উত্তরণ প্রতিবেদন : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার অভ্যাস বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে বলেছেন, ‘আসুন, সবাই মিলে আমরা বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলি। আমাদের আগামী প্রজন্মকেও যেন উৎসাহিত করি। বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ হিসেবে শিক্ষায়, দীক্ষায়, অর্থনৈতিক উন্নয়নে, সাংস্কৃতিক উন্নয়নে, সর্বক্ষেত্রে- সামাজিক ন্যায়বোধে আমরা এই দেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলি।’
গত ১৮ মার্চ বাংলা একাডেমি চত্বর এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাসব্যাপী অমর একুশের বইমেলার উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে বাংলা একাডেমির মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ছোটদের বইয়ের প্রতি ঝোঁক বাড়ানো দরকার। আমাদের সময় বাচ্চাদের বই পড়ে শোনানো হতো। এখনো আমরা তা করি। সব সময় ঘরে একটা ছোট লাইব্রেরি করে রাখি। বইয়ের প্রতি ঝোঁক বাড়াতে হবে। পাঠাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। আমাদের বক্তৃতা-বিবৃতিতে মানুষের কাছে যত দ্রুত পৌঁছা যায়, সাহিত্যে আরও আগে পৌঁছা যায়। সাহিত্যের মাধ্যমে ইতিহাস, ভাষা-সংস্কৃতিও জানা যায়।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন তো মোবাইল ডিভাইসেও পড়ার সুযোগ আছে। তবে বই হাতে নিয়ে বইয়ের পাতা উলটে পড়ার আনন্দই আলাদা। বইয়ের আবেদন মুছে যাবে না। সেজন্য প্রকাশকদের ধন্যবাদ, মহামারির সময়েও অনেক কষ্ট করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সরকারে থাকি আর বিরোধী দলে থাকি একদিনের জন্য হলেও বইমেলায় যাই। এখন করোনার কারণে যেতে পারছি না। কারণ আমি গেলে ১ হাজার লোকের সম্পৃক্ততা হয়। তাদেরও সবার সংক্রমণের কথা চিন্তা করে আমি যাচ্ছি না। তবে আমার মনটা পড়ে আছে সেখানে।’ এ সময় ভাষা দিবস ও ভাষা আন্দোলনের নানা ইতিহাস তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভাষা আন্দোলন জানতে ১৯৪৮ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানের গোয়েন্দাদের নানা রিপোর্ট সাত খ-ে প্রকাশ করেছি। এগুলো পড়লেই বোঝা যাবে বঙ্গবন্ধু কীভাবে ছাত্রনেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন, আন্দোলনের সমন্বয় করেছেন।’
বাংলা একাডেমির সভাপতি শামসুজ্জামান খানের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠানের মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী এবং সংস্কৃতি সচিব মো. বদরুল আরেফিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ১০ জনকে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু লেখা ‘আমার দেখা নয়াচীন’ গ্রন্থের ইংরেজি ভার্শন (নিউ চায়না ১৯৫২)-এর মোড়ক উন্মোচন করেন।