাবে না
* সেই সাথে ভিটামিন সি ও এ প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এতই দূরদর্শী যে, করোনা-পরবর্তীতে (একদিন না একদিন তো করোনা যাবে) যাতে দেশে খাদ্যাভাব দেখা দেওয়ার সুযোগ না থাকে সেজন্য এখন থেকেই পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছেন। এই বোরো মৌসুমে এবার ২০ লাখ টন চাল সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো করোনা শুরু হওয়ার সাথে সাথেই যাতে ব্যাংক-ব্যবসা-বাণিজ্য কলাপ্স না করে সে লক্ষ্যে :
* প্রথমেই ৭২ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা ঘোষণা করেন। এ টাকা মূলত ব্যাংকগুলোকে সচল রাখা, সেই সঙ্গে শিল্প খাত যাতে সচল থাকে
* আলাদাভাবে কৃষি খাতে আরও ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা
* গার্মেন্ট খাতের জন্য আলাদা প্রণোদনা
* কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যাংক ইন্টারেস্টও কমানোর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী যে আহ্বানটি জানিয়েছেন তা হলো এক ইঞ্চি জমিও যাতে অনাবাদি না থাকে। যে জমিতে ধান ফলানো যাবে সেখানে ধান যেখানে ধান ফলানো যাবে না সেখানে শাক-সবজি ফল-ফলাদি চাষ করতে হবে।
প্রথম দিকে চাল নিয়ে নয়-ছয়ের কিছু খবর সংবাদপত্রে এসেছে। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কঠোর ব্যবস্থাপনায় তা অনেকখানি প্রশমিত হয়ে আসছে। একটি দৈনিক পত্রিকায় দেখলাম জনপ্রতিনিধিরা চাল চোর নয়। চাঁদপুর-এ জাতীয় একটি খবর ছাপা হলে বলা হয়েছে খবরটি সঠিক নয়। বিতরণের জন্য চাল ঘরে আনা হয় এ-রকম দুটি ঘটনা ঘটেছে। দুটি ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনকে দিয়ে সামাল দেওয়া হয়েছে। জানা গেল এজন্য প্রতিবাদ সভা করা হয়েছে। প্রশ্ন করা যায় যে ঘরে চাল রাখা হয়েছিল সেটি কি গোডাউন? ভুলে গেলে চলবে না মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন ত্রাণ নিয়ে নয়-ছয় করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

লেখক : সংসদ সদস্য; সাবেক সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য