Sunday, September 24, 2023
বাড়িদশম বর্ষ, দ্বিতীয় সংখ্যা-জানুয়ারি-২০২০অ্যাকশন ফর সারভাইভাল : ভালনারেবল নেশনস কপ-২৫ লিডার্স সামিট ‘আমরা ব্যর্থ হলে...

অ্যাকশন ফর সারভাইভাল : ভালনারেবল নেশনস কপ-২৫ লিডার্স সামিট ‘আমরা ব্যর্থ হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ক্ষমা করবে না

উত্তরণ প্রতিবেদন: জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় এখন থেকেই কাজ শুরু করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বাসযোগ্য পৃথিবী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ২ ডিসেম্বর স্পেনের ফেরিয়া দা মাদ্রিদে (আইএফইএমএ) ‘অ্যাকশন ফর সারভাইভাল : ভালনারেবল নেশনস কপ-২৫ লিডার্স সামিট’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এই আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সিভিএফ এবং ভি-২০ দক্ষিণ-দক্ষিণ এবং ত্রিমুখী সহযোগিতার অসাধারণ উদাহরণ এবং আমরা বর্তমান সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিতে চাই। আমরা যদি আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হই, তাহলে তারা ক্ষমা করবে না। প্রতি মুহূর্তে আমাদের নিষ্ক্রিয়তা পৃথিবীর প্রতিটি জীবিত মানুষকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখনই সময় কাজ করার।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯২ সালে আর্থ সামিটের পর থেকে আমরা গ্রিন হাউস গ্যাস হ্রাসে খুব বেশি অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি, এর নির্গমন এখনও বেড়ে চলেছে। এই প্রবণতা পৃথিবীকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। ঝুঁকিতে থাকা আমাদের মতো দেশগুলো, এই পরিস্থিতি মোকাবিলা সীমিত ক্ষমতা এবং নির্দিষ্ট ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হই। ক্ষয়ক্ষতির জন্য তুচ্ছ বা কোনো অবদান না রাখলেও ক্ষতির ধাক্কাটা আমাদেরই সামলাতে হচ্ছে। এটি একটি অবিচার এবং অবশ্যই বিশ্ব সম্প্রদায়কে বিষয়টি স্বীকার করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে থাকা আমাদের মতো দেশগুলোর সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও ধারণার চেয়েও কম সহায়তা পাচ্ছি। এক্ষেত্রে একটি নতুন সিভিএফ এবং ভি-২০ ট্রাস্ট তহবিল গঠন এবং জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ দূত নিয়োগ সম্ভব হলে সেটি হবে বড় সাফল্য।
মিয়ানমার থেকে নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কারণে পরিবেশের ক্ষতির বিষয়টিও তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার থেকে আসা ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নানাভাবে পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাপক হারে অভিবাসনেও জলবায়ু পরিবর্তনের মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে, এটা এখন সর্বজনস্বীকৃত। সংঘাতের চেয়ে আবহাওয়াজনিত দুর্যোগের কারণে এরই মধ্যে অনেক মানুষ স্থানচ্যুত হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে যেসব মানুষ স্থান হারিয়েছে, তাদের সহায়তা দিতে একটি কার্যকর কর্মকৌশল তৈরিতে আমাদের এখনই আলোচনা শুরু করা দরকার।

জলবায়ু-কন্যা বাংলাদেশের রেবেকা
পৃথিবীকে রক্ষার আন্দোলনে গ্রেটা থুনবার্গের মতো স্কুলশিক্ষার্থীরা এখন অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সময় গ্রেটার ডাকে নিউইয়র্কসহ বিশ্বের বড় বড় শহরে সমাবেশ হয়। সে-সময় ম্যানহাটানে ২ লাখের বেশি মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনে চরম ঝুঁকিতে থাকা বাংলাদেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশি নারী, শিশু ও রোহিঙ্গাদের ঝুঁকির কথা তুলে ধরেছিলেন এক বাংলাদেশি-আমেরিকান কিশোরী। যার নাম রেবেকা শবনম। বলা হচ্ছে, পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনের নতুন মুখ এই সে। সম্প্রতি আল-জাজিরা তাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। নিউইয়র্কের ঐ সমাবেশে ১৬ বছর বয়সি রেবেকা স্মৃতি। দৃপ্তকণ্ঠে জানায়, আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট জরুরি অবস্থা কীভাবে জাতিগত অনাচার ও দারিদ্র্যের সঙ্গে আন্তঃসম্পর্কিত তার একটি উদাহরণ হলো বাংলাদেশ।
রেবেকার বয়স যখন ছয় বছর তখন পরিবার তাকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যায়। এখন সে নিউইয়র্কের একটি হাই স্কুলের ছাত্রী। রেবেকা শবনম আল-জাজিরাকে জানায়, বাংলাদেশকে নিয়ে কথা বলার সময় ভেবেছিলাম নীরবতা ছাড়া আর কিছুই শুনতে পাব না। কিন্তু জনতার সাড়া দেখে অভিভূত হয়েছি। জলবায়ু সংকট শুধু একটি পরিবেশগত ইস্যু নয়। এটি জরুরি মানবাধিকার বিষয়ক ইস্যুও। বাংলাদেশি নারী এবং রোহিঙ্গাদের আমরা জানাতে চাই যে, বিশ্বজুড়ে যুবসমাজ তাদের জীবন ও নিরাপত্তার জন্য লড়ছে।

আরও পড়ুন
spot_img

জনপ্রিয় সংবাদ

মন্তব্য