আগামী ২০ ও ২১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় এই কাউন্সিল আরও একটি মাইলফলক হিসেবে গণ্য হবে। আওয়ামী লীগ কেবল বাংলাদেশের নয়, উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন দল। এই দল এখন অঙ্কুর থেকে মহীরুহে পরিণত হয়েছে। রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রধান বৈশিষ্ট্য, এই দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র চর্চার ঐতিহ্য। সামরিক শাসন ও রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে কয়েকটি কাউন্সিল সময়মতো করা যায়নি। কিন্তু ১৯৫৩ থেকে ১৯৭৪ সাল পর্যন্ত ঝড়ো দিনগুলোতেও নির্ধারিত মেয়াদান্তে দলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতেও এই ঐতিহ্য অব্যাহত আছে।
আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতিকে কী দিয়েছে? ১. ভাষার অধিকার; ২. স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র; ৩. গণতান্ত্রিক সংবিধান; ৪. খাদ্যে আত্মনির্ভরশীলতা; ৫. দারিদ্র্যের অভিশাপ থেকে মুক্তি; ৬. ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ; ৭. বঙ্গবন্ধু হত্যাকাÐের বিচার ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা; ৮. সকল শিশু-কিশোরের স্কুলগামিতা তথা শিক্ষার নিশ্চয়তা এবং সরকারি-বেসরকারি মিলে ৯০৯টি বিশ্ববিদ্যালয়, ৪,৪৯৫টি কলেজ, ২০,৪৬৫টি মাধ্যমিক স্কুল এবং ১,৩৪,১৪৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়; ৯. নারীর ক্ষমতায়ন; ১০. নিরন্তর প্রবৃদ্ধির উচ্চতম হার; ১১. সমুদ্রসীমার সার্বভৌমত্ব তথা সমুদ্র জয়; ১২. মহাকাশে প্রথম স্যাটেলাইট স্থাপন তথা মহাকাশ জয়; ১৩. গড় আয়ুষ্কালের এযাবতকালের সর্বোচ্চ হার; ১৪. পদ্মাসেতু, পায়রা বন্দর, মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্র, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলি টানেল, সড়ক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক, মেট্রোরেল প্রভৃতি বাস্তবায়নাধীন মেগাপ্রকল্প; ১৫. পরনির্ভরশীলতার অবসান ঘটিয়ে রপ্তানি বাণিজ্যে উৎকর্ষ; ১৬. শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনী; ১৭. মধ্যম আয়ের দেশে উত্তরণ; ১৮. ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল; ১৯. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমন; ২০. স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর; ২১. ক্রিকেটে টেস্ট মর্যাদা; ২২. সকল ধর্মের স্বাধীনতার নিশ্চয়তাসহ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা এবং ২৩. আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে সম্মান ও মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা প্রভৃতি ।
আমাদের সামনে এখন ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার মহাযজ্ঞ। গ্রামে গ্রামে নাগরিক সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’Ñ সেøাগানের বাস্তব রূপায়ণের কর্তব্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন রূপায়ণ এবং দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর কর্তব্য পালনের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা। আসন্ন ২১তম জাতীয় কাউন্সিল বাঙালি জাতির এই স্বপ্নজয়ের অভিযানে যুক্ত করবে নতুন মাত্রা। আওয়ামী লীগ বাঙালি জাতির একমাত্র ভরসাস্থল। বঙ্গবন্ধু-কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে এই কাউন্সিল জাতির আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ এবং নতুন স্বপ্নজয়ের সাধনায় জাতিকে ঐক্যবব্ধ করে উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় নতুন গতিবেগ সঞ্চার করবে।
উত্তরণ-এর দশম বর্ষে পদার্পণ
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর থেকে ‘উত্তরণ’ দশম বর্ষে পদার্পণ করছে। আওয়ামী লীগের ইতিহাসে বেশ কয়েকবার দলীয় মুখপত্র হিসেবে কখনও দৈনিক, কখনও সাপ্তাহিক, কখনও বুলেটিন ইত্যাদি প্রকাশের উদ্যোগ ছিল। কিন্তু কোনো পত্রিকা বা জার্নালই একটানা দীর্ঘদিন টিকে থাকেনি। ‘উত্তরণ’ এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। আমরা গর্বিত ও আনন্দিত যে, জননেত্রী শেখ হাসিনার পৃষ্ঠপোষকতা ও আওয়ামী লীগের অগণিত কর্মী, সমর্থক এবং শুভানুধ্যায়ীদের সহযোগিতায় মাসিক ‘উত্তরণ’ টানা ৯ বছর নিয়মিত প্রকাশের পর দশম বর্ষে পদার্পণ করেছে। দলের পক্ষ থেকে আমি সম্পাদক-প্রকাশক হিসেবে যেমন, তেমনি আমাদের ‘উত্তরণ’ পরিবার সমবেতভাবে এই শুভ উদ্যোগের সাফল্যে ‘উত্তরণ’-এর পাঠক, বিজ্ঞাপনদাতা, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আপনাদের সহযোগিতায় ভবিষ্যতেও ‘উত্তরণ’-এর জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে।